somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

অজানা রহস্য

৩১ শে মার্চ, ২০২১ রাত ২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বেশ কিছুদিন ধরে শুনছিলাম এন্টিবায়োটিক এর সতর্কতা। এন্টিবায়টিক যা আমাদের অসুখ করলে খেতে হয়। সব সময় বলা হয় এন্টিবায়টিকের কোর্স ঠিকঠাক মতন শেষ করতে। ডাক্তাররা খুব প্রয়োজন না হলে এন্টিবায়টিক দেন না রোগীকে।
অথচ রোগী ডাক্তারের পরমর্শ মতন সব গুলো ট্যাবলেট না খেয়ে তিন চারদিন পর ভালো বোধ করলে, অনেক সময় বাকি ওষুধ আর খান না। অনেকে আবার অন্য সময় খাবেন বলে তুলে রাখেন। একই রকম সমস্যা দেখা দিলে, নিজের মতন তুলে রাখা ওষুধ খেয়ে ফেলেন।
ভালোর চেয়ে ক্ষতি নিজের শরীরে নিজে নিজে ডেকে আনা হয় এভাবে পুরো কোর্স এন্টিবায়োটিক ওষুধ না শেষ করে বা একটা দুটো ট্যাবলেট যখন তখন খেয়ে নিলে।এন্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে, সাথে ওষুধ কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলছে।উন্নত বিশ্বে খাবারেও এ্যান্টিবায়টিক যোগ করে দেয়। প্রাণীর খাবারেও থাকে এ্যান্টিবায়টিক। সাথে ফাইবার সরিয়ে নেয় খাবার থেকে। একটা ফল না খেয়ে আমরা জুস কিনে খাই। যাতে অনেক আর্টিফিশাল উপাদান যোগ করা হয় আমাদের শরীরের প্রয়োজনের অতিরিক্ত অনেক কিছু পায়, সাথে এ্যান্টিবায়টিক, খাবার থেকেও ঢুকে যায় শরীরে।
করোনাকালে নতুন অসুখ কোভিট১৯ সম্পর্কে মানুষ অনেক শিখেছে এই রোগ বিষয়ে। বিজ্ঞানী চিকিৎসকরা যখন হিমশিম এই রোগ সামলাতে মানুষ রসুন কোয়া, কালিজিরা এমন আরো কত টোটকা খেয়ে তখন করোনা প্রতিরোধ করে ফেলছে। মাস্ক না পরে দূরত্ব বজায় না রেখে চলাচল চলছে। ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতী বাড়ে, এমন কারো শরীরে করোনা কঠিন ভাবে বিস্তার করে কেউ নিজের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়ে করোনাকে পরাস্থও করতে পারে। প্রতিটি মানুষের শরীরের গঠন প্রক্রিয়া থেকে কার্য ক্ষমতা আলাদা। এর জন্যই কেউ মারা যাচ্ছেন কেউ সুস্থও হয়ে উঠছেন। কারো কিচ্ছু হচ্ছে না।
এখন ভ্যাকসিন এসেছে। অনেকে এক ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েই নিজেকে সুরক্ষিত ভেবে আডডা আনন্দ গ্যাদারিং করছেন। কিন্তু নিয়ম হলো ভ্যাকসিন নেয়ার পনেরদিন পর ভ্যাকসিন শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলে। দ্বিতীয় ডোজ আরো শক্তিশালী করে এই প্রতিরোধ ক্ষমতা। এখনও গবেষকদের পরীক্ষা চালছে, ভ্যাকসিনের প্রতিক্রিয়ার উপরে। অনেকে ভ্যাকসিন নিয়েও রোগ আক্রান্ত হচ্ছেন।
ভ্যাকসিনের কার্য ক্ষমতা একশ ভাগ নয়। তাই কেউ কেউ ভ্যাকসিন নিয়েও রোগ আক্রান্ত হতে পারেন। এবং কতদিন সুরক্ষিত থাকবেন তাও বলা যাচ্ছে না এখনই। হয়ত আগামী অনেক বছরের জন্য মাক্স পরা, হাত পরিস্কার করাটা নিজের ভালোর জন্যই করে যেতে হবে।
মানুষ থেকে দূরে থেকে এই কোভিড ১৯ দূর করা যায় । অথচ মানুষ চৌদ্দদিন নিজেকে আলাদা না রেখে ছড়িয়ে দিচ্ছে আরো মানুষের মধ্যে। নিজের মধ্যে কোভিট ১৯ থাকলে বেশ কয়দিনেও কোন শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয় না। একটা ভাইরাস শরীরে নিজের বিস্তার করতে সময় নেয়, সেই সময়টা চৌদ্দ দিনে বোঝা যায়। অথচ নিজেকে সুস্থ ভেবে সবার সাথে মিশে এক একজন ছড়িয়ে দিচ্ছে অন্য অনেক লোকের মাঝে রোগটা ।
বিভিন্ন দেশ বাইরে থেকে আগত মানুষের উপর কঠিন নিয়ম আরোপ করেছে। অনেক দেশে প্রবেশ করা ব্যয় বহুল এবং কঠিন নিয়ম মানতে হয়চ্ছে এখন। প্লেনে মাস্ক পরে না থাকার জন্য চৌদ্দ হাজার ডলার ফাইন করা হয়েছে দেখলাম।
ভাইরাস নিজের চেহারা বদলে ফেলেছে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে নিজেকে বাঁচানোর জন্য। চিকিৎসক,বিজ্ঞানী, ডাবলুএইচও অনেক আগে থেকে বলে আসছেন নিয়ম। একবার দুবার তিনবার আসবে ঢেউ। অথচ মানুষ পাত্তাই দিচ্ছে না। সেদিন কজন বয়স্ক মানুষের আলাপচারিতা শুনলাম। তারা ভ্যাকসিন নিতে যাবে না। ভ্যাকসিনে কিছু হয় এসব তারা বিশ্বাস করে না। অজ্ঞ চিন্তার মানুষ সব দেশে সবখানে। অথচ সরকার বয়স্কদের অগ্রাধিকার দিয়ে অল্প বয়স্কদের ভ্যাকসিন দিচ্ছে না। ভ্যাকসিনের অপ্রতুলতার জন্য। একমাসের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা বলে, সে সময় তিন, চার মাসে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
মানুষ চেষ্টা করছে ভাইরাস মারতে, ভাইরাস চেষ্টা করছে টিকে থাকতে।
হয়তো যে ভ্যাকসিন প্রথম কোভিট ১৯ ভাইরাস মোকাবেলা করার জন্য আবিস্কার হয়েছে তা পরের চেহারার নতুন শক্তিশালী ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে না। আরো শক্তিশালী ভ্যাকসিন আবিস্কার করতে করতে ভাইরাসও তার শক্তি কতটা বাড়িয়ে আরো কত ডেডলি হয়ে উঠবে কে জানে। বির্বতানবাদ নিয়ে অনেক বিতর্ক অথচ চোখের সামনে এবার যেন ভাইরাসের বিবর্তন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাচ্ছে প্রকৃতি কি ভাবে বদলে যায়।
অথচ মানুষ পারে, দূরে থেকে, মাস্ক পরে পরিচ্ছন্ন থেকে অন্যদের মাঝে না ছড়িয়ে, ভাইরাস দূর করতে।
মাঝে মাঝে ডাক্তারদের পোষ্ট পরি। রোগী সামলাতে তাদের হিমসিম অবস্থ, রাতদিন ছুটাছুটি, নিজের দিকে তাকানোর সময় নাই। আইসি ইউ এ রোগী রাখার জায়গা নাই অথচ রোগীর ভীড় বাড়ছে। অসহায় তাদের অবস্থা অথচ মানুষ ডাক্তারদের দোষ দিচ্ছে।
যে চীনকে দোষ দেওয়া হচ্ছে করোনার জন্য সেই চীনে, জীবন যাপন এখন স্বাভাবিক। গত বছর মার্চের আঠারো তারিখেই বিভিন্ন শহর থেকে জড়ো করা আটত্রিশ হাজার ডাক্তারের দলকে রাজকীয় ভাবে গার্ড অব অর্নার দিয়ে নিজ শহরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তার আগে দিনরাত এক করে তারা, উহানের করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করেছে। পুরো শহর লক ডাউন করে রেখে সবটা ভালো হওয়ার পর নিজের ঘরে মানুষকে ফিরতে দেওয়া হয়। ভৌতিক হয়ে যাওয়া শহরে আবার প্রাণ ফিরে আসে।
অথচ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ, আজ ভালো তো কাল খারাপ এমন একটা অবস্থায় করোনাকে লালন পালন করছে।
একটু চালু রেখে একটু বন্ধ না রেখে, পুরো দুমাস সব কিছু বন্ধ রাখা হলে হয়ত পুরো নির্মূল হয়ে যেত এত দিনে করোনা পৃথিবী থেকে।
কি জানি আর কতদিন এমন নিরবে দেখতে হবে। করোনার সাথে কঠিন অবস্থায় বাস করতে হবে সতর্কতায়। সাথে দেখতে হচ্ছে অনেক মানুষের ঘৃনা বেড়ে গেছে চীনাদের উপর। যখন তখন ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া , গালি গালাজ করা থেকে গুলি করে আমেরিকায় আটজন ম্যাসাজ পার্লারের চীনা মেয়েকে মেরে ফেলা হলো । এরা কি আসলে সবাই চীনা, হতে পারে, তাইওয়ান, কোরিয়া ফিলিপিন বা অন্য কোন দেশের। হতে পারে নেপাল, ভোটান বা বাংলাদেশের উপজাতি কেউ। চেহারার সাদৃশ্য দেখে মানুষ সনাক্ত তাদের অভিযুক্ত করা; এক ধরনের কঠিন মানসিকতা। রোগের মতন মানুষের মানসিক ভাবনার চিকিৎসাও জরুরী। কি হতো যদি এই রোগ চীন না হয়ে অন্য দেশ থেকে ছড়াত । অনলাইনে একটি পিটিশন ঘুরছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে প্রাণী বিনিময় বন্ধ করার । সে প্রাণী জীবিত বা মৃত হোক, হোক প্রাণীর মাংস, বা চামড়া। প্রাণী থেকে ভাইরাস ছড়িয়েছে এই ধারনা থেকে এই আয়োজন করেছে কিছু চিন্তাবিদ হয়তো।
আমি শুধু প্রার্থনা করি পৃথিবী আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাক। সহজ হোক সবার সাথে মেলা মেশা। একে অপরের শত্রু না হয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৫৫
১৩টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×