" আল কুরআনের আলো ঘরে ঘরে জ্বালো " কি সুন্দর একখান কথা হুজুর গন খুব জোরেশোরে প্রচার করেন কিন্তু আমার প্রশ্ন কেন এই কথা?
ঘরে ঘরে বলতে কি অন্য ধর্মের যারা দেশে বাস করছেন তাদের ঘরেও কি? নাকি শুধু মুসলিমদের ঘরে? তাহলে কি দেশের ৯০ ভাগ মুসলিম এখনো অমুসলিম ?
দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর এর মধ্যে দেশে ইসলাম কি প্রতিষ্ঠা পায়নি ?যেখানে ঘরে ঘরে আল কুরআন আর হাদিসের বই রয়েছে।
আসলে এ শ্লোগান দিল কারা ? এ শ্লোগান কিন্তু বাংলাদেশ জন্মের সময় ছিল না। এ দেশ জন্মের সময় সবার দাবি ছিল সকল ধর্মের বর্নের সকলের একটা দেশ হবে যেখানে হানাহানি থাকবে না। সবাই শান্তিতে থাকবে এমন।
৫০ বছর পর কি দেখছি? কে কাকে মেরে উপরে উঠবে বা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকবে এই নিয়ে যত ধরনের ইতরামি করা যায় তার নমুনা এবং কার্যক্রম।
ধরেন, একটা উদাহরণ আর কি। আপনার পায়ে ঘা। আপনি দাওয়াই বা প্রতিকার নিলেন না। এখন মাঠে নেমে গেলেন দৌড় দিতে তা কতদূর যেতে পারবেন পায়ে ঘা আর টনটনে ব্যাথা নিয়ে খুব বেশীদূর নয়।
শেষমেশ ডাক্তার এর কাছে গেলেন। ডাক্তার বলে দিল পচন ধরে গেছে। পা কেটে ফেলতে হবে ! এখন বুঝছেন কাহানী ?
হুজুর গন এমন পচন ধরা পা নিয়ে দৌড়াতে চাচ্ছে যার কারণে ইসলাম কায়েম হচ্ছে না দেশে। কেন হচ্ছে না চলেন একটু খোঁড়াখুঁড়ি করি। অবশ্য খোঁড়াখুঁড়ির আগেই বলে রাখি এ দেশের সমস্যা গুলি সেই পুরান ঢাকার বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে লাগানো নানান তারের গিটটুর মতন। একটা খুলবেন দশটা নতুন করে লাগবে। দুইটা বিষয় নিয়ে আজকে কথা বলতে যাচ্ছি।
দেশে মোট ১২ লাখ ১৭ হাজার ৬২ জন সরকারি চাকরিজীবী রয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে ২৯০ জন কর্মকর্তা বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
( দৈনিক যুগান্তর )
আর বেসরকারি চাকুরীজীবির সংখ্যা আরও বেশি।
এখন দেশের এমন কোন সেক্টর নাই যেখানে ঘুষখোর নাই। প্রতিটা দপ্তরে আছে। এমন কোন প্রতিষ্ঠান নাই যা ঘুষখোর মুক্ত !
এদের সংখ্যা ও কম নয়। কোনদিন দেশে দেখলাম না হুজুরগন এসব ঘুষখোর, দুর্নীতি বাজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে বা তাদের শাস্তি দাবি করছে ?
এর পর আসি ৯০ ভাগ মুসলিম দেশে কয়জন ঠিকঠাক যাকাত আদায় করেন ? অনেকের যাকাত আসে কোটি টাকার উপরে যাকাত হিসেবে বিলি করে সস্তা কিছু কাপড়, লুংগি। তাও আনতে গিয়ে অনেকে মারা যায় ! যা খুবই দুঃখজনক ।
হুজুরগন কখনো সঠিক যাকাত আদায়ের জন্য কোন আন্দোলন করেননি এবং যারা যাকাত ফাঁকি দিচ্ছেন তাদের কে যেন দেশের প্রচলিত আইনে সাজা দেয়া যায় সেজন্য সরকার কে চাপ দিতে ও দেখি না । কেন করছেন না হুজুরগন ? দেশের প্রধানমন্ত্রী তো মুসলিম। তাহলে সমস্যা কিসে ?
এখন চলেন খোঁড়াখুঁড়ি থামাই। নইলে এমনে খুঁড়তে থাকলে দেখা যাবে নিজের অজান্তে নিজেই হাপিস হয়ে গেছি অথবা পুরা দেশ !
আসলে হুজুরগন যা বলেন বেশীরভাগ লোক দেখানো পাবলিসিটির জন্য। এসব না বললে শীতের সময় খেপ মারতে পারবে না। দেশের শীত মানে হুজুরদের কুদাকুদি আর পুরুষদের বিয়ে - শাদি !
হুজুর রা আল্লাহ এবং রাসুল সাঃ কে বিক্রি করা শুরু করেছেন তাই কিচ্ছু হয়না মানে ইসলাম কায়েম।
এই যে পবিত্র কুরআনে বর্নিত ২৫ জন নবী রাসুলের কথা বলা আছে। কেউ বলতে পারবেন আল্লাহর বাণী প্রচার করতে যেয়ে অর্থকড়ি চেয়েছেন এমন প্রমাণ আছে? নাই। অথচ আমাদের হুজুরদের দেখেন এদের পয়সা ছাড়া আপনে মরে গেলেও আল্লাহর বাণী প্রচারে পাবেন না।
আসলে এ দেশের মানুষ খুব বেশী আবেগী তার উপর যদি আল্লাহ রাসুলের কথা হয় তাইলে সাত খুন মাফ! এখন আপনে জামাতি চাপাতি হোন বা আল বদর, আল সামস !
হুজুরদের ধান্ধা পরের বাড়িতে সারা বছর দাওয়াত খাওয়া, কেমনে মাগনা হেলিকপ্টারে করে ওয়াজ করা যায় এই সকল।
আপনি সমাজে এত ঘুষখোর, সুদখোর, দুর্নীতিবাজ রেখে তাদের শাস্তি না দিয়ে ঘরে ঘরে আল কুরআনের আলো জ্বালিয়ে ফেলতে চান ! সত্যিই হাস্যকর।
আসলে আপনারা চান সোজা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেয়ে তারপর ইসলাম কায়েম করতে। বেকুবের দল! আর এজন্য আগুন সন্ত্রাস, গাছ কাঁটা, জনগনের ভেতর মারামারি লাগিয়ে রাখেন। ফালতু রাজনীতি !
আচ্ছা, জামাতি চাপাতি ইসলামি দল বলে নিজেদেরকে দাবি করে এরা তো বহুদিন ক্ষমতায় ছিল তা ইসলাম এর কতদূর কায়েম করছে ?
তারা ক্ষমতায় থাকতে তারেক খাম্বা লাগিয়ে অর্থকড়ি বানায় ! উনারা মুখে কুলুপ কেটে ফিনফিনে জর্জেটের শাড়ী পড়া মাওলানা কে মাঝে রেখে নানান শরবত পান করে ইসলাম কায়েম করে। এই তাদের ইসলাম !
শেষ করছি এই বলে যে, হুজুরগন আল্লাহ এবং রাসুল সাঃ কে বেঁচা শুরু করছে বলে ৫০ বছরে ও দেশে ইসলাম কায়েম হয় নাই সামনে আরও ১০০/১৫০ বছরে হবে না দেখছি। বড্ড আফসোস !
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০২২ ভোর ৪:০২