somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ ডুয়েল

৩০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রুমে বসে ঝিমুচ্ছেন আজাদ আনসারি। ঘড়িতে বিকেল চারটা। শারিন মেয়েটা আজ শুধুমাত্র খাবার রেখে দিয়েই চলে গেছে। ভার্সিটিতে ওর আজ একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রেজেন্টেশন। নাহলে অন্য সময় আনসারি সাহেবের খাওয়া শেষ হলে তারপরই যায় সে। মেয়েটাকে যতই দেখেন অভিভূত এবং একই সাথে অনুপ্রাণিত হন আনসারি সাহেব। মেয়েটা খুব পরিশ্রমী। ক্যাটারিং বিজনেস এবং পড়াশোনা সমান তালে চালাচ্ছে। অজানা কোনও এক কারণে আনসারির প্রতি এক গভীর মমতা অনুভব করে মেয়েটা, সেটা আনসারি সাহেব বুঝতে পারেন। কিন্তু তার ভয় সেই মমতার প্রতিদান তিনি কতটুকু দিতে পারবেন। কারণ আনসারী সাহেবের ধারণা উনি সম্পুর্ন মমতাহীন একজন মানুষ।
উনার পুর্ব জীবনের ভাবনা ছেড়ে দিয়েছেন। অযথাই সেগুলো ভেবে শরীরটা খারাপ করেন। কাজের কাজ কিছু হয় না। এইভাবে মাস্টারি করে নিরুপদ্রব জীবনযাপন মন্দ লাগছে না।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা, আনসারি দুপুরের খাবার মুখে তুলেন নি। সন্ধ্যা বেলায় আনসারি সাহেব খান না। উনি কোথাও শুনেছেন সন্ধ্যায় মুর্দাদের একমাত্র খাবার শরবৎ দেওয়া হয়। তখন নাকি জীবিত মানুষদের খাওয়ার নিয়ম নেই, খেলে না কি তারা পানি খেতে পান না। যদিও আনসারি সাহেব এসবে বিশ্বাস রাখেন না, কিন্তু তবুও তার মনে হয় তার পরিবারে কেউ না কেউ তো কবরে আছে। সে যদি তার পরিবারের সন্ধান জানতো, সে কি এসব ছোটখাটো বিষয় মেনে চলতো না! অবশ্য একটা বিষয় নিয়ে আজাদ আনসারি প্রায়ই চিন্তা করেছেন। আল্লাহ পাক কি কারণে মুর্দা এবং জীবিতদের খাবার সময় আলাদা করে দিয়েছেন? এবং সময়ের ব্যাপারে কঠোরতা কেন অবলম্বন করেছেন? জীবিতকালে তো পরিবারের সবাই একসাথে খাবার খায়, মৃত্যুর পরও খেলে দোষ কি! নাকি এই সময়ের ভিতরে কোনও ফাকঁ আছে যার মাধ্যমে মৃত এবং জীবিত মানুষের ভিতরে সংযোগ স্থাপন হতে পারে! কে জানে হয়তো! আল্লাহ পাক মানবজাতির কল্যানের জন্যই বিভিন্ন জায়গায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, সীমাবদ্ধতা দিয়েছেন। জীবিতের সাথে মৃতের সংযোগ যে কোনও শুভকর ব্যাপার নয় সেটা আজাদ আনসারি সাহেব মানেন।
মাগরিব আজান দিলেও উনি বসে থাকলেন, খাবার ওভাবেই পরে রইলো। এমন সময় হঠাৎ করে শারিন চলে এলো। টিফিন ক্যারিয়ারের দিকে তাকিয়ে এমন একটা দৃষ্টিনিক্ষেপ করলো যার অর্থ, "এ তো অনুমিতই ছিলো।"
শারিন আজ কালো শাড়ি পরেছে, ওকে মানিয়েছে খুব ভালো। আনসারী সাহেব মুগ্ধ ভরে দেখলেন। মেয়েটা শাড়ির কাছা বেধে প্লেট বাটি ধুরে খাবার গরম করে তারপর এনে দিলো। বলা বাহুল্য এই সময়ে তার "ডায়ালগ" চালু ছিলো! আনসারি সাহেব লক্ষ্য করলেন আজ শারিন নতুন ডায়ালগ প্রয়োগ করেছে, "এই সব ঝামেলা তুই নিতে যাস কেন? ঠিক হইছে, বুইড়া খাক না খাক তোর কি! তুই আবার এখানে আসছিস কেন এখন বোঝ ঠ্যালা!" আনসারি সাহেব রাগ করলেন না, তিনি জানেন শারিন তার স্বাস্থ্য নিয়ে কতটা চিন্তিত, সম্ভবত নিজের বাপের স্বাস্থ্য নিয়েও কেউ চিন্তিত না। শারিনের রাগ ঠান্ডা করার পদ্ধতি জানেন তিনি। চারতলার জানালা দিয়ে গলা চড়িয়ে বললেন, "শিপলু, দুইটা কড়া করে মালাই চা আর বেপারির দোকানের কলিজা শিঙাড়া দিয়ে যাস!"
(২)
মেজাজটা সপ্তমে চড়ে আছে আনসারি সাহেবের। আবার তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অবশ্য উনি জানেন এইসব অতি সীমিত সময়ের ব্যাপর। চিটাগাং এর মেয়র নাজিম সাহেবের কানে গেলেই প্রিন্সিপালকে আস্ত রাখবেন না। নাজিম সাহেবের একটা সমস্যার সমাধান তিনি করেছিলেন, সেটার প্রতিদান। আজ হোক কাল হোক ব্যাপারটা তিনি জানবেনই। তখন প্রিন্সিপালকে রীতিমত ধুয়ে দিবেন। ততক্ষণ প্রিন্সিপাল যদি একটু ক্ষমতা দেখাতে চায় দেখাক। কিন্তু উনার কথা এতো হয়রানির চেয়ে তাকে পার্মানেন্ট করে দিলে সমস্যা কই? যোগ্যতা তো কম নেই উনার।
প্রায়ই উনাকে আকস্মাৎ এভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়, আবার ডাকা হয়, মাঝখানে অন্য টিচার এসে উনার পড়ার রিদম নষ্ট করে দেন। আপত্তি এই জায়গাতেই। মাঝে মাঝে ভাবেন চিটাগং পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট না হয়ে এর নাম চিটাগাং পলিটিক্স ইন্সটিটিউট হলে ভালো হতো।
আজ শুক্রবার, ঢাকা থেকে ইন্সপেক্টর লিখন আর ঘোষবাবু আসছেন। তারা দুজন মাঝে মাঝে সময় কাটাতে আসেন প্রায়ই। আজ নাকি তাদের সাথে আরও একজন আসবেন। ঘোষবাবুর পরিচিত। ঘোষবাবুর মতো উনারও মিষ্টির দোকান আছে পুরাণ ঢাকায়। ভদ্রলোকের নাম সুধারাম মিশ্র।
আনসারী সাহেবের একটা অস্বস্তি অনুভব করেছেন। যেন বুঝতে পারছেন কিছু একটা ঘটবে। এর আগে এই অনুভূতিগুলো চিটাগাংয়ের বাইরে ঢাকায় হতো, যখন তিনি সেখানে কোনও রহস্য সমাধানে যেতেন। এই প্রথম নিজ ঘরেই সেই অস্বস্তিবোধ হচ্ছে।
(৩)
রাত দুটো, লিখন, ঘোষবাবু খোশগল্প করেই চলেছে। অথচ আগামীকাল লিখনের ডিউটি আছে। তার উপর বাচ্চা মেয়েটা বাসায় একা। সেই বিষয়ে তার কোনও ভ্রুক্ষেপ আছে বলে মনে হয় না! ঘোষবাবু অবিবাহিত। সংসার বলতে তার ছোটভাইয়ের। তার কোনও চিন্তা এমনিতেও নেই। তিনি নিজের প্রাইভেট গাড়িতে এসেছেন, যাবেনও সেভাবে। সেজন্যই লিখন আর ঘোষবাবুর সময় নিয়ে বিশেষ চিন্তা নেই। বাকি রইলো সুধারাম মিশ্র বাবু। উনি আনসারি সাহেবের পাশেই বসেছেন। হঠাৎ কথা বলে উঠলেন উনিই, "আপনিই সেই আজাদ আনসারি!"
- আমি কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি না বলেই আমার ধারণা।
- না না, আপনার বাচ্চা অন্তর্ধানের কেস সমাধানের বিষয়টা পত্রিকায় পড়েছি। সত্যি মশাই, আপনি কিভাবে বের করে ফেললেন আর আমরা কি থেকে কি ভাবছিলুম!
- আমি আসলে ফ্যাক্ট সাজিয়ে সঠিক তথ্য বের করতে পেরেছিলাম এই যা! আমি জাস্ট সঠিক সময়ে উপস্থিত ছিলাম বলতে পারেন।
- এ তো আপনার মহানুভবতা। আসলে এই অধমের আপনার সাথে দেখা করার একটা উদ্দেশ্য ছিলো।
- সেটা আগেই বুঝেছি, কোনওরকম দ্বিধা ছাড়াই বলতে পারেন, যা বলতে চান।
- আপনি মশাই ভালোই ঠোঁট কাটা। তা ভালো, স্পষ্টভাষী হওয়া খুবই ভালো। তা আমি বলছি। তার আগে বলুন তো, পুরোনো ঢাকার দোকানগুলিতে রাত বারোটার পর লম্বা লম্বা লোক মিষ্টি খেয়ে টাকা দিয়ে চলে যায়, এই ধরনের ঘটনা আপনি শুনে থাকবেন। আমার প্রশ্ন এই ব্যাপারে আপনার হাইপোথিসিস কি!
- মিশ্রবাবু! আমি গাজাখুরি গল্পের উপর হাইপোথিসিস দাড় করাই না।
- গাজাখুড়ি নয়কো বাবু, আমি সত্যিই দেখেছি। নিজ চোখে। এজন্যই, আরকি আপনার কাছে আসা।
- আচ্ছা, আপনার অভিজ্ঞতাটা বর্ননা করুন। যতটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বর্ননা করা সম্ভব।
- অবশ্যই মশাই, এতো পাঁচ বছর ধরেই দেখে যাচ্ছি। একদম পুঙ্খানুপুঙ্খভাবেই হবে। ঘটনার সূত্রপাত এক বৃহস্পতিবার রাতে, মনে করেন একদম মধ্যরাতে। সেদিন রাতে আমি একটু কাজে ব্যাস্ত থাকায় দোকান রাত পর্যন্ত খোলা ছিলো। চারিদিকে আধো অন্ধকার, সোডিয়াম বাতি সব জ্বলছে না। এমন সময় দেখি, চার পাঁচজন লোক, সবার হাইট মুটামুটি ধরেন সাত থেকে আটফুট হবে, দেখতে ভালোই হ্যাংলা পাতলা। আমার দোকানে আসলো। এসে বললো দোকান থেকে বের হতে, ওদের দলনেতা যে ছিলো, ওর কন্ঠস্বরে এমন কিছু ছিলো, যা আমাকে বের হতে বাধ্য করে, আনসারী বাবু কি ঘুমিয়ে পরলেন!
- না না, আপনি বলতে থাকুন, আমি মনোযোগ দিয়েই শুনছি।
- তো যা বলতেছিলাম, বেরিয়ে আসি। এরপর ওরা সবাই মিষ্টি খেয়ে টাকাটা রেখে চলে যায়। ও হ্যাঁ, আমি যখন বের হয়ে আসি, ওরা আমায় বলে দোকানের আলো গুলো নিভিয়ে দিতে। এখানে আরেকটু যোগ করি মিষ্টির ব্যাবসাটা আমাদের পারিবারিক, এর বয়স ৮০ বছর। আমার দাদু, আমাকে বলেছিলেন এই ব্যাপারে। প্রতি রাত্রে 'তাদের' জন্য দোকান খোলা রাখতে। আমি সে ঘটনার আগে দাদুর কথাকে গুরুত্ব দিতাম না। এখন দিই। আমি আসলে গোটা বিষয়টা আপনার দৃষ্টিকোন থেকে দেখতে চাচ্ছিলাম, আমি নিজেও আপনার মতো যুক্তিতে বিশ্বাসী।
- মিশ্র বাবু, আমি কিন্তু পুরোপুরি যুক্তিতে বিশ্বাসী নই, আমি বিশ্বাস করি বিজ্ঞান নির্ভর যুক্তি। বিজ্ঞান নির্ভর যুক্তি আর সাধারণ যুক্তি মাঝেমধ্যে দ্বন্দে লেগে যায়। আমি যেটা করি দর্শন আর বিজ্ঞানের ফিউশন ঘটাই। যাক গে সে অতি জটিল ব্যাপার, আপনি আপনার ঘটনাটা আরেকবার বর্ননা করুন।
এভাবে পরপর পাঁচবার আজাদ আনসারি ঘটনাটা শুনলেন। কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে ঠোঁট বিড়বিড় করলেন। তারপর ধীরে সুস্থে বললেন, "মিশ্র বাবু, ব্যাখ্যা আমি দিতে পারি, কিন্তু বিপত্তি কিন্তু আপনারই হবে। কেঁচো খুড়তে সাপ বেড়োনো কি ঠিক হবে!"
মিশ্র বাবু হচকচিয়ে গেলেন, "মানে! কি বলতে চান"
- মিশ্র বাবু, আপনি আমার সাথে বাঘবন্দি খেলা খেলার জন্য সুদুর ঢাকা থেকে চিটাগাং এসেছেন। আপনার এক্সেন্ট অনুযায়ী যদি বলি, তাহলে বলতে হবে, " এ অধমের সৌভাগ্য।" কিন্তু মিশ্র বাবু, আপনি যখন থেকেই আমাকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে হারানোর কল্পনা করেছেন, চেকমেট তখন থেকেই খেয়েছেন। আনসারির মনস্তত্ত্ব নিয়ে খেলা এতো সহজ নয়।
মিশ্র বাবু চুপ, কিন্তু তার চোখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভিতরে তার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। আনসারি সাহেব বলেই চললেন,
"মিশ্র বাবু, প্রথমে আপনার ঘটনাটার ব্যাখ্যা দেই। কেউ লম্বা হলেই বা অন্ধকারে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলেই যে সে অন্য ভুবনের কেউ হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমননা। অথবা কন্ঠস্বর একটু অস্বাভাবিক হলেই যে স্বয়ং ব্যাক্তি অস্বাভাবিক হয়ে যাবে এমন না। হরমোনাল ইম্ব্যালেন্স বা এরকম আরও বিভিন্ন কারণ আছে, যার জন্য মানুষ অস্বাভাবিক লম্বা হয়। এমনই এক সমস্যার নাম 'marfan syndrome'। এর প্রভাবে মানুষ অস্বাভাবিক লম্বা এবং লিকলিকে গড়নের হয়। আবার অনেকের ত্বক আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির প্রতি সংবেদনশীল হয়, এরকম আরেকটা সমস্যার কথা উল্লেখ করা যায়, 'Xeroderma pigmentosum' এক্ষেত্রে ভুক্তভোগী সূর্যের আলোতে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নি তাদের ত্বকের ক্ষতি করে। আর কন্ঠস্বরের সমস্যা থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। ভারতের এককালের অভিনেতা অনিরুদ্ধ আগারওয়ালেরও এরকম সমস্যা ছিলো, উনার এই অস্বাভাবিক কন্ঠকে পুঁজি করে বলিউডে অনেক হরর সিনেমা নির্মিত হয়েছে। আমার ধারণা আপনাদের দাদা পরদাদাদের আমলে ঢাকার কোনও এক পরিবারে পাঁচ থেকে ছয়জন বালক উপরিউক্ত তিনটি সমস্যা একত্রে নিয়েই জন্ম নেয়। তারা প্রকাশ্যে বের হতে পারতো না, এজন্য রাতে বিরাতে দোকানে দোকানে খাবার খেতো, অন্ধকারে থাকতে থাকতে অভ্যাস হয়ে যাওয়ায় আলো নিভিয়ে দিতে বলতো, শুধু মিষ্টি নয়, মিষ্টির দোকানে আপনারা সমুচা সিঙারা ধরনের শুকনো খাবারও রাখেন। আকারে বড় হওয়ায় তাদের খাবার প্রচুর লাগতো। তাই রাতে দোকানে ঘুরে ঘুরে ওভাবেই খাবার সংগ্রহ করতো। তবে দামের ব্যপারটা আমি নিশ্চিত না। তারা দাম দিতেও পারে, অথবা মানুষের ভয়ের সুযোগ নিয়ে ফ্রী ফ্রীও খেতে পারে। এই অংশটা পরিষ্কার না আমার কাছে।
আর এবার আসি আপনার ব্যাখ্যায়, মিশ্র বাবু, আপনাদের পারিবারিক ব্যাবসা মিষ্টির দোকান সেটা ঠিক, কিন্তু ওটা চোখের ধুলো। আপনি পুরাণ ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের বাসিন্দা। আপনাদের পারিবারিক ব্যাবসা বলতে যা বোঝায়, ওই ই। বহু বছর আগে ঘটে যাওয়া বিক্ষিপ্ত এক ঘটনাকে বছরের পর বছর ধরে এমনভাবে আপনারা সাজিয়েছেন,এমনভাবে ডেভেলপ করেছেন, যেন মানুষজন বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়, মানুষজন ভাবে তারা নিজেই প্রত্যক্ষ করেছে এই ঘটনা। এর ফলে রাত বাড়ার সাথে সাথেই সবাই যে যার ঘরে চলে যায় আর আপনারা রাতের অন্ধকারে নির্বিঘ্নে আপনাদের কাজকর্ম চালাতে পারেন।
আপনি এখানে আমাকে চ্যালেঞ্জ করতে এসেছেন, আমাকে বিভ্রান্ত করবেন বলে এসেছেন, আপনার ধারণা বুদ্ধির খেলায় আমাকে হারাবেন, অথচ আপনি নিজেই যে পাশার দান আমার পক্ষে উল্টে দিয়েছেন সেটা আপনি জানেন না। মিশ্র বাবু, আবারও বলি, আনসারির মনস্তত্ত্ব এতো স্বস্তা নয়।"
পরিশিষ্ট:
এক সপ্তাহ পর,
মিশ্র বাবু সুইসাইড করে, সুইসাইড করার আগে ইন্সপেক্টর লিখন সাহেবের কাছে আনসারি সাহেবের জন্য একটা চিঠি দিয়েছিলেন। লিখন সাহেব চিঠিটা আনসারি সাহেবের হাতে সরাসরি পৌছে দিয়েছিলেন, চিটিতে লেখা ছিলো,
"আনসারী সাহেব,
আপনার সাথে বুদ্ধির খেলা খেলাটা উচিত হয়নি। নাহলে আরও কিছুদিন এই সুন্দর পৃথিবীতে থাকা যেতো। যাই হোক, মরার আগে আপনাকে সতর্ক করে দেই। নিজের অতীতের খোঁজ বের করার চেষ্টা ভুলেও করবেন না। কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হওয়াটা ভালো নয় সেটা আপনি আমকে সেদিন রাতে সতর্ক করেছিলেন, বড্ড ভুল করেছিলাম। আপনি বুদ্ধিমান মানুষ। আমার মতো ভুল করবেন না আশা করি।
আপনার মনে কি প্রশ্ন আসছে আমি জানি, মরার আগে কেউ মিথ্যা বলে না। আমিও বলবো না। আপনার অতীত সম্পর্কে আমি একেবারে পুরোটাই জানি, মানে জানতাম। যখন চিঠি পড়বেন তখন তো আমি অতীত হয়ে যাবো, তাই জানতাম ই ঠিক আছে, কি বলেন আনসারী বাবু!

(#বিদ্র: পুরোনো ঢাকার বিষয়টার ব্যাখ্যা লেখকের একান্ত ব্যাক্তিগত মতামত।)
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৮
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×