প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী বিভিন্ন বিমান্ বন্দরে অবতরন করেন।পেরিয়ে যান এদেশ থেকে সেদেশের সীমান্ত। প্রতিটি দেশের মানুষের নিজস্ব কিছু ভালোলাগা পছন্দ আছে। আর তার মধ্যে খাদ্য অন্যতম। নিজের দেশের খাবার, নিজের পছন্দের খাবার বিদেশে পাওয়া গেলেও। দেশে বসে পেট পুরে খেলেও সাথে করে নিয়ে আসেন অনেকে যাত্রী বিভিন্ন দেশে।
এই খাবারের মূল্যের চেয়েও এর ভালোবাসার মূল্য সে সব যাত্রীর কাছে অনেক বেশি। কিন্তু প্রতিটি দেশের নিজস্ব কিছু নিয়ম আছে। আর সে নিয়ম অনুযায়ী অন্যদেশের মানুষকে অনেক যাচাই বাছাই করে ঢুকতে দেয় সে দেশে। তেমনি সেই যাত্রী সাথে করে কি বয়ে নিয়ে আসছেন, সে বিষয়টিও অনেক গুরুত্ব দিয়ে দেখে সে সব দেশের ইমিগ্রেশন ডির্পাটমেন্ট। অনেক দেশের অনেক পণ্য তারা ঢুকতে দেয় না তাদের দেশে।
বিলিয়ন ডলার খরচ করে এই অবৈধ নিষিদ্ধ জিনিস চেক করার ব্যবস্থ করে রেখেছে সেই সব দেশ নিজের দেশকে সুরক্ষিত করার জন্য।
অবৈধ, নিষিদ্ধ বলার সাথে সাথে আমাদের মনে হতে পারে গাঁজা মাদক,স্বর্ন ইত্যাদি। কিন্তু সেগুলো তো পরীক্ষিত নিষিদ্ধ সব দেশে। কিন্তু অবৈধ ড্রাগ, মূল্যবান ধাতুর পাশাপাশি কিন্তু অতি সাধারন জিনিস আছে। এই তালিকায় থাকে ফল বা সবজী গাছ লতাপাতা মূল, তেমন জিনিস উন্নত দেশে ইমিগ্রেশন যাচাই বাছাই করে ঢুকতে দেয় অথবা আটক করে রাখে।
ফল, সবজী, খাদ্য দ্রব্য তন্ন তন্ন করে সুটকেস খুলে বের করে নেয় ইমিগ্রেশন অফিসাররা। প্রতিটি জিনিস শুধু খুলে দেখে না কেটে কুটে তার ভিতর থেকে বের করে পোকা, লার্বা। যা পায় পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য গবেষণা কেন্দ্রে পাঠায়। এবং মেশিনে ধ্বংস করা হয় সব কিছু। পরিবেশের ক্ষতিকারক কোন পোকা পরিবেশে মিশে যাক এটা কাম্য নয়।
এই সব কাজ অসম্ভব ধৈর্য্য নিয়ে করে প্রতিটি অফিসার। প্রাথমিক ভাবে ঘ্রাণ শুঁকে কোন সুটকেসে অবৈধ মালামাল আছে তা বাছাই করতে সাহায্য করে ট্রেনিং প্রাপ্ত অফিসার কুকুর। প্রতি ঘণ্টায় হাজার হাজার লাগেজ নামে এয়ারপোর্টগুলোতে। সব খুলে পরীক্ষা করা সহজ নয়। সন্দেহ জনক লাগেজ কুকুর ঘ্রাণ নিয়ে বাছাই করে দিলে তা আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় পরীক্ষার জন্য।
সংখ্যাটি শুনলে চমকে উঠতে হবে ১২০ পাউণ্ড খাবার মাত্র একটি চেক পোষ্টে প্রতিদিন পাওয়া যায়। এবং দেশে ঢুকতে দেওয়া হয় না এইসব খাবার। হাজার হাজার বিমানবন্দরের হিসাব নিলে গড়ে প্রতিদিন কত পরিমাণ খাবার ধ্বংস হয় ভাবলে খারাপ লাগে। এই পরিমান খাবার কোন একটা দেশের মানুষের সারা বছরের খাবার হতে পারতো। অথচ তা নষ্ট করা হয়।
খুব খারাপ লাগে ভাবতে, মানুষকে খেতে না দিয়ে নষ্ট করে ফেলার এই নিয়মটা। এমন মন খারাপ করা ভাবনা আসবে মনে প্রথম শুনলে।
কিন্তু কেন তারা এমন কাজটি করে সেটা জানলে মনে হবে মানুষ কেন জেনে বুঝে নিষিদ্ধ খাবার নিয়ে আসে! সব দেশের সব খাবার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আমদানী করে নিয়ে আসার সুযোগ তো তারা দিয়েছে। বাজারে গেলে সব দেশের খাবারই পাওয়া যায়। অথচ একজন যাত্রীর এক পাউণ্ড ফলের ভিতর হয়তো এমন একটি বীজাণু চলে এলো দেশে যার জন্য ক্ষয় ক্ষতির পরিমান মাত্র কিছু অর্থে আর সীমা বদ্ধ থাকে না।
হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল হয় তো সেই বীজাণুর কারণে ধ্বংস হয়ে গেলো বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ ক্ষতি হলো। দেশের ফসলের অভাব হলো। বিশাল একটা অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটে যেতে পারে। একজন মানুষের মুখের স্বাধ আহ্লাদ মেটানোর জন্য।
এমনটা অতীতে হয়েছে এবং এই ক্ষতির হাত থেকে দেশকে জনগনকে রক্ষা করার জন্য ইমিগ্রেশন অফিসাররা এত কড়াকড়ি ভাবে, সততার সাথে, নিয়ন্ত্রণ করে দেশে কি ঢুকবে আর কি ঢুকবে না দেশের নিয়ম অনুযায়ী। নিয়মটা অনিয়মের জন্য হয়নি নিয়মের জন্যই হয়েছে। সবারই মেনে চলা উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:০৭