somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ ভুবনমোহিনী

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(১)

- আপনি চাইলে সিগারেট ধরাতে পারেন,
- ধন্যবাদ, আপনিও চাইলে আমাকে সঙ্গ দিতে পারেন,
- আপনি কিভাবে বুঝলেন যে আমি.....
- সিগারেটের ধোয়ায় শুধুমাত্র তারাই অস্বস্তিবোধ করেনা যাদের এটার অভ্যাস আছে। আপনার সিগারেটের অভ্যাস না থাকলে দুই মিনিটের বেশি একজন স্মোকিং করতে থাকা মানুষরে সাথে বসতে পারবেন না!
- পাবলিক প্লেসে একটা মেয়ে হয়ে....
- আমার ধারণা, আপনি এসব বিষয় গায়ে মাখেন না। গায়ে মাখলে আপনার সংসার টিকে থাকতো, আপনি আপনার ক্লায়েন্ট বা রোগীদের সুস্থ করে তুলতে চান, এবং এজন্য ওদের আলাদাভাবে সময় দেন, যেমনটা আমাকে দিচ্ছেন। এর কারণে লোকমুখে প্রচলিত কথা থেকেই আপনাদের দাম্পত্য জীবনে ঝামেলা শুরু হয়।
- আপনি অনেক বুদ্ধিমান লোক আনসারি সাহেব।
- আমি এখন যে কথাগুলো বললাম, সেটার জন্য খুব বুদ্ধিমান হওয়া লাগে না ম্যাডাম, এগুলো আমাদের সমাজের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, পার্ট অফ ওই কি বলে, সমাজ। চিরাচরিত প্যাটার্ন।
- তা ঠিক বলেছেন,

আনসারি সাহেব একজন সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে কাউন্সেলিং করাচ্ছেন দুই সপ্তাহ ধরে। শারিনের পরিচিত। বেশ কিছুদিন ধরেই আনসারি সাহেবের সমস্যা হচ্ছে। ভুলে যাচ্ছেন, কথার খেই হারিয়ে ফেলছেন। সেদিন শারিনকে শরিফুল ডেকে ফেলেছিলেন, নিচতলার চায়ের দোকানের ছেলেটাকে ডেকেছিলেন শারিন। আর এতেই শারিনের ভয় বেড়ে গেছে। জোর করে একদিন নিয়ে আসে সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে।

সাইকিয়াট্রিস্ট ৪৪ বছর বয়সী শুহরাত তিসি, উনার চেম্বার ঢাকার বসুন্ধরার এক কমার্শিয়াল স্পেসে। সারাদেশেই উনার বেশ নামডাক আছে। দেখতে অসাধারণ রূপবতী। প্রথম দেখায় আনসারি সাহেবের মনে যে কথাটা এসেছিলো, সেটা হলো এ মেয়ে নির্ঘাত অন্য ভুবনের কেউ।

প্রথম দেখাতে আনসারি সাহেব হচকচিয়ে গিয়েছিলেন, কি বলবেন উনাকে? আনসারি সাহেবের সমস্যা কি উনি নিজেই তো জানেন না, কলেজে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় মাথা কিছুটা কাজ করছে না, শারিন তাকে নিয়ে চিন্তিত বলেই এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। পরে ড. তিসি উনাকে ধীরে ধীরে চেম্বারের বাইরে সময় দিয়ে ইজি করিয়ে কাউন্সেলিং করানোর চেষ্টা করছেন।
"কি হলো কি ভাবছেন? খাবারটা ঠান্ডা হয়ে গেলো তো!"

কথায় বাস্তবে ফিরে আসলেন আনসারি সাহেব, "দেখুন তিসি ম্যাডাম, শারিন বড় হলেও বাচ্চা মেয়ে। সে আমাকে নিয়ে ভুল বুঝেছে। আমি কলেজের অতিরিক্ত কাজের চাপে একটু প্রলাপমতো বকেছিলাম, সেটাকে মানসিক সমস্যা বলা যাবে না। তাছাড়া আমি অত্যন্ত দরিদ্র লোক, আমার পক্ষে আপনার ফী পরিশোধ করা সম্ভব নয়, ইতিমধ্যেই আপনার যে কয়টে টাকা প্রাপ্য হয়েছে, সেগুলো আমি কিভাবে পরিশোধ করবো তাই ভাবছি।"

ড. তিসি হাসলেন। আনসারি সাহেবের মনে হলো হাসিটা একটা প্রেজেন্টেশন হলে তিসি ম্যাডামের হাসিকে নিট এন্ড ক্লিন প্রেজেন্টেশন বলা যাবে। মানুষের হাসিও এতো সুন্দর হয়!

- আনসারি সাহেব, আপনার ওই সমস্যা না, আপনি আপনার অতীতকে খোঁজার চেষ্টা করছেন, অথচ অতীতের কোনও ক্লুই আপনার কাছে নেই। আর একারণেই অতীত নিয়ে ভাবতে ভাবতে মাথা জট পাকিয়ে যায়। আপনার মুল সমস্যা ওটাই।
- শারিন মেয়েটার আমার ব্যাক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলা উচিত হয় নি।
- ১০০ ভাগ ঠিক হয়েছে। আনসারি সাহেব, আপনার চিন্তা করার ধরণ আমার পছন্দ। আপনার মনস্তত্ত্ব আমার কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে। আপনার বাচ্চা অন্তর্ধানের কেসটা আমি পত্রিকায় পড়েছি, শারিনের কাছেও টুকটাক কিছু শুনেছি। ওকেই আমি বলেছিলাম আপনাকে কনভিন্স করতে, আনসারি সাহেব, প্লিজ। ফিরিয়ে দিবেন না। আপনি আপনার ব্যাক্তিগত জীবনে কাওকে জড়াতে চান না জানি, কিন্তু তারপরও একবার ভাবুন, আপনি অথৈ সাগরে ভাসছেন, একটা অবলম্বন পেলে মন্দ হয় না।
আনসারি সাহেব হাসলেন এবং অবাক হলেন। আনসারি সাহেব যে হাসতেও জানেন, সেটা উনি এই প্রথম বুঝতে পারলেন। "ম্যাডাম, বাচ্চা অন্তর্ধানের বিষয়ে পত্রপত্রিকাগুলো বাড়িয়ে লিখেছে, তাদের মতে আমি সম্ভাবনার অংকের দৈবচয়নে খুনিকে খুজেঁ বের করেছি, কিন্তু না। আমি খুজেঁ বের করেছি প্রয়োজনীয় উপাত্তকে কাজে লাগিয়ে।", আনসারী সাহেব বললেন।
"শারিন মেয়েটা বলে আপনাকে হাসতে দেখতে খুব শখ! দুর্ভাগ্যবশত ওর জায়গায় আমি এই অসাসধারণ মুহুর্তের স্বাক্ষী হলাম!", ড. তিসি বললেন।
- তাই!
- জ্বি।
- তিসি ম্যাডাম, গবেষণামূলক কাজে আমি কখনো নিরুৎসাহিত করি না। আপনি আমার মনস্তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করতে চাইলে আমার কোনও আপত্তি নেই, কিন্তু প্লিজ আমাকে সাইকিয়াট্রিস্ট হিসেবে ট্রিট করবেন না, শুধুমাত্র এই একটা অনুরোধ!
ড. তিসি আরেকটি 'নিট এন্ড ক্লিন' হাসি হেসে বললেন, "আচ্ছা।"

(২)
আনসারি সাহেব সেদিন সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ড. তিসির সাথে ঘুরেছেন, গল্প করেছেন। বাসায় এসেই মাথা ঝাড়া দিচ্ছেন বারবার।
"কেন আমি ড. তিসির সাথে ওভাবে কথা বললাম! কেন? ওর হাসিটা আমার ভালো লাগলো কেন? ওর সাথে কাটানো প্রতিটা মুহুর্ত কেন ভাল্লাগছে! কেম আমার আফসোস হচ্ছে আর কিছুক্ষণ থাকা গেলে ভালো হতো! এটা কি তবে.......! না, না, না। এই অনুভুতিকে এখনই গলা টিপে খুন করতে হবে। আমার ছন্নছাড়া জীবনে কোনও অনুভুতির জায়গা নেই। ড. তিসি তার কাছে শুধুমাত্র একজন গবেষক, আর তিনি গবেষণার গিনিপিগ।"

"স্যার, আপ্নের লগে দেখা করতে আইছে একজন।"
আনসারি সাহেব দেখলেন নীচতলার চায়ের দোকানের ছেলে শিপলু এসেছে। আনসারি সাহেব ভাবলেন অন্যকিছু নিয়ে চিন্তা করে মাথা ঠিক করতে হবে, প্রচুর জট বেধে আছে। "নিয়ে আয়।", আনসারি সাহেব জবাব দিলেন।

একজন মেয়ে আস্তে আস্তে আনসারি সাহেবের ঘরে প্রবেশ করলেন, অত্যন্ত আধুনিক সাজপোশাকে সজ্জিত। আজাদ আনসারিকে দেখে সরাসরিই বলে ফেললো, "আপনিই আনসারি সাহেব!"

- হ্যাঁ, আমিই।
- ওহ, আমি অবশ্য অগোছালো চুল, বড় দাড়ি এবং টেকো কাউকে আশা করছিলাম। ভুতের ডাক্তাররা তো ওরকমই হয়।
- আমি ভুতের ডাক্তার নই। আপনি বসুন। চা খাবেন তো!
- হ্যাঁ।
আনসারি সাহেব শিপলুুকে চা আনতে বললেন, দু মিনিটের বেশি লাগলো না চা আসতে। চা এবং বিস্কিট নিয়ে বসলেন আনসারি সাহেব। "বলুন, কি বলতে এসেছেন।", আনসারি সাহেব বললেন।
- আমি সায়নী ঘোষ। ওয়েস্ট বেঙ্গলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করি।
- বাহ! ওয়েস্ট বেঙ্গল থেকে এতোদুর এসেছেন!
- ঠিক তা নয়, আমি আসলে শুটিংয়ের কাজে বাংলাদেশ এসেছি। এখানে এসে আপনার ব্যাপারে শুনি। আপনি যুক্তি দিয়ে চিন্তা করে রহস্য সমাধান করেন।
- মিসেস ঘোষ আপনি কিরীটি রায় চরিত্রের গল্প পড়েছেন?
- হ্যাঁ, আমার খুব পছন্দের। কিরীটি নিয়ে যে সিনেমাটা হয়েছে সম্প্রতি, আমি ওতেও ছিলাম।
- আপনার তো তাহলে মনে থাকার কথা কিরীটি রায়ের বাড়িতে নেম্প্লেট টাঙানো ছিলো, 'রহস্যভেদী' তাই না?
- তা ছিলো বৈকি।
- আমার বাসায় এরকম কি নেম্প্লেট পেয়েছেন?
- না।
- ম্যাডাম, লোকজন আমার নামে বাড়িয়ে বলে। আমি কোনও সুপারহিরো নই, রক্ত মাংসের মানুষ, যে যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে ভালোবাসে। আমি তখনই কারও সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাই, যখন আমার কাছে মনে হয় তার সমস্যটা প্রাকৃতিকভাবে অসংগতিপুর্ন। আসলে আমার কাছে রহস্য হলো প্রকৃতির অসংগতি, সেসব অসংগতির পিছনে অবশ্যই ব্যাখ্যা থাকবে। মানুষ যেইসব অসংগতির ব্যাখ্যা বের করতে পারে না সেসব অসংগতিকে অলৌকিক বা এরকম কিছু বলে আখ্যা দিয়ে দেয়। প্রকৃতিতে ব্যাখ্যাতীত বলে কিছু নেই।
- আনসারি সাহেব, আমি যদি বলি আমি আয়নার ভিতরে যেতে পারি, তাহলে কি আমার সমস্যা নিয়ে আপনি মাথা ঘামাবেন?
- সেটা নির্ভর করছে ঘটনাটা কিভাবে ঘটে তার উপর। আমার ঘরে একটা মাত্র আয়না ওয়াশরুমের বেসিনে। তুমি যদি এই মুহুর্তে আমাকে আয়নায় ঢুকে তারপর আবার বের হয়ে দেখাতে পারো, তাহলে হয়তো আমি তোমার বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামাতে পারি। কারণ, আয়নায় কাচের নিচে পারা লাগানো, আয়নায় বস্তু প্রতিফলিত হয়। বৈজ্ঞানিকভাবে তোমার সেখানে ঢোকা পসিবল নয়, তাই আমাকে ভাবতে হবে এসবের অন্য কোনও ব্যাখ্যা যদি থাকে, তাহলে সেটা কি। সরি তুমি বলে ফেলেছি।
- না ঠিক আছে, আপনি আমার অনেক সিনিয়র। আমি আসলে যেভাবে আয়নায় ঢুকি, সেটা ঠিক বোঝানো যাবে না। যেমন ধরুন যখন খুব ঘোরে চলে যাই, তখন আয়না আমাকে টানে। সম্পুর্ন ভিন্ন এক জগতে নিয়ে যায়। আমি এখন পর্যন্ত যতগুলো সাইকিয়াট্রিস্ট দেখিয়েছি, সবাই একই কথা বলেছেন, 'হ্যালুসিনেশন, কল্পনা।"
- আমিও ওভাবেই বলবো।
- আয়নাই যে একমাত্র সমস্যা তা নয়, আমার অনেক অ্যাবনর্মাল ক্ষমতাও আছে।
- আচ্ছা।
- আনসারি সাহেব, আপনি ড. তিসিকে নিয়ে বিব্রত হবেন না, উনিও আপনাকে নিয়ে কাব্যরচনা করে চলেছেন, আপনাদের দুজনই একে অপরের প্রতি দুর্বল, ভয়ংকর রকমের দুর্বল। তবে, আপনি একটা কথা সঠিকই ভেবেছেন, আপনি উনার গিনিপিগই।
আনসারি সাহেবের ভ্রু কিছুটা কুঞ্চিত হলো।
- আপনি প্রায়ই যাকে স্বপ্নে দেখেন, সে আপনার ভালোই চায়, অযথা তাকে ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই, যদিও আপনি ভয় পাওয়ার মতো মানুষ নন, আপনি আসলে অস্বস্তিতে ভোগেন।

আনসারি সাহেবের যেন শরীর দিয়ে চিকন ঘাম বের হচ্ছে, শরীর দুর্বল হচ্ছে। 'না, হার আমি মানবো না, এভাবে হার মানবো না, শক্ত থাকো আনিসারি, শক্ত থাকো।', মনে মনে নিজেকে প্রবোধ দিলেন।

"আনসারি সাহেব, আমি যাই, আমাকে খুব দ্রুত ঢাকায় পৌছে ফ্লাইট ধরতে হবে। আপনাকে বিব্রত করা আমার উদ্দেশ্য ছিলো না। আমি জানি আপনার মনস্তত্ত্ব নিয়ে খেলাটা এতো সোজা না। কিন্তু আমি আপনাকে ধাক্কা দিতে চাই নি, আমি আসলে বোঝাতে চেয়েছি আমার সমস্যাটা আক্ষরিক অর্থেই প্রাকৃতিকভাবে অসংগতিপূর্ণ। আপনি এটার পিছনের কারণ বের করে আমাকে সাহায্য করুন। আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। প্লিজ!", বলেই সায়নী আর বসলেন না। তাড়াতাড়ি উঠে চলে গেলেন।
আনসারি সাহেব সারারাত ঘুমাতে পারলেন না। অদ্ভুত এক বিষাদ অনুভূতিতে মন ছেয়ে গেছে। এতোটা ধাক্কা, জীবনে কখনো খান নি। আজ একইসাথে নিজের বিশ্বাস এবং আত্মবিশ্বাস দুটোতেই মরন আঘাত হেনেছে সায়নী। এই বিষাদ অনুভুতিকে কি গভীর কোনও ডিপ্রেশন বলা যাবে? যেই পৃথিবীকে তিনি যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত বলে ধরতেন, সেই পৃথিবীকেই অর্থহীন মনে হচ্ছে। রহস্য নিয়ে অতিরিক্ত মাথা ঘামান বলেই কি এই ডিপ্রেশনে পরেছেন তিনি?
হঠাৎ খেয়াল করলেন সোফায় একটা ডায়েরি ফেলে গেছে সায়নী।

(৩)
আমি জাফর। আপনাদের ভাষায় আজাদের দ্বৈত স্বত্ত্বা। এতদিন আমি আসতে পারি নি, কারন আনসারি তার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে পেরেছিলো। আমি তখনই আসতে পারি যখন আনসারি তার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারায়। এবং আজ আনসারি সেটা হারিয়েছে।
আমি ওর মাথা আরও জট পাকিয়ে দিবো। যাতে আমার অস্তিত্ব সংকটে না পরে। আনসারিকে মরতে হবে। দুই স্বত্ত্বা এক দেহে থাকতে পারে না। আনসারি মরবে থাকবে শুধু আমি, আমি!

(৪)
ঘুম থেকে বেশ সংগ্রাম করেই উঠলেন আনসারি সাহেব। শরীর আড়ষ্ট হয়ে আছে। এসির টেমপারেচার সর্বনিম্ন। উনার মত একলা মানুষের জন্য এসির কি প্রয়োজন সেটা তিনি বুঝে উঠতে পারেন নি কোনভাবেই। বেশ কয়েকবার এসি বিক্রি করে আবারও কিনে এনে লাগিয়েছেন। এসি ক্রয় করার গোটা বিষয়টা যে তিনি অবচেতনে করেন সে বিষয়ে তার কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু কখনো এ নিয়ে ভেবে দেখার অবকাশ পাননি। ড. তিসিকে জানাতে হবে।

ড. তিসির কথাটা মাথায় আসতেই মেজাজটা বিগড়ে গেলো আনসারি সাহেবের। উনার মাথার জটের নেপথ্যে এই ড. তিসিই। গতকালের কথাগুলো একে একে মনে পড়তে লাগলো। কিভাবে সায়নী ওকে টেক্কা দিলো, নিজের বিশ্বাসের স্তম্ভ ভেঙ্গে দিয়েছে। হঠাৎ চোখে পরলো তার একহাতে ব্ল্যাক কফির মগ আর আরেক হাতে একটা ছুরি। পুরনো সমস্যা আবার দেখা দিয়েছে। আগে ঘুম থেকে উঠেই হাতে ব্ল্যাক কফির মগ আর আরেক হাতে ছুরি ধরা অবস্থায় নিজেকে আবিষ্কার কররতেন, যেখানে ব্ল্যাক কফি উনার পছন্দ না। বলা বাহুল্য এর পিছনের রহস্য আনসারি সাহেব কখনও বের করতে পারেন নি। যখনই ব্যাপারটা নিয়ে ভাবতে বসেন, অন্য কিছু নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পরেন আনসারি সাহেব।

আজ কলেজ বন্ধ। আনসারি সাহেব বেশ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে শাওয়ার করলেন। সময়মতো দুপুরে খেয়ে একটা গল্পের বই নিয়ে বসলেন। আনসারি সাহেব গল্পের বই পড়া পছন্দ না করলেও তার হাতে গোণা কিছু পছন্দের গল্পের বই আছে, যেগুলোকে তিনি প্রায়শই বারবার পড়ে যান। “ড. জেকিল এন্ড মি. হাইড” এর মধ্যে অন্যতম।

সন্ধ্যা নাগাদ বইটি শেষ করে ফেললেন, মাথা এখন হালকা লাগছে। এবার সায়নীর সমস্যাটা নিয়ে ভাবা যায়। হঠাৎ তার চোখ পড়লো সায়নীর ডায়েরির উপর। আনসারি সাহেব দ্বিধা করে ডায়েরিটা হাতে নিয়ে বসলেন। হঠাৎ, একটা ছবি পরলো ডায়েরি থেকে। আনসারি সাহেব ছবিটা দেখলেন। ছবির পিছনে দেখলেন লেখা “আয়না জগৎ”। আনসারি সাহেব ডায়েরিটা পড়া শুরু করলেন।

“শিট, এইটা গতকালই অনুমান করা উচিত ছিলো।“, নিজে নিজেই বলে উঠলেন আনসারি সাহেব। এরপর বুকসেল্ফ থেকে কিছু বই নিয়ে কম্পিউটারের সামনে বসলেন। রাত পর্যন্ত পড়াশুনা করলেন তিনি।

(৫)
তিনমাস পর,
আনসারি সাহেব কলেজ থেকে ফিরে সায়নীকে নিজ বাসায় আবিষ্কার করেন।
"আপনি যে শিক্ষক জানতাম না, জানলে আগে স্যার বলেই ডাকতাম, কেমন আছেন স্যার?", সায়নী জিজ্ঞাসা করে।
- ভালো সায়নী, তুমি কেমন আছো?
- ভালো স্যার,
- তোমার কি তাড়া আছে সায়নী?
- না স্যার, আমি কাল দুপুরের ফ্লাইটে যাবো,
- তাহলে আজ আমার সাথে দুটো ডালভাত দিয়ে ডিনার করতে কি তোমার আপত্তি আছে সায়নী?
- না স্যার, এ আমার সৌভাগ্য।

আনসারি সাহেব শারিনকে ফোন করে ইলিশ মাছ আনিয়েছেন। এই সময়ে বাজারে গিয়ে ইলিশ মাছ কেনার মতো সময়, ধৈর্য্য আর সামর্থ্য, কোনওটাই তার নেই। শারিন তাকে বাবার মতো শ্রদ্ধা করে, দুটো চাকার ইলিশ দিলে তার কোনও আপত্তি হবে না নিশ্চয়ই।

রাতে আয়োজন বেশ ভালোই হলো। বেগুন দিয়ে ইলিশ মাছ, কাকরোল এর চাক ভাজি, স্বরপুটি ভাজা, ঘনডাল। মেহমানের কথা বলাতেই শারিন নিজে বাসায় এসে রান্না করে দিয়েছে। সায়নী ঘোষ শারিনের প্রিয় অভিনেত্রীও। আনসারি শারিনকেও ডিনারে আমন্ত্রণ জানালেন।

এদিকে ডিনারের পরিবেশ ছিলো দেখার মতো। চিটাগাং সাবস্টেশনে ঝামেলা হওয়ায় সারারাত কারেন্ট থাকবে না। মোমের আলোতে রীতিমতো ক্যান্ডেল লাইট ডিনার হয়ে গেলো।

খাওয়া শেষে নিজ উদ্যোগে শারিন সবাইকে চা বানিয়ে খাওয়ালো। চা খেতে খেতেই আসর চললো। শুরুটা আনসারি সাহেবই করলেন।
- সায়নী,
- জ্বি,
- গরীবের আয়োজন কেমন লাগলো?
- এরকম অমৃত এই প্রথম খেলাম।
- যাক ভালো। সব শারিনের হাতের জাদু। যাই হোক, তিনমাস আগে তুমি তোমার সমস্যা নিয়ে এসেছিলে। আমি তোমার সমস্যা সমাধান করে ফেলেছি। শারিনের সামনে বললে কি তোমার অসুবিধা আছে?
- না স্যার, বলুন আপনি, আমার আপত্তি নেই।
"শারিন তোমার কি রাত করে বাড়ি ফিরলে অসুবিধা হবে?", শারিনকে উদ্দেশ্য করে বললেন।
- না স্যার, অসুবিধা নেই।
আনসারি সাহেব আয়েশ সিগারেট ধরালেন একটা, তারপর বলতে লাগলেন, " সায়নী তোমার ডায়েরিটা পড়লাম। সেখানে তুমি তোমার জীবনের অনেক ঘটনাবলি লিখেছো। আমার পড়ার জন্যই লিখেছো। টেকনিক্যালি ফেলে গেছো। আয়না দুনিয়ার একটা ছবিও ছিলো সেখানে।"
আনসারি সাহেব কিছুক্ষন চুপ করে থাকলেন, তারপর বললেন, "চারুলতা, তোমার সমস্যাটাকে আমি দুইভাগে ভাগ করেছি। প্রথমত, তোমার থটরিডিং ক্ষমতা! দ্বিতীয়ত তোমার আয়না ক্ষমতা। কোনটা আগে ব্যাখ্যা করবো?"
"আপনি কিভাবে ধরলেন যে চারুলতা আমার ডাকনাম?", সায়নী জিজ্ঞাসা করে।
- চমক তুমি একাই দিতে জানো না চারু, আর তাছাড়া আনসারির মনস্তত্ত্ব নিয়ে খেলা এতোটা সোজা নয় চারু। তুমি সেটাকে অনেক সহজ ভেবেছিলে।
সায়নী চুপ করে থাকে।

"মানুষের থটরিডিং ক্ষমতাটা আসলে কি জানো? নিজের অভিজ্ঞতার ছাচেঁ অন্যের সম্ভাব্য অভিজ্ঞতাটা অনুমান করা। সেই অনুমান সঠিক হলেই লোকে তাকে টেলিপ্যাথিক, থটরিডার, ক্ষমতাধর অনেক কিছুই বলে। বিষয়টা আরেকটু ক্লিয়ার করি। ধরো, আমি বইয়ের ফাকে বেতনের টাকা রাখি, এখন একজন লোককে আমি বললাম আমি বেতনের টাকা কোথায় রাখি, সে উত্তর দিবে বইয়ের ফাকে। এইটা সে বলতে পারবে কারণ সেও বইয়ের ফাকেই বেতনের টাকা রাখে। সে নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলেছে শুধুমাত্র। আমার জায়গায় সে হলে কি করতো সেটা ভেবে উত্তরটা দিয়েছে। তুমিও ঠিক একইভাবে তোমাকে আমার জায়গায় রেখে আমার মানসিক অবস্থার একটা স্বরূপ ধরে নিয়েছিলে। মানুষ কমবেশি স্বপ্নে খারাপ দেখে। তুমি সেইটাকে ফর্মুলা হিসেবে ধরে বলেছিলে যে যাকে স্বপ্নে দেখি তাকে ভয় না পেতে, তুমি নিজে একটা ছেলেকে ভালোবাসো, সেই ছেলেটাও তোমাকে বাসে। কিন্তু মুখ ফুটে বলে না। সেজন্য সেই হিসেব ধরে আমার মাথা এলোমেলো করে বিভ্রান্ত করার জন্যই বলেছ যে ড. তিসির সাথে আমার যে সম্পর্কটা গড়ে উঠছে বা উঠেছে, সেটা রোমান্টিক। এখন আমি যদি জিজ্ঞাসা করি আমার স্বপ্নে যে আসে সে ছেলে কি মেয়ে, তুমি উত্তর দিতে পারবে না। পারবে কি?"

- না স্যার।
- গুড, তোমার প্রথম সমস্যার ব্যাখ্যা আমি দিলাম। যদিও ওটা কোনও সমস্যা ছিলো না, তুমি চাল চেলেছো আমার সাথে, আমাকে বিভ্রান্ত করতে। তুমি আমার উপর গোয়েন্দাগিরি করতে লোক পাঠিয়েছো, সেটা আমার পছন্দ হয় নি। ব্যাক্তিগত জীবনের উপর হস্তক্ষেপ আমি একদম পছন্দ করি না।
- সরি স্যার।
- তোমার আয়না সমস্যার ব্যাপারে আমার দুটো হাইপোথিসিস আছে। একটা দার্শনিক, আরেকটা বৈজ্ঞানিক। প্রথম হাইপোথিসিস, তুমি যা দাবি করছো, সব ভুয়া। তোমার কল্পনা। খুবই সহজ হাইপোথিসিস, হ্যালুসিনেশন বলেই কাটিয়ে দেওয়া যায়। দ্বিতীয় হাইপোথিসিস তুমি যা বলছো সত্যি। তবে এর পিছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা বের করতে হবে অথবা হয়তো কখনও বের করা যাবে না। তবে আমি তোমার ডায়েরি পড়ে যা বুঝলাম, আমার দ্বিতীয় হাইপোথিসিস তুলনামূলক স্ট্রং। তোমার ডায়েরিতে কিছু প্রমাণ উপস্থাপন করেছ। সেগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী।

প্রথমত, তুমি লিখেছো ছোটবেলায় তুমি স্বপ্নে দেখো তোমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে স্থানীয় চার্চে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। নাড়িভুড়ি, কলিজা, হাত, পা, মুণ্ডু আলাদাভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো চার্চের পিছনের মাঠে। পরের দিন সেই মেয়েকে ওভাবেই পাওয়া যায় চার্চে। আমার ধারণা মেয়েটির হত্যাকাণ্ড স্বপ্নযোগে গঠিত কোনও দুর্ঘটনা নয়। ওর হত্যার পিছনে তুমিই ছিলে। যেই বয়সের কথা তুমি লিখছো, কাছের বান্ধবী না ডাকলে মধ্যরাতে সেই মেয়ের চার্চে যাওয়ার কথা না। তুমি কাজ সেরে তোমার ঘরে তোমার রুমে ফিরে এসে এমনভাব করলে যেন তুমি দুঃস্বপ্ন দেখেছো বান্ধবীকে নিয়ে, সবাই ভাবে তুমি তোমার বান্ধবীর মৃত্যু আগেই দেখতে পেয়েছো। গুড এলিবাই।

আমার ধারণা মেয়েটি আর তুমি একই বাবার ঔরসজাত। তুমি বড়দের কথার এক ফাকে সেটা শুনে ফেলো এবং একটা সময় তোমার বাবা তোমাত প্রতি এটেনশান কম দেওয়ায় তুমি রাগে এবং হিংসার বশবর্তী হয়ে ওকে খুন করো। ওর দেহ যেভাবে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করেছো, তাতে রাগটা স্পষ্ট বোঝা যায়।

এই গোটা ঘটনাটাও তুমি আমাকে বিভ্রান্ত করতে অন্যভাবে লিখেছো, আমি কি ঠিক বলছি চারু?

সায়নী চুপচাপ কাদছে।

আনসারি সাহেব পুনরায় শুরু করলেন, "শুরু থেকেই তোমার সমস্যা নিয়ে ভুল পথে ছিলাম, আমি ভাবছিলাম আয়নায় কিভাবে মানুষ ঢুকে। কিন্ত, তুমি আসলে আয়নায় ঢোকো নি, ঢুকেছো আয়নার প্রতিফলনে। তুমি একটা মাধ্যমে প্রবেশ করেছো। সেই মাধ্যমটা আয়নায় প্রতিফলিত হয়েছে।

- ঠিক বুঝলাম না স্যার।
- তুমি কি জানো আমাদের ইউনিভার্সের মতো অনেকগুলো প্যারালাল ইউনিভার্স আছে।
- জ্বি স্যার, মুটামুটি জানা আছে।
- সেই প্যারালাল ইউনিভার্সেও তোমার মতো সায়নী ঘোষ কিংবা আমার মতো আজাদ আনসারি থাকতে পারে বা আছে সেটা জানো।
- হালকা পাতলা শুনেছিলাম এই ব্যাপারে।
- এই কন্সেপ্ট মূলত সায়েন্স ফিকশন বই এবং চলচ্চিত্র থেকে নেওয়া। কিন্তু আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ধীরে ধীরে এতোটাই প্রসারিত হয়েছে যে এই কন্সেপ্টগুলোকে গ্রহণ করেছে। প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তি দিয়ে এই কন্সেপ্ট ডেভেলপ করার। কে বলতে পারে, অন্য কোনও ইউনিভার্সের পদার্থবিজ্ঞানও এই কন্সেপ্ট নিয়ে গবেষণা করছে এবং এইখানে অনেক ডেভেলপও করে ফেলেছে!
- হতে পারে স্যার।
- চারু, আমার ধারণা, কোনও এক প্যারালাল ইউনিভার্সের পদার্থবিজ্ঞান এই কন্সেপ্টে যথেষ্ট ডেভেলপমেন্ট করেছে, এবং তারাই ডেসপারেটলি তোমার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, টেকনিক্যালি তুমি তাদের ইউনিভার্স থেকে ঘুরেও এসেছো। গোটা প্রসেসটা হয়েছে আয়নার রিফ্লেকশনের মাধ্যমে।

তুমি ডায়েরিতে লিখেছো সেখানে আলোর ঝলকানি ছিলো অন্যরকম, সেখানে তুমি নিজেকে দেখেছো। তুমি প্যারালাল ইউনিভার্সের চারুকে দেখেছো। এই ইউনিভার্সে তুমি অভিনেত্রী কিন্তু অন্য ইউনিভার্সে পদার্থবিদ। সেই পদার্থবিদ সায়নী এই ইউনিভার্সের তোমাকে খুঁজে বের করেছে। আলোর ঝলকানি অন্যরকম হওয়ার কারণ সব ইউনিভার্সে সুর্যের সদৃশ নক্ষত্র থাকলেও সুর্যের অনুরূপ নক্ষত্র নেই। সেই নক্ষত্রের রশ্মি হুবুহু সূর্যের মতো হবে এমন কোনও কথা নেই।

- আমি কি স্যার এখান থেকে বের হতে পারবো?", সায়নী জিজ্ঞাসা করলো।
- চারু, তুমি কি জানো এক ইউনিভার্স থেকে আরেক ইউনিভার্সে যেতে কতটুকু সময় লাগতে পারে? বা এর দুরত্বসীমা কতটুকু?
- না স্যার।
- বিজ্ঞানী আইনস্টাইন একে উল্লেখ করেছেন ইনফিনিটি বা অসীম হিসেবে। চারু, তুমি কি বুঝতে পারছো! তুমি ইনফিনিটির দুরত্ব অতিক্রম করেছো এক নিমিষে।

সায়নী নিশ্চুপ। তার ফোপানি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
আনসারি সাহেব উঠে দাঁড়ালেন। সায়নীর মাথায় আলতো করে হাত রাখলেন, "মা গো, তোমার সমস্যাটা বড় বড় পদার্থবিদদের গবেষণার বিষয়বস্তু। তারা এই বিষয়টিকে হেসেই উড়িয়ে দিবেন। আর, এটা আমার মতো নিতান্তই সাধারণ কোনও গণিত শিক্ষকের কাজ নয়। আমি খালি তোমার সমস্যাটা ব্যাখা করতে পারি সমাধান তোমাকেই করতে হবে। তবে তোমার জায়গায় আমি থাকলে চেষ্টা করতাম যেই মাধ্যমে দুটো ইউনিভার্স কানেক্টেড হয়েছে সেটা নষ্ট করে দেওয়ার। প্রকৃতি সঙ্গত কারনেই সীমাবদ্ধতা দিয়েছে, সেই সীমাবদ্ধতা এতো তাড়াতাড়ি কাটানো ঠিক হবে না। মানবজাতির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পারবে। তুমি কি বুঝতে পেরেছো চারু?", একনাগাড়ে বলে গেলেন আনসারি সাহেব। অবাকও হলেন। যেই মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন সে একটা ঠান্ডা মাথার খুনি। অপরিনত বয়সেই ন্যাক্কারজনক একটা হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। তবুও মেয়েটির প্রতি মমতা অনুভব করছেন। কেন? তিনি তো সম্পুর্ন মমতাহীন একজন মানুষ। তবে কি অবচেতনেই তিনি মমতা লালন করেন নিজের ভিতর।
"জ্বি স্যার", চোখ মুছতে মুছতে জবাব দিলো চারু।

- চারু তোমার একটা অটোগ্রাফ দেওয়া যাবে?
- আমার অটোগ্রাফ!
- আমার এক ছাত্র তোমার খুব ভক্ত। তার কাছ থেকেই তোমার চারু নামটা জেনেছি। ওর জন্য। তুমি কোনও এক সাক্ষাৎকারে মুখ ফসকে বলে ফেলেছিলে চারু তোমার ডাকনাম।

সায়নী যে হাসিটি দিলো, অসাধারণ লাগলো আনসারি সাহেবের। ব্যাপারটা কি! সবার হাসিই উনার ভালো লাগছে। উনি কি হাসির প্রতি অবসেসড হচ্ছেন!
সায়নী চলে গেলে শারিন আনসারি সাহেবকে বলে, "স্যার, উনি ভুল বলেন নি। তিসি ম্যাম আসলেই আপনাকে ....."


[মিসির আলী আমার অন্যতম প্রিয় একটি চরিত্র, আজাদ আনসারি চরিত্রটির অনুপ্রেরণা মিসির আলী সেটা নিরদ্বুধায় বলতে পারি, তবে দুটি একই ধাচের চরিত্র নয়, ভিন্নতা অবশ্যই আছে। আনসারিকে নিয়ে লেখা বাকি গল্পগুলোও ধীরে ধীরে ব্লগে প্রকাশ করলে কিছুটা ক্লিয়ার হওয়া যাবে।]

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:৪০
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×