somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

জঙ্গল বন্যপ্রাণী আর ফুলের বনে

১১ ই জানুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৫:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রাতের খাওয়া-দাওয়া জমজমাট ডাউনটাউনে জম্পেশ হলো বেশ রাত করেই আমরা হোটেলে ফিরলাম । সকালে প্যাকআপ করে বেরিয়ে পড়লাম। আজ নেপলসের শেষ দিন আমরা নেপলসের বাইরে অন্য একটা শহরে ব্রেকফাস্ট করব,পথে যেতে যেতে যেখানে ভালো লাগবে থেমে যাবো।
কিন্তু সমস্যা দেখা গেল সেই হাইওয়ের, আমরা যদি মেইন হাইওয়ে ধরে যাই তাহলে টোল দেয়া আর ভিড়ের ভিতরে যাব আর দৃশ্য থাকবে মোটামুটি চেনা,অনেক গাড়ির সাথে চলা যেমনটা হাইওয়েতে হয় আরকি। আর অন্য ছোট রাস্তা দিয়ে গেলে, একদম জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাব। জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়ার রাস্তাটাই আমাদের পছন্দ হলো। পথে যে খাওয়ার পাওয়া যাবে না তা নয়। তবে বেশ ভিতরে যেতে হবে হয়তো অথবা আমাদের জানা নেই। অনিশ্চয়তা ভালোলাগল না। সকালে নাস্তা করেই রওনা হওয়া ভালো। তাই জঙ্গলে ঢোকার আগেই হোটেল থেকে মিনিট দশ দূরে ওল্ড নেপলসের নতুন ধরনের রেস্টুরেন্টে, অনেক রকম পদ দিয়ে হেবী ব্রেকফাস্ট করে নিলাম ।
হাইওয়ে ৭৫ যেটা সরাসরি পূবে গিয়ে, দক্ষিণে নেমে গেছে সেটা ধরলে টোল দিতে হবে আর মোটামুটি হাইওয়ের চিত্র দেখে যাওয়া যাবে অনেক গাড়ির ভীড়ে আর ৪১ নাম্বার রাস্তা যেটা পুবের দিকে ঢালু হয়ে দক্ষিনে গেছে তারপর নয়শ সাতানব্ব্ই ধরে কিছুটা গিয়ে হাইওয়ে একের সাথে মিশে দক্ষিণে নেমে গেছে, সেটা যাবে প্রকৃতির ভেতর দিয়ে। চলার পথে মিশে যাবে বন্য প্রাণীর উপস্থিতি। জঙ্গলের ভিতর দিয়ে বৈচিত্রময় রাস্তাটাই পছন্দ বেশী হলো। দেখে শুনে ধীরে সুস্থে যাওয়া যাবে সময় মোটামুটি পৌনে পাঁচ ঘন্টা দুই রাস্তাতেই লাগবে।
কিছুটা যেতেই ঘন জঙ্গলের ভিতর হারিয়ে গেলাম। দুই পাশে উঁচু উঁচু সারি সারি সবুজ গাছের সুরঙ্গে ঢুকে পরলাম।
আমাদের বা পাশে উত্তরের দিকে রয়ে গেল জীবজন্তুর অভয়ারণ্য। ফ্লোরিডা প্যান্থার ন্যাশনাল ওয়াইল্ডলাইফ রিফিউজী, প্যান্থারের সাথে আরো বিভিন্ন ধরণের বন্যপ্রাণী যেমন কালো ভালুক, চিতা, সিংহ ,ববক্যাট, পাইথন, কুমির এরাও সহ অবস্থান করে এখানে।
উঁচু ঘন গাছ গুলো ছড়ানো এবং বিস্তৃত হতে থাকল ঘন সবুজ চারপাশ। গাছের ডালে ডালে নানা রকমের পাখি। চেনা ঘুঘু মাছরাঙ্গা কাঠঠোকরা ছাড়াও। ক্রেন, চিল, কাক রোজ স্পুন বীল এত্ত সুন্দর সাদায় মেশানো গোলাপি রঙের এই পাখিটা। আরো যে কত নাম না জানা পাখি। তাদের রাজত্বে তারা আপন মনে ডাকাডাকি করছে বিচরণ করছে। রাস্তার পাশে খালের মতন জল, কখনো রাস্তার পাশাপাশি চলছে। কখনো ঘন গাছের ভিতরে পানি দেখা যাচ্ছে । আবার কখনো জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যেন নদী বয়ে যায়। অপূর্বসব দৃশ্যপট। জলের মাঝে এ্যালিগেটর । জলের উপরেও রোদ পোহাচ্ছে। গাছের মঝে পাখির বাসা থোকা থোকা দেখা যায়। আর দেখা যায় কত্ত রঙ বেরঙের ফুল ফুটে আছে। গাছে গাছে অসংখ্য অর্কিড আপন মনে বিস্তার লাভ করছে। ফুল ফুটাচ্ছে। আমার ফার্মের মোরগের মতন অর্কিড না। শত যত্নেও যাদের ফুল ফোটে হঠাৎ কখনো। আহা প্রকৃতির কি অপরূপ লীলাভূমি।
যদি মনে করেন সুন্দরবনের ভিতর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন তাহলে কেমন মনে হবে। অনুভুতিটা তেমনই হলো গাড়ি আর নৌকায় চলার পার্থক্য বাদে।
এক সময় আমরা গেটর এলাকায় থামলাম। এখানে আরো কিছু ভিজিটর আছেন। কিন্তু প্রাণীদের ডির্স্টাব না হয় তাই সবাই চুপচাপ প্রাণীরা যা করছে তাদের তা করতে দিয়ে। শুধু নিরবে চোখের দেখা। প্রাণীরা শব্দ করছে নিজের মতন। পাখিরা পাশাপাশি বসে আছে ভয়হীন। প্রাণীদের বিরক্ত করা বা খাওয়ানো নিষিদ্ধ।


অনেকে ট্রেইল ধরে হাঁটতে পছন্দ করেন। আর অনেকে কায়াকে চড়ে ঘুরে আসেন। একা একা জলাভূমির ভিতর যেদিকে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত আছে সেখানে। আর অনেকে পানিতেও নেমে যান হেঁটে জঙ্গলের ভিতর ঢুকেন। এদের সাহসের প্রসংসা করতেই হয়।

এখন যাচ্ছি তিন দিকে সাগর দিয়ে ঘেরা আমেরিকার মধ্যবর্তি অংশের যে চিকন লেজের মত ভূমির শেষ প্রান্ত সাগরে মিশে গেছে সেখানে। উত্তর আমেরিকার মাঝখানে যে জায়গাটি পানি ছুয়ে আছে দক্ষিণে তার নাম হলো কী ওয়েস্ট।
অনেকদিন থেকেই ভূমির সেই শেষ প্রান্তে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। ফ্লোরিডায় কী, নামে অনেকগুলো দ্বীপ মিলে এই কী ওয়েস্ট। উত্তর আমেরিকার ভূমির শেষ প্রান্ত।
দুই মাইল আর চার মাইল বিস্তৃত এই দ্বীপটি গালফ অফ মেক্সিকো, আটলান্টিক মহাসাগর ফ্লোরিডা উপসাগর দিয়ে ঘেরা।
উত্তর থেকে দক্ষিণের চার মাইলের মধ্যে বেশ কয়েকটি কী যাদের বিভিন্ন নাম আছে। কিন্তু আশেপাশে ছড়িয়ে আছে সতের হাজার দ্বীপ। যার মোটামুটি সবগুলোই ব্রিজ দিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। দু একটা যেখানে যেতে হয় নৌকা দিয়ে ।
যেতে হচ্ছে খুব ধীরে রাস্তার গতিসীমা অল্প । এদিকে পুলিশ পাহারাও অনেক বেশি তারপরে রাস্তার কয়েক জায়গায় কাজ হচ্ছে সেখানে থেমে থাকতে হলো অনেকটা সময়। তাতে সমস্যা নাই দুই পাশের দৃশ্য এই অপেক্ষার সময় পুষিয়ে দিচ্ছে তাদের ভালোবাসা দিয়ে।
এখন যাচ্ছি বিগ সাইপ্রেস এলাকা ধরে। এদিকের পুরোটাই সংরক্ষিত অঞ্চল। প্রাণী এবং উদ্ভিদের জন্য।পানি এবং জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ, গুল্ম, লতা সব কিছুই ভূীম পরিবেশ বিজ্ঞানীরা নানা ভাগে ভাগ করে যেমন আছে তেমন থাকতে দিচ্ছেন। আবার বিপন্ন সব প্রাণীকুল থেকে উদ্ভিদের লালন পালন করা হচ্ছে এই এলাকায়। উনত্রিশটি রির্জাভ, ওয়াল্ডলাইফ এবং পার্ক সুরক্ষিত ভূমি রয়েছে ফ্লোরিডায়। এভারগ্লেডস, বিগ সাইপ্রাস এই এলাকাটা বিশাল। পূর্ব দিকেও অনেক গুলো সংরক্ষিত এলাকা দেখে এসেছি।


বিগ সাইপ্রেস জলাভূমি আর এভারগ্লেডস, ওকিচোবি হ্রদের ওভারফ্লো জলের ধারা দিয়ে সৃষ্ট এলাকা। ধীর গতিতে প্রায় দশ হাজার বছর ধরে তৈরি হওয়া এই ভূমি অঞ্চল। এবং খুব অগভীর জলাসয়। বিগ সাইপ্রেস জলাভূমির জল বৃষ্টির জল। দুটোই জলাভূমি। কিন্তু এসব নানা ভাগে চিহ্নিত করেন ভুমি বিজ্ঞানীরা। সংরক্ষণ করা হয়। অনেক কিছু প্রকৃতির ক্ষতি হবে বলে স্পর্শ করা হয় না। এই সব ভূমিকে খুব যত্নের সাথে সংরক্ষণ করা হয়। আর সাথে এখানের জীব বৈচিত্রকেও রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জঙ্গল, জলাভূমি এলাকা মাঝ দিয়ে রাস্তা, খুব অল্প সংখ্যাক গাড়ি পার হয় এই রাস্তা দিয়ে। পুরো রাস্তায় দশ বারোটার বেশি গাড়ি দেখি নাই আসা যাওয়া দুই পথ মিলিয়ে। বিশাল এই অঞ্চল জুড়ে শুধু ওয়াইল্ড লাইফ রির্জাভ, রিফিউজী।, ন্যাশনাল পার্ক এমন নানান নামে কয়েকটা অঞ্চল আছে। বিপন্নপ্রায় প্রাণী আর উদ্ভিদ এই সব সংরক্ষিত এলাকায় নতুন করে বিস্থার লাভ করছে। সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা অ্যানিমাল রিজার্ভ বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে সিংহ, বাঘ, চিতাবাঘ এবং কুগার, বড় বিড়াল এবং বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসাবে কাজ করছে।



বড় বড় গাছের ঘন পরিবেশগুলো হঠাৎ করে সরে গেল, ঘাসের জলাভূমি দুই পাশে বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ মনে হয় যেন জল ভরা ধান ক্ষেত ।বড় কোন গাছই নেই এখন আর পুরোটাই ঘাসের জমি এবং গাছের ভারে ঘন হয়ে আসা রাস্তা হঠাৎ করে বড় বেশি ফাঁকা হয়ে গেল। খোলা দিগন্ত চারদিকে জলাভূমির ওপাড়ে।
এভারগ্লেডের জলাভূমি, ঘাসের জমি আর জলে ভরা ভূমি অনেকটা সময় ধরেই পার হতে হল বদলে যাচ্ছে প্রকৃতির দৃশ্য এক এক সময় এক এক রকম।
দক্ষিণ-পশ্চিমের এই জায়গাটা পুরোটাই এভারগ্লেড আর বিগ সাইপ্রেস অঞ্চল সবুজ আর জীবজন্তুর বাসভূমি। তার ভিতর আছে ট্রাইভদের বাসও।
আদি আমেরিকান উপজাতিরা এক সময়ে ফ্লোরিডা উপদ্বীপকে বাড়ি বলে অভিহিত করেছিল। কয়েক শতাব্দীর উপনিবেশ ছিল, এখন শুধুমাত্র দুটি ফেডারেল স্বীকৃত উপজাতি দক্ষিণ ফ্লোরিডায় রয়ে গেছে। ফ্লোরিডার সেমিনোল ট্রাইব এবং ফ্লোরিডার ইণ্ডিয়ান মিকোসুকি উপজাতি।
বর্তমানে ফ্লোরিডার সেমিনোল ট্রাইভের প্রায় তিন হাজার সদস্য রয়েছে উপদ্বীপ জুড়ে ছয়টি রিজার্ভেশনে। এরা বাস করে: হলিউড, বিগ সাইপ্রেস, ব্রাইটন, ফোর্ট পিয়ার্স, ইমোকালি এবং টাম্পা। নেটিভ আমেরিকান হেরিটেজ এবং মিকোসুকি |
মিকোসুকি ইণ্ডিয়ান ট্রাইভ ভিলেজ। নেটিভ আমেরিকান হেরিটেজ ওকিচোবি হ্রদের কাছে মিকোসুকি উপজাতির বাস। মিকোসুকি উপজাতীদের সাথে দেখা করার জন্যওদের গ্রামে ঢুকে পড়লাম।। ওখানে ওদের বাড়ি ঘর গুলো উঁচু তার দিয়ে ঘেরা। যে কোন সময় প্রাণীরা ঘরে না ঢুকতে পারে তার জন্যই এর ব্যবস্থা। চলার পথে অনেক সময় দেখা হয় তাদের বন্যপ্রাণীর সাথে। পোষা প্রাণীর মতনই মনে করে তারা বনের প্রাণীদের। বন্যরা বনে থাকে ওদের মতো, মিলেমিশেই এই মানুষরা থাকে প্রাণীদের সাথে।
ট্রাইভ ভিলেজ যাদুঘরে, কুমিরের সাথে যুদ্ধরত ভাস্কর্যটা দেখলে বোঝা যায় প্রাণীর সাথে যুদ্ধ করেই তারা এ জীবন কাটিয়েছে । শিকারী ছিল তারা পাকা। এই জীবনযাপন তাদের ভালোলাগা শহরের অনেক কিছু এখানে নাই তাতে কোন সমস্যা নাই, তারা প্রয়োজনে কেনাকাটা করতে নেপলসে যায় যদিও একটু দূর কিন্তু এই বন্যদের সাথে থাকতেই ওরা পছন্দ করে। এখন পর্যটকদের প্রকৃতি দেখানের কাজ করে অনেকে। জঙ্গলে এবং পানির মধ্যে নিয়ে যায় প্রাণী দেখাতে। বিশেষ উৎসব আয়োজনে কুমিরের সাথে খেলা দেখায়। আমরা সব কিছু চুপচাপ পেলাম। কোন বিশেষ আয়োজন ছিল না।

সামনে সাজানো ট্রাইভ মার্কেট দেখলাম, উপজাতির সমৃদ্ধ এবং সৃজনশীল সংস্কৃতি যেমন থাকে সব জায়গায় । উপজাতি সদস্যদের ঐতিহ্যগত দক্ষতায় তৈরি পুতুল, পুঁতির কাজ, প্যাচওয়ার্ক এবং ঝুড়ি বোনা, হাতের তৈরি জিনিসপত্র,হ্যাট, অলংকার পোশাক।
আমি একটা জিনিস খেয়াল করেছি আদিবাসীদের কাজের মধ্যে জ্যামিতিক ফর্ম এর ব্যবহার খুব বেশি এবং তারা খুব উজ্জ্বল রং ব্যবহার করে। নানা রঙের কি সুন্দর নকশা । পশুর চামড়া আর পাখির পালক খুব ব্যবহার করে, নানা ধরনের হাতিয়ার তৈরি করে যা দিয়ে তাদের যুদ্ধ করে বাঁচতে হতো একসময় তারই প্রতিকৃতি।



মার্কেট দেখার পর খুব বেশি কিছু দেখার নেই গ্রামের ভিতর দিকে কিছুটা ড্রাইভ করে তারপরে আবার ফিরে এলাম ভেবেছিলাম পথে হয়তো পান্থার বা চিতার সাথে দেখা হবে কিন্তু তেমন সুযোগ মিললো না। হয়তো গাছের আড়ালে ঘাসের জঙ্গলে লুকিয়ে ছিল কুমিরের মতন সামনে এসে রোদ পোহাচ্ছিল না তাই চোখে পরল না। অদ্ভুত ধরনের গিরগিটির মতন প্রাণী দেখলাম। যাদের পিঠের উপর শক্ত খোলস আর লম্বা লেজ। আর ছিল খরগোশ, কাঠবেড়ালি নির্ভিক পথ চলা।
ওকালোয়াকুচি ওয়াল্ড লাইফ, এভারগ্লেডস ন্যাশনাল পার্ক হল বেশ কিছু বিপন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির আবাসস্থল। এর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত কিছু হল ফ্লোরিডা প্যান্থার, আমেরিকান ক্রোকোডাইল, আমেরিকান অ্যালিগেটর, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান মানাটি, উড স্টর্ক এবং স্নেইল কাইট।
এলাকাটা খুব বেশী পুলিশের পাহাড়া । এত পুলিশ অন্যদিকে দেখি নাই। প্রাণীদের স্পর্শ করলে অনেক ফাইন দিতে হয়।

বদলে যাচ্ছে পরিবেশ একটু পর পর। একসময় ৪১ নাম্বার রাস্তাটা শেষ হয়ে গেল পূবের দিকে ঢালুতে নয়শ সাতানব্বইর সাথে মিশলো এখান থেকে আমরা সোজা দক্ষিণে নেমে যাব দক্ষিনের শেষ প্রান্তে কী ওয়েস্টে।
একশ এগার মাইল চলার এই স্মৃতিটি একদম অন্যরকম। দারুণ এক স্মৃতি হয়ে রয়ে গেলো এই চলাটা। পশ্চিম থেকে পূবে চলে এলাম।
পূবের দিকের হাইওয়েতে ওঠার আগে আমরা একটু থেমে গেলাম। জিরিয়ে নেওয়ার জন্য খুব বেশি দূর চলা না হলেও ধীরে ধীরে চলার জন্য গাড়িতে বসে থেকে হাত পায়ে খিল লেগেছে একটু নড়াচড়া দরকার।
একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে বাইরে পাতা টেবিলে বসলাম। উত্তাপ বড়ই সহনশীল এখানে শীতের সময় এমন আরামদায়ক উষ্ণতা থাকে গ্রীষ্মকালে অবশ্য অনেক গরম থাকে।
সার্ভ করতে আসা লোক আমাদের দেখে অবাক হল। তোমরা কোথা থেকে এসেছ কৌতুহল থেকে জিজ্ঞেস করে ফেলল । ভেবেছিল আমরা স্প্যানিশ বা মেক্সিকান আমাদের চেহারা এমনই মিলেমিশে থাকে পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর সাথে। ট্রাইবদের সাথেও মিলে যায় কখনো। আমাদের আসল অরিজিন কি কে জানে। ওর সাথে হাসাহাসি হলো তার দূর সম্পর্কের সিস্টার অনেকদিন পর দেখা, অনেক দূর থেকে এসেছি, ফ্রিতে খাওয়ানো হোক এইসব বলে। সে সত্যি সত্যি আমাদের চকলেট উপহার দিল। তাকেও ছোট একটি স্যুভিনিয়র দিয়ে এলাম দেশি।
খাওয়া-দাওয়া করে শরীর টানটান করে আবার রওনা হলাম দক্ষিণের পথে আরো একশ ত্রিশ মাইল যেতে হবে। গতি সীমা পঞ্চান্নর মধ্যেই চলতে হবে। রাস্তায় ভীড় তেমন একটা নাই আমাদেরও তাড়াহুড়া নাই দেখে শুনেই তো যাবো।

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:৪৮
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খালেদা জিয়ার মৃত্যু রাজনীতির মাঠে বিরাট শূন্যতা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৯

 
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া এক উল্লেখযোগ্য চরিত্র। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির টালমাটাল পরিস্থিতিতে তিনি দলটির হাল ধরেন। সেনানিবাসে গড়ে উঠা দলটাকে রাজপথে বেড়ে উঠতে গৃহবধূ থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

"তোমরা জানাযা করে দ্রুত লাশ দাফন কর।"

লিখেছেন এমএলজি, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:৩০

রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "তোমরা জানাযা করে দ্রুত লাশ দাফন কর।" বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় এ কাজটি করা হয়নি বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যাচ্ছে।

বিষয়টি সত্য কিনা তা তদন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যক্তি বেগম খালেদা জিয়া কেমন ছিলেন?

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৪

ব্যক্তি বেগম খালেদা জিয়া কেমন ছিলেন?

ইয়াতিমদের সাথে ইফতার অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়া, ছবি https://www.risingbd.com/ থেকে সংগৃহিত।

তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্ত্রীও তিনি। তাকেই তার বৈধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বছরশেষের ভাবনা

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৮


এসএসসি পাস করে তখন একাদশ শ্রেণিতে উঠেছি। সেই সময়ে, এখন গাজায় যেমন ইসরাইল গণহত্যা চালাচ্ছে, তখন বসনিয়া নামে ইউরোপের ছোট একটা দেশে এরকম এক গণহত্যা চলছিল। গাজার গণহত্যার সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

উৎসর্গ : জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP)

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৮



খিচুড়ি

হাঁস ছিল, সজারু, (ব্যাকরণ মানি না),
হয়ে গেল “হাঁসজারু” কেমনে তা জানি না।
বক কহে কচ্ছপে—“বাহবা কি ফুর্তি!
অতি খাসা আমাদের বকচ্ছপ মূর্তি।”
টিয়ামুখো গিরগিটি মনে ভারি শঙ্কা—
পোকা ছেড়ে শেষে কিগো খাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×