পাঁচজন মানুষ একসাথে পাশাপাশি বসে মোবাইলে চোখ দিয়ে আছেন। অথচ তারা এক সাথে আড্ডা দিতে এসেছেন।
দুচারটা কথা শেষে আবার মোবাইলে মনোযোগী। আসেন সবাই হাসেন সেলফি তুলি।
সবগুলো মুখ ঠাসাঠাসি করে সেট করা হয় মোবাইলের স্ক্রিনে। কেউ তখনই সেলফি পোষ্ট করে ফেলেন। কেউ অপেক্ষা করেন বাড়ি গিয়ে পোষ্ট করার। টুংটাং শব্দ ভাসে। মোবাইল খুলে দেখেন কমেন্ট পরেছে। মন্তব্যের উত্তর দিতে ব্যস্ত হন। অন্যরা মোবালের বাতি জ্বেলে স্ক্রল করে চলেন টাইম লাইন, হাসেন আপন মনে অথবা ভ্রু কুচকে উঠে টাইম লাইনের লেখা দেখে। কাছের বন্ধুদের চেয়ে বায়বীও বন্ধুদের কথাবার্তা মনেযোগ বেশী আকর্ষণ করে।
আলো আঁধারির চাইনিজ রেস্তরার ছোট টেবিলের উপর ঝুলে থাকা লাল বাতিটি নীল আলোর সংমিশ্রণে অন্যরকম হয়ে উঠে। প্রত্যেকের মুখে নীলাভ আলো চকচক করছে। চোখের তারায় মোবাইল ফোনের স্ক্রীনের রিফ্লেকশন। এক একজনের মনে এক একরকম অনুভূতি ফেসবুকের নানা রঙের পোষ্টগুলো দেখে।
ওয়েটার খাবারের ওর্ডার নেয়ার অপেক্ষা করে। কে কি বলবেন খাবেন এখনো ঠিক করে উঠতে পারেননি। এখনো খাবারের লিষ্ট দেখেননি।
অপেক্ষায় আছেন অন্য বন্ধুরা বলুক। ততক্ষণ আরেকটু ভার্চুয়াল জগতের সাথে কথা হোক।
ওয়েটার অপেক্ষায় আছে।
একজন হেসে উঠলেন দেখেন আমাদের এই মিলনের ছবিটি এখনই একশ লাইক পেয়ে গেছে। আমাদের এই আনন্দ মূহুর্ত অনেকে হিংসা করছেন।
তাই নাকি দেখি কি মন্তব্য করেছে। আগ্রহী হয়ে মোবাইলে চোখ রাখেন আর চারজন।
অতঃপর খাবারের ওর্ডার করেন। যা খাবেন না তাও ওর্ডার করেন। খাবার এলে টেবিল ভর্তি খাবারের ছবি তুলে পোষ্ট দেওয়ার প্রতিযোগীতা শুরু হয়। এক সাথে এবং আলাদা ভাবে প্রতিটি ডিসের ছবি মোবাইল বন্দি করা হয়।
ওয়েটারকে ডেকে বন্ধুদের সাথে খাওয়ার ছবি তোলা হয়। পাঁচজনের পাঁচটি মোবাইল থেকে এবং একজনের ডিএসএলআর ক্যামেরা থেকেও একই ছবি বারেবারে তুলে দিতে হয় ওয়েটারকে নানা এঙ্গেলে।
খাওয়া শেষে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন এঙ্গেলে চাইনিজ রেস্তরার সুদৃশ্য ডেকোরেশনের সাথেও ছবি তোলা হয়। অতপর তারা বেড়িয়ে পরেন বাড়ির পথে। যেতে যেতে সবাই প্রায় একই রকম স্ট্যাটাস দেন অনেকদিন পর বন্ধুদের সাথে দারুণ একটা সময় কাটালাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:০১