বাঙালী মাত্রেই রসনা পূজা করতে ভালবাসে- একথা বোধহয় সবারই জানা। তবে বর্তমানের এই দূর্মূল্যের বাজারে সে ভালবাসা যে আর আগের মত নেই , বোধকরি সবাই এ বিষয়ে একমত হবেন। যাহোক, আগের দিনের কথায় ফিরে যাই।
গ্রামের লোকেরা রসনা তৃপ্তির চাইতে পেট পূর্তিটাকেই প্রাধান্য দেয়। পেট ভর্তি থাকলে দেহে বল আসে, মনে ফূর্তি আসে। কোন আসরে কে কত খেতে পারল, সেটা নিয়ে বড়াই করা চলে। তো, একবার ঢাকা যাচ্ছি বাবার সাথে- তখন আমি দশম শ্রেণীতে পড়ি। সাথে বাবার আরো দুই সহকর্মী, আমার শিক্ষক, আছেন। তখন যমুনা ব্রিজ হয়নি, উত্তরান্চল থেকে ঢাকায় যেতে ফেরিতে যেতে হত। ফেরিতে খাবারের এক মজার নিয়ম ছিল - বিশ টাকায় পেট চুক্তি; অর্থাৎ যত খুশী খাও, বিল বিশ টাকা।
তবে প্রথমবার শুধু এক বাটি মাছ অথবা মাংস দেবে, তারপর পাতলা ডাল দিয়ে যত ভাত লাগে, তারা দেবে।
আমরা খেতে বসলাম। তরকারির যা ছিরি, তাতে এক পেট তো দুরের কথা, এক প্লেট ভাতও খেতে পারলাম না আমি। কিন্তু আমার বাবা এবং শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদ্বয় সমানে খেয়ে যেতে লাগলেন- ওই পাতলা ডাল দিয়েই। সাথে অবশ্য মরিচ আর পেয়াজ চলছিল। তঁারা প্লেটের পর প্লেট সাবাড় করতে লাগলেন। বেয়ারা বেচারা অবিশ্বাসের দৃষ্টি নিয়ে ভাত সরবরাহ করে চলল। কিছুক্ষণ পর বেয়ারা বেচারা ক্ষমা চাওয়ার সুরে বলল সে আর ভাত দিতে পারবে না।
'পারবে না মানে! পেট চুক্তি বলে কথা! তঁারা কোন যুক্তি মানতে চাইলেন না। তিনজন মিলে পুরো দুই ডিশ ভাত সাবাড় করলেন। এখন কি কোন বাংলাদেশী পারবে এমন খেতে? বোধহয় না।এই বাজারে কম খেয়ে খেয়ে যে পাকস্থলীই ছোট হয়ে গেছে!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




