দেশী কারো সাথে প্রথম দেখা হলে বা ইনবক্সে, প্রায় একটা প্রশ্ন আসে, হোয়াট ইজ ইউর গুড নেম? এই প্রশ্ন শুনে হাসব না কি কাঁদব বিদেশিদের তো এমন প্রশ্ন শুনে আক্কেলগুড়ুম হয়। হা করে তাকিয়ে থাকে?
দোষটা অবশ্য প্রশ্নকর্তার নয়, দোষ বাংলা ভাষার। কারন বাংলা ভাষায় এমন প্রশ্ন ছোট বেলা থেকে শুনে অভ্যস্থ সবাই। ভালো নাম কি? আবার এভাবেও বলা হয় আসল নাম কি?
তার মানে যে নামটা বলা হলো সেটা ভালো না আসলও না। একটা ভালো এবং আসল নাম থাকতে হবে।
যারা ভালো ভাবে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারেন না তারা আবার ইংরেজিতে কথা বলতে আসেন। তাও আবার সরাসরি বাংলার অনুবাদ করে। তাই প্রশ্ন হয়ে যায়, হোয়াট ইজ ইউর গুড নেম। বা রিয়েল নেম। তার মানে প্রশ্নকর্তা সরাসরি অভিযোগ করে বসছেন মিথ্যা নাম বলার। আসল না বলে ।
ইংরেজিতে কোন গুড নেম নাই। নিক নেম যে নামে ডাকা হয় ফ্যামেলি নেম যেটা পারিবারিক নাম। কখনো কারো মিডিল নেম থাকে । সে নামটাও পরিবারের কারো নাম থেকে আসে। গিভেন নেম যে নামটা দেয়া হয়েছে। আসলে এই শব্দটাই যুক্তিযুক্ত। যে নামটা একটি মানুষকে দেয়া হয়েছে সেটা তার নাম। সংক্ষিপ্ত ছোট আকারে নিক নেম বা ডাক নামে অনেককে ডাকা হয়।
বাংলা ভাষায় আমরা কখনো জিজ্ঞেস করি না কি নামে ডাকা হয়। প্রশ্ন হয় ভালো নাম কি?
বাংলাদেশের মানুষের আবার অনেকের চার পাঁচটা শব্দের নাম রাখার প্রবনতা। কোনটা যে প্রথম কোনটা পারিবারিক। কোনটা মিডিল নেম কিছুই বোঝার উপায় নেই। এতগুলো শব্দের বোঝা কেন চাপিয়ে দেয়া হয় বাচ্চাদের উপর।
কারো নাম যদি হয়: সুলতানা বিপাশা জাহান সোহেলী, তনিমা শিখা মল্লিকা প্রভাসি।
রাদাত মাহি মিল্লাত আলম, আবু মুবারক হোসেন টিপু, সরাফত মেহদী তোবারক তৌহিদ।
সবগুলো শব্দ দিয়েই তাকে ডাকা যায়। এখানে বাবা দাদার নামের তেমন প্রভাব বোঝা যায় না। এমন অদ্ভুত শব্দের বোঝা কেন অভিভাবক শিশুর উপর চাপিয়ে দেন বুঝতে পারি না। আর্ন্তজাতিক ক্ষেত্রে ফর্ম ফিলাম করতে মাথা গুলিয়ে যায় হিমসিম লাগে এমন নাম নিয়ে। আজকাল আবার পরিবারের পুরুষ সদস্যের প্রথম নামটি পরিবারের স্ত্রী,সন্তান তাদের নামের সাথে লেজুড় জুড়ে দেন। আসলে এই যে প্রথম নামের সাথে শেষ নাম লাগানো এর কোন ধারাবাহিকতা নেই। একটা সময় হয়তো পারিবারিক কার্যকরনের সাথে সম্পর্কিত ছিল শেষ নামটি।
অনেকে হুট করে এক দুটো শব্দ ঝেড়ে ফেলে আকিকা দিয়ে ফেলেন নিজের। কিন্তু সমস্যা হয় যখন আর সব কগজ যেমন বার্থ সাটিফিকেট, স্কুল কলেজের সার্টিফিকেট, বিয়ের কাবিন নামা এমন সব কাগজে আলাদা নাম হয়। তখন সব কাগজে এক নাম না হওয়ায় অসুবিধায় পরতে হয়। অনেকের ইমিগ্রেশন হয় না শুধু নাম ঠিক না থাকার জন্য।
ফার্স্ট নেম, মিডিল নেম বা ফ্যামেলি নেম আলাদা করতে মাথা চক্কর খায়। সবগুলোই নিক নেম বা ডাক নাম হতে পারে এমন নামের।
এখন আবার নামের বাহার হয়ে যাচ্ছে এমন; ধুষর আকাশ, বিষন্ন বিকাল। রাতের তারা। মায়া মরীচিকা । পুরুষ নারী যে কেউ হতে পারে এমন নামে।