somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

মহাশূন্যের দেশে

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৫:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





পূর্ণিমার আলোয় ঝলমল করছে চারপাশ। কোকা বিচে ঘরবাড়ির বাতির বৈদ্যুতিক আলো নাই বিচের পাড়ে। প্রকৃতি আপনমনে ছড়িয়ে দিয়েছে সৌন্দর্য। চাঁদের আলো যেন আরো প্রস্ফূটিত হয়েছে। অনেকটা সময় সাগরপাড়ে কাটিয়ে দিলাম মুগ্ধতায়। শুধু জলের কলোতান শুনে। আর লক্ষ, কোটি হীরের কনার ছুটাছুটি যেন ঢেউয়ের মাথায়। অদ্ভুত এক সৌন্দর্য; বর্ণনা বা ছবিতে তা আসেনা। মনের উপলব্ধিতে, চোখের দৃষ্টিতে ধারন করে নিতে হয়। আমি যেন জোছনা পান করছিলাম, সেই রাতে সাগর সৈকতে বসে। আর আবহাওয়া ছিল এত আরামদায়ক। সারা রাত বসে থাকতেও কোন অসুবিধা ছিল না।
কিন্তু হঠাৎ করে বেরসিকের মতন বৃষ্টি চলে আসল। সাগরপাড়ে যখন তখন বৃষ্টি হওয়াটা মনে হয় স্বাভাবিক। আমার জোছনা ধ্যান, ভেঙ্গে উঠতে হলো ভিজে না যাওয়ার জন্য। তাছাড়া রাতও হয়েছে বেশ। এগারোটা বাজে। কাল যত সকালে বেরুতে পারব তত বেশি দেখা যাবে।
সকালে বেরিয়ে দেখলাম রাতে ভালো বৃষ্টি হয়েছে সব ভিজে চুপচুপ। আমাদের হোটেলে ব্রেকফাস্ট থাকলেও আমরা রাতে ব্রেকফাস্টের জায়গা দেখেছিলাম, সেখানে সকালের নাস্তা করতে গেলাম।ওয়াফল প্লেস জমজমাট । নানা রকমের খাদ্য সম্ভারে পেট পুরে আমাদের উঠতে ইচ্ছা করছিল না। কিন্তু আমাদের যেতে হবে।
কোকা বিচ টাউন ছেড়ে বেরিয়ে এলাম। রাস্তা একদম শুনশান এদিকে। অনেক চিল, শকুন, কাকের দেখা পেলাম। বক সাদা প্যালিকন, আরো অচেনা অনেক পাখি নিজের মতন ঘুরে বেড়াচ্ছে। পাখিদের অভয়ারণ্য যেন। সবুজ চারপাশে। রাস্তার দুইপাশে খাল আর তার পাশে জঙ্গল জলা ভূমি।
এখানে পাশাপাশি জীব জন্তুর অভয়ারণ্য আর মহাকাশ স্পেস অবস্থান করছে। আবাসিক এলাকা এদিকে কাছাকাছি নাই। ন্যাশনাল এরোনটিক্স এবং স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন যেখানে বহু অর্থ ব্যায় করে বিশাল মহা বিশ্বের নানান অজানা বিষয়ে জানার জন্য গবেষণা চলছে দিন রাত।
মিনিট বিশের মধ্যে ক্যানেডি স্পেস সেন্টারে পৌঁছে গেলাম। কিন্ত মনে হলো এই এলাকাটা অনেক সুরক্ষিত। এবং সবাই এখানে ঢুকতে পারে না। তবে পাখিরা বড় আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে চারপাশের সবুজ মাঠে গাছে। জন মানবের চিহ্ন নেই।



এই জায়গা থেকে রকেট উড়ে যায় এবং বর্তমান সময়ে অনেক রকেট উড়ে গিয়ে মহা শূন্যে নানা রকমের যন্ত্রপাতি ছেড়ে দিয়ে বা স্থাপন করে নির্ভিঘ্নে ফিরেও আসে। এই জায়গায় কেবল কর্মিরাই ঢুকতে পারে।
গুগলে খুঁজে দেখলাম সাত মিনিটের দূরত্বে মিউজিয়াম বা কেনেডি স্পেস সেন্টার ভিজিটর কমপ্লেক্স যেখানে গেলে আমরা ভিতরে যেতে পারব। এবং মহাশূন্য থেকে ফিরে আসা স্পেসশিপ গুলো এবং সাথে আরো অনেক কিছু দেখতে পাবো। সকাল সকাল পৌঁছালেও আমাদের আগে প্রচুর মানুষ চলে এসেছে। তবে বিশাল চত্তরে মানুষদের দেখা যাচ্ছে না। গাড়ির পাকিংয়ে যত গাড়ি দেখলাম। মানুষরা যেন রকেটে চড়ে চলে গেছে মহা শূন্যে অন্য গ্রহে।
এখন প্রচুর রোদের আলো এবং ঝকমকে একটা দিন, সকাল দশটা বাজে। ১৯৬৭তে স্থাপন করা এই স্পেস সেন্টার ভিজিটর কমপ্লেক্স এ আমরা এতদিন বাদে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ পেলাম।
টিকেট কেটে আমরা ভিতরে ঢুকলাম। যেতে যেতে দেখতে পাচ্ছি সারি সারি রকেট সাজিয়ে রাখা হয়েছে। যে রকেট ভিন্ন গ্রহ ছূঁয়ে এসেছে, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে অন্য রকম অনুভূতি হয়েছিল।
অনেক আগে একটু খানি চাঁদের মাটির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম, নিউইয়র্ক হিস্ট্র মিউজিয়ামে। তারও কত আগে সেই ছোটবেলায় সেদিন খুব জোছনা ছিল, আমার মা আমাকে পাশে নিয়ে আকাশ দেখছিলেন। চাঁদের দিকে দেখিয়ে বলেছিলেন, দেখ চাঁদে মানুষ চলে যাচ্ছে। মানুষ কত কিছু করতে পারে। মানুষের চেষ্টা চাঁদে যাওয়ার জন্য অনেকদিন ধরে চলছে। প্রথমে কুকুর পাঠিয়ে ছিল রকেটে করে। আর এখন মানুষ যাচ্ছে, যারা চাঁদে নামবে। অসাধ্য সাধন মানুষই করতে পারে। ওরা কি সত্যি চাঁদের মাটি ছূঁতে পারবে। ফিরে আসতে পারবে তো তিনজন মানুষ আবার পৃথিবীতে। অনেক অজানা আশংকা ছিল মায়ের মনে।
সেই স্মৃতি মনে আছে। মানুষ চাঁদে গিয়ে ইতিহাস তৈরি করে ছিল। মা আর আমি, এক সাথে ভরা জোছনার রাতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে ছিলাম গভীর আগ্রহে। যেন রকেটটা আমরা দেখতে পাব ছুটে যেতে।
এখন অনেক কিছু সহজে পাওয়া যায় তাই চিন্তাও করতে পারে না বর্তমানে অনেকে, চাঁদে যাওয়া বা রকেটে করে পৃথিবী পেরিয়ে যাওয়া অসাধ্য ছিল কোন এক সময়। হাতের মুঠোয় মোবাইল নিয়ে জেনে যায় কত কিছু ছোট বাচ্চারা, আমাদের ছোটবেলায় তো টেলিভিশনে এ্যাপোলোর ছুটে যাওয়া দেখারও সুযোগ ছিল না। ঘরে ঘরে টেলিভিশন ছিল না এমনটা কি বিশ্বাস যোগ্য হবে আজকের মানুষের কাছে। অথচ মা আকাশের দিকে চাঁদের দিকে তাকিয়েই যেন অনুভব করেছিলেন রকেটের ছুটে যাওয়া। এঁকে দিয়ে ছিলেন আমার মনেও ভাবনা। চাঁদে মানুষ যাচ্ছে।
আর এখন ছূঁয়ে দেখতে পারছি সেই চাঁদে যাওয়া এ্যাপেলো। জীবন কত রহস্যময়। কখনো ভেবেছিলাম কি সেই ছোটবেলার আমি চাঁদে যাওয়া এ্যাপলোর পাশে দাঁড়াব।
আসলে নাসা এক্সপ্লোর এর ভিতর ঢুকার পর যে অনুভুতিটি হলো সেটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এতদিন যা কিছু দেখলাম। চেনা জীবন যাত্রার থেকে সম্পূর্ণ অন্যরকম কিছু। যদিও এ শুধুই দেখা । ভাবলে খারাপ লাগে এই দেখা, না দেখে যদি এর সাথে চলার সুযোগ পেতাম। কিন্তু আমাদের সময়ের পরিবেশ আমাদের পিছনে ফেলে রেখেছে। আমরা অনেক সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছি, এমন অনেক কিছু পাইনি জীবনে যখন তা পেলে অন্য কিছু হতে পারতাম। এখনও আমাদের বাচ্চাদের পড়ালেখার সুযোগ কতটা জানার সুযোগ আছে পৃথিবী সম্পর্কে। যারা বিদেশে আসছে নিজের চেষ্টায় বা অভিভাবক বিদেশে এসেছিল বলে নিজেরা নানা রকম সুযোগ পাচ্ছে গবেষণার তারাই জানতে পারে।
রোল নাম্বার দিয়ে আমাদের মেধা যাচাই করা হয়। অন্যরকম কিছু করার সুযোগ তো নাই ই। আর কারো ভিতর অদম্য কোন উৎসাহ থাকলে গলা টিপে তা বন্ধ করে দেয়া হয় যেমন স্কুলে, তেমন বাড়িতে। শুধু দেখা হয় কত নাম্বার পেলো আর রোল নাম্বার কত । জিপি এ কত পেলো মুখস্ত বিদ্যায়। অথচ বিদেশে গবেষণায় এমন সব ছাত্ররা চলে যায়, যারা হয় তো কোন এক সময় ভালো করছিল না পড়ালেখায় কিন্তু তারা বিশেষ আগ্রহের জন্য বিদেশে নানা রকম সুযোগ পায়। ইচ্ছে হলে বদলে ফেলতে পারে সাবজেক্ট বিদেশের পড়া লেখায় যে কোন সময়, যা আমাদের দেশে সম্ভব নয়। ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যম নির্ধারিত হয় সুযোগ আর একটা বিষয়ে পছন্দ না হলেও লেগে থাকতে হয় বেশির ভাগ শিক্ষার্থীদের। এছাড়া পারিবারিক ধারা বজায় রেখে বাবা, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, উকিল তাই সন্তান পছন্দ না করলেও ডাক্তার, প্রকৌশলী, উকিল হতে হয় অনেক ক্ষেত্রে।
বিদেশেও এক সময় আমাদের দেশের এখন যে পদ্ধতিতে পড়ালেখা হয় তেমন নিয়ম ছিল। অমনোযোগী ছাত্রদের বিষয়ে অনেক অভিযোগ করা হতো, অভিভাবকদের কাছে। স্কুল থেকে বের করেও দেয়া হতো শিক্ষার্থীকে। আমরা জানি আলবার্ট আইনস্টাইন, আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল এবং আরও অনেক শিক্ষর্থীকে অমনোযোগী এবং পড়ালেখায় ভালো নয় বলে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়। নিজের ভাবনায় ডুবে তখন তারা আবিস্কার করতে পেরেছিলেন যুগান্তকারী বিষয়, যা বদলে দিয়েছে মানুষের জীবনযাপন। ধারনা বদলেছে কত কুসংস্কার এবং জীবন ধারার। অমনোযোগী ছাত্র যে গভীর ভাবনায় নিজেদের ভিতরে কিছু ভাবে এই বিষয়টা যদি শিক্ষক বুঝতে না পারেন তা হলে শিক্ষার্থীর জীবন হয় দূর্বিসহ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামও এই ধারায় অমনোযোগী ছাত্র ছিলেন, শেষ করতে পারেননি স্কুল শিক্ষা।

একটুখানি জায়গার ভিতর নান রকম ভরের তারতম্য শূন্যে, ভেসে থাকা, ভেসে বেরানো জিনিসপত্র থেকে খাবার বানানো, খাওয়া। প্রতিদিনের জীবন যাপন করা। সব কিছুতে অভ্যস্থ হতে হয় একজন নভোচারিকে।
অন্বেষণ করার জন্য জানার জন্য আগ্রহ তৈরি করার জন্য বাচ্চাদের সাথে করে অভিভাবকরা আসছেন। বাচ্চারা মহাআনন্দে সব কিছু উপভোগ করছে। এই যে মনের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হলো এ থেকে হয় তো বড় কোন গবেষক হয়ে উঠবে একদিন। আবার সবাই কিছু হবে তাও না। হয় তো অনেক বাচ্চার এই বিষয়ে আগ্রহ হবে না কিন্তু তাদের মনে স্মৃতিটা রয়ে যাবে নাসায় ঘুরে বেড়ানোর। গ্রাণ্ড পেরেন্টস বা পেরেন্টস তাদের নিয়ে গিয়েছিলেন ছোট বয়সে। হয়তো স্কুলে তারা সুন্দর একটা গল্প লিখবে এই বিষয়ে। অথবা বেশ শতস্ফূর্ত উত্তর দিবে স্পেস বিষয়ে।
শুধু রকেট দেখা নয়। ঘুরতে ঘুরতে একটার পর একটা রুমে ঢুকছি আর এক একটা বৈচিত্রের সাথে পরিচিত হচ্ছি। ডকুমেন্টারি চলছে প্রত্যেকটা রকেটের তৈরি থেকে তার সাফল্য এবং এর পিছনে কাজ করা মানুষদের দিন রাত্রি এক করে দিনের পর দিন বছরের পর বছর পরিশ্রম। কত সময়, কখনো প্রায় যুগ পেরিয়ে গেছে তাও সফলতা আসেনি। একটার পর আরেকটা সমস্যা, সমাধান করতে কাটছে তাদের অস্থির সময়। জেমস ওয়েব ক্যামেরার সফলতা আসার আগে কতটা পথ পারি দিতে হয়েছে। কত অল্প বয়সে তাদের মাথায় খেলেছে এমন কিছু করার চিন্তা। অথচ সেটা কার্যকরী করতে কেটে গেছে কতগুলো বছর। তিনটি যুগ আশা নিরাশা দুঃখ, হতাসা তবুও তারা হতাস না হয়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছে। এবং একদিন সফলতা এলো।
আজ অনেক গভীরের খবর সহজে উঠে আসছে তার মাধ্যমে। এই বিশাল কাজের জার্নিটা শুধু তারাই জানে কতটা অসাধ্যকে তারা সাধন করেছে। অথচ অনেকের কাছে এই বিশাল ইতিহাস, সাফল্য পাওয়া কোন ব্যাপার না। ছবি আসছে স্পেস থেকে এটাই হয় তো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যাবে এক সময়। সহজে পাওয়া জীবন।
শুধু ছবি দেখা শোনা নয়; বাস্তবে স্পেসে গেলে কেমন লাগে তেমন কিছু অভিজ্ঞতা পাওয়ারও সুযোগ পেলাম। মঙ্গল গ্রহে রওনা হয়ে গেলাম এক সময়। মাটি নয় মেঘের ভিতর দিয়ে মহাশূন্যে উড়ে গেলাম। চারপাশে তারকারাজি। আমাদের পৃথিবীটাকে দেখা যাচ্ছে চাঁদের মতন। মঙ্গলের লাল মাটি ছূঁয়ে কেঁপে কেঁপে উড়ে যাচ্ছে আমাদের রকেট। মনে হয় যেন পরে যাবো। থরথর কাঁপছে যান। আর শরীর শূন্যে ভাসছে। ওয়ান্ডারল্যান্ডের বিশাল ট্রেন থেকে পরতে থাকলে বা দোলনায় দুলতে থাকলে যেমন অনুভূতি হয় এ তার চেয়েও ভয়াবহ। মনে হচ্ছিল কখন থামবে, নামলেই বাঁচি পৃথিবীর বুকে। কিন্তু থামাথামির নাম নেই চলছে তো চলছে স্পেইসশিপ কত রকমের পরিবেশ পার হয়ে। রাতের অন্ধকার তারাখচিত আকাশ, তো দিনের আলোয়, শুধু নেই কোন সবুজ গাছ বা নীল জলের দেখা। আর মনে হয় ফিরবে না পৃথিবীর বুকে। দীর্ঘ সে পথ চলা।
অন্যরকম এই অনুভূতি অর্জন করাটা খুব ভালোলেগেছে। সেল ফোন বন্ধ, ক্যামেরা বন্ধ। আমাদের ব্যাগগুলোও জমা রেখে যেতে হয়েছে। পরে গেলে আর পাওয়ার সুযোগ নেই। উপর থেকে নিচে কোথায় হারাবে খুঁজে পাওয়া যাবে না। কাজেই ছবি তোলার কোন সুযোগ নেই। শুধুই নিজের অনুভুতিতে সঞ্চয় করে রাখা সেই স্মৃতি। মঙ্গল গ্রহ থেকে ফিরে এসে, বাইরে বেরিয়ে আবার অনেকটা সময় হালকা ঘুরে ফিরে বেড়ালাম । রকেটের ট্যানেলের ভিতরে চলাচল করলাম। স্পেসশিপের ভিতর যত রকমের যন্ত্রপাতি থাকে সব ধরে ধরে চালানোর সুযোগ পেলাম। শ দুই তিন বাটন। এতগুলের কার্যক্রম মনে রাখাও একটা বিশাল ব্যাপার। উল্টাপাল্টা চাপ দিলে রকেট অন্য রকম আচরণ করবে। এই শেখাটাও অনেক সময়ের ব্যাপার। যে রকেট চালক হবে তার স্মরণশক্তি থাকতে হবে অনেক সার্প এমনটাই মনে হলো।
মঙ্গলের পরে আবার চলে গেলাম চাঁদে। বাতাসে শূন্যে ভাসছে শরীর। চাপ ধরে আসছে চারপাশ থেকে। নভোচারীদের শূন্যে অবস্থানের সময় যেমন অনুভব হয়, শরীরে তেমনটাই অনুভব করলাম।
মিউজিয়াম গুলো এমন ভাবে তৈরি করা হয়। একবার ঢুকে পরলে তার শেষ দরজা দিয়েই বের হতে হয়। মাঝখান থেকে চলে আসার কোন সুযোগ নেই।মিউজিয়ামের এন্টার আর এক্সিট সম্পূর্ণ দুই দিকে।
তাই হালকা ভাবে যে দিকটায় ঢুকলাম। বাইরে খোলা জয়গায় হাঁটছিলাম তারপর ঘরের ভিতর ঢুকে যাওয়া হলো আর সেখান থেকে একটার পর একটা আকর্ষণিয় আয়োজন। প্রত্যেকের সাথে সময় কাটিয়ে আসতে হয়।
সবার শেষে চাঁদে ঘুরে এলেই সব আকর্ষণের সমাপ্তী হয়। আসলে অনেকে অসুস্থতা, ডিজকমফোর্ট অনুভব করে তাই আগে থেকে সাবধানতা দেয়া হয়। যেন শরীর সহ্য করতে না পারলে ঢুকা না হয়, স্পেসশিপে চড়ার জন্য। ভিতর ঢুকলে পরে একটা ছবি তারা তুলে দেয় নভোচারির পোষাক পরিহিত অবস্থায়।
আমাদের সব কিছু দেখা শেষ হওয়ার সাথে সারাদিনের জন্য আয়োজনের ও শেষ হলো সেদিনের মতন। আমরা দিনের একদম শেষ সময়ে বেরিয়ে এলাম সব কিছু দেখা শেষ করে এক নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে।
তখনও বিকালের সোনালী আলো মাখা দিন বাইরে। অভয়ারণ্যের পাখিগুলো ঘরে ফিরেছে নাকি কোথাও যায়নি বুঝলাম না। তারা গাছের ডালে ডালে পাতার মতন ঝুলে আছে। আর মনের সুখে সন্ধ্যরাগিনী গান করছে।

পাকিং লট এখন অনেকটাই ফাঁকা। কিছু বড় বড় বাস দেখলাম। অনেক মানুষ দল বেঁধে এসেছে বাসে করে। তারা লাইন দিয়ে নির্ধারিত বাসে চড়ছে।
আমরাও রওনা হয়ে গেলাম। কিছুটা পথ আসার পরই দেখলাম পাশের খালে কুমির শুয়ে আছে। কুমির এমন ভাবে শুয়ে থাকে এগুলো জ্যান্ত না মৃত বোঝার উপায় নাই। তবে এইখানে শুয়ে থাকা কুমিরগুলো জীবিত। তাদের থাকতে দেয়া হয়ছে, নিজেদের মতন আরামে আয়েসে।
সেদিন রাতেরবেলা একটা রকেট উত্থাপন ছিল। আমরা যে কোকা বিচে ছিলাম সেখান থেকে খুব সুন্দর দেখা যেত। রকেট উড়ে যাওয়ার লাইভ দৃশ্য দেখার সুবর্ণ সুযোগ ছিল। কিন্তু রকেট উড়ার সময়টা ছিল রাতের বেলা এগারোটায়। আর আমাদের আগে থেকে তিনঘণ্টা দূরে নেপলস শহরে হোটেল রিজার্ভ করা ছিল। আমরা সেদিন রাতে সেখানে থাকব তাই আর অপেক্ষা করতে পারলাম না লাইভ রকেট উড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখার জন্য। যেতে হবে তিন ঘন্টা দূরের নেপলস শহরে তাই পথে নেমে পরলাম।







সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১৩
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গৃহবধূ থেকে প্রধানমন্ত্রী; অভিভাবক শূন্য হলো বাংলাদেশ |

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১২


খালেদা জিয়া। ইস্পাতসম বজ্রকঠিন দেশপ্রেমের নাম খালেদা জিয়া। যিনি ভালো বেসেছেন দেশকে, নিজের জীবনের চেয়েও দেশকে ভালো বেসেছেন। দেশের বাহিরে যার নেই কোন লুকানো সম্পদ। নেই বাড়ি, গাড়ি অথবা... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৫ সালের সেরা মশকরা কোনটি

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৪



ইয়ে মানে বছর শেষ। ২০২৫ সাল বিদায় নিচ্ছে । তা আপনার কাছে ২০২৫ সালের সেরা মশকরা কোনটি ?


আমার কাছে সেরা মশকরা হচ্ছে- এনসিপির জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করা।

আরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেগম খালেদা জিয়াঃ এক দৃঢ়চেতা, সাহসী অধ্যায়ের সমাপ্তি

লিখেছেন সামহোয়্যারইন ব্লগ টিম, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৭



প্রিয় ব্লগার,
আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বেগম খালেদা জিয়া আর আমাদের মাঝে নেই, ইন্না লিল্লাহি ওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু রাজনীতির মাঠে বিরাট শূন্যতা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৯

 
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া এক উল্লেখযোগ্য চরিত্র। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির টালমাটাল পরিস্থিতিতে তিনি দলটির হাল ধরেন। সেনানিবাসে গড়ে উঠা দলটাকে রাজপথে বেড়ে উঠতে গৃহবধূ থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদা জিয়া মরিয়া প্রমাণ করিলেন , তিনি মরেন নাই ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৮


বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন। এই খবরে জাতি শোকাহত। কিন্তু একদল মানুষ আছে যারা উনার মৃত্যুর পরেও নিজেদের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থে তার মৃত্যু নিয়ে ঘৃণ্য মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। বদনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×