somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রভু ! বারবার নষ্ট হয়ে যাই !

২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবি নেট । চিত্র শিল্পী ক্যাথরিন লা রোজ।

জুম্মার দিনে কত জনে পাঞ্জাবি আতর সুবাস লাগাইয়া মসজিদে যায়। আমি জিন্স আর গোল গলার গেঞ্জি। একবার চোখে সুরমা দিছিলাম। দেখি নানু দিচ্ছে চোখে। তাঁর দেখাদেখি আমিও। তখন কলেজে পড়ি বহুদিন আগের কথা ! সুরমা দেয়ার পর আয়নায় নিজেরে দেখি কেমন জানি অচেনা। কিছুটা মেয়ে মেয়ে লাগছে ! এরপর আর ঐ জিনিস চোখে উঠেনি।

মসজিদের কাছেই দেখি অনেক ভিক্ষুকদের ভীড়। এত ফকির দেশে ! ইসলামে হালাল নিকৃষ্ট কাজের ভেতর এক হইল শক্তি থাকতে ভিক্ষা করা আর বউ তালাক !

অবশ্য প্রথম কাজটি কোন সাহাবী করেন নি তবে দ্বিতীয় কাজটি করেছেন ! যাক সে নিয়ে আজ কিছু বলছি না।

এদিকে আমাদের নেতাদের কথার তোদনে দেশে টিকা থাকা দায় ! দেশ নাকি হংকং, মালয়েশিয়া ! চামড়ার মুখ তার উপর নাই ট্যাক্স তাই উনারা বলে যান।
যাক সেসব ঠেলেঠুলে মসজিদে প্রবেশ করলাম। দেখি মুসল্লি মাশা আল্লাহ খারাপ না ! জুতা জোড়া খুব কাছেই একটা কাঠের বাক্সে রেখে দিলাম আর সতর্ক দৃষ্টি রাখলাম যাতে গায়েব না হয়ে যায়!

এদিকে হুজুর খুতবা দিচ্ছে সমাজে ইসলামের কতটা দরকার এর উপর। আমি জুতা মোবারক নিয়া চিন্তায় মগ্ন ! ভাবা যায় উপাসনালয়ে এসব পার্থিব চিন্তা ! ছিঃ ! মনরে কড়া শাসানি দিলাম কিন্তু বেশী কাজ হলো বলে মনে হয় না।

ভাবলাম দেশের একটা শ্রেণী উপাসনালয় থেকে জুতা চুরি করে নিজেদের টিকিয়ে রাখছে আর সরকার উন্নয়ন এর ফিরিস্তি দিয়ে বেড়াচ্ছে !

আচ্ছা, গনিকালয় থেকে কি জুতা চুরি হয় ? হলেও তো কেউ বলবে না। যেখানে চরিত্র সতীত্ব খোয়া যায় সেখানে জুতা তুচ্ছ !

আমার সেই অভিজ্ঞতা নাই তবে একবার হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ছিলাম মায়ের হার্টে ব্লক ধরা পড়েছিল তখন। সে সময় নতুন কোলা পুড়ি চপ্পল জোড়া হারিয়েছি। পরে রাত্রের বেলা খালি পায়ে বাসায় ফিরি।

এমন সময় জোরে সবাই আমিন বইলা চিল্লান দিল আমিও দিলাম। দিতে হয় হুজুররা এসব আমিন, শেয়ার, লাইকের ব্যবসায় খুব ভরসা করছে ইদানীং ! মুসলিম জনতা দেশে কম থাকলে এ দেশের হুজুর সম্প্রদায় না খেয়ে দিন যাপন করিত ইহা সত্য !

খুতবা শুনতে শুনতে ঝিমিয়ে পড়ছি চোখ মেলে রাখার খুব চেষ্টা করছি মাগার কাজ হচ্ছে না। হবে কেমনে রাইত ভইরা নেটফ্লিক্স এ Idris Alba অভিনীত " The harder the fall " মুভি দেখলে। অবশ্য আমি কিতা করতাম প্রতি বৃহস্পতিবার রাইত আমার চান রাইত ! শুক্রবার দিন এর বেশি অংশ যায় ঘুমাইয়া আর রাইতে সেই নেটফ্লিক্স ! এই আমার উইক এন্ড বা জুম্মা দিন !
যাক এই হালকা তন্দ্রাঘোরে দেখলাম, আমি কোথায় জানি যাচ্ছি। সামনে দাঁড়িয়ে একটা লোকাল বাস। বাসে উঠে দেখি যাত্রী আমি আর আরেকজন নারী ! আর কেউ নাই। চালক নাই। নারী যাত্রী খুব আগ্রহ নিয়ে আমাকে দেখছে আমিও তাকে। ধীরেধীরে কাছে গিয়ে তার অনুমতি নিয়ে পাশের সিটে বসলাম। তার নাম জিজ্ঞেস করাতে বলল, আসল নাম মানসুরা তবে সার্টিফিকেট অনুযায়ী নাজমা !

আমি অবাক হইনি এ দেশে বহু রথী-মহারথী আছেন যাদের জন্মদিন দুই তিনটা !

কোথায় যাবেন জিজ্ঞেস করাতে বলল দৌলতদিয়া। আমি বললাম বেড়াতে বুঝি? উনি হেসে বললেন, আরে না এই যে সরকার সার্টিফিকেট দিছে ! কাম কইরা পেট পালার। সেই কামে যাইতাছি।

আমি কইলাম দেখতে পারি সার্টিফিকেট ? উনি কাগজটি হাতে দিলেন। কাগজটি নিয়া যা দেখলাম তাতে চোখ বড় শ্বাস দ্রুত ! মানে সারা জীবন যোনী ভাড়া দিয়ে যাবেন সেই লাইসেন্স !

এমন সময় পাশেরজন ঠেলা দিয়ে বলল, ভাই ! দাঁড়ান জামাত শুরু হবে। আমি হুম বলে দাঁড়াতে লাগলাম। হুজুর বলছে, " কাতার সোজা করেন। মোবাইল সাইলেন্ট করেন ! " এর মাঝে একজনের মোবাইলে একটা জনপ্রিয় হিন্দি গানের রিং টোন বেজে উঠলো ! বাঙালী মানুষ হইল না !

নিয়ত বাঁধতে বাঁধতে কবি শক্তি চট্রোপাধ্যায় এর মতন বারবার বিরবির করে বলতে লাগলাম,

" প্রভু ! নষ্ট হয়ে যাই
  বারবার নষ্ট হয়ে যাই
  অধম তোমার মাফ ক্ষমা ভিক্ষা চাই
  প্রভু ! বারবার নষ্ট হয়ে যাই !  "
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:০৬
১২টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×