তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হলে এর পরিণতি শুভ হবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, "নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা একটি মীমাংসিত বিষয়। এর পরিবর্তে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা হলে তার পরিণতি ভয়ংকর হবে। আমরা মনে করি- এটা দেশকে অস্থিতিশীল করার একটি ষড়যন্ত্র।''
এ ধরনের চিন্তাবাবনা থেকে সরকারকে বিরত থাকারও আহবান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ ব্যবস্থাটি বাতিলের পক্ষে মত দিয়ে আসছেন দলের প্রভাবশালী নেতারা। তবে বিরোধীদল এ ব্যবস্থার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তাদের অভিযোগ- সরকার তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের 'ষড়যন্ত্র' করছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংযোজন করে ১৯৯৬ সালে সংবিধানে ত্রয়োদশ সংশোধনী আনা হয়। বিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ তিন মাস বা ৯০ দিন।
১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে সপ্তম, অষ্টম ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর বাইরে আরো একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিলো। ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ নিজ দায়িত্বে অতিরিক্ত হিসাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে শপথ নেন।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে কার্যত বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর ড. ফখরুদ্দিন আহমদ ওই পদে শপথ নেন। এ পদ্ধতির সরকারের মেয়াদ সাংবিধানিকভাবে ৯০ দিন হলেও তিনি ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক একাডেমী'র উদ্যোগে 'তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা ও নাগরিক ভাবনা' শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তনের কথিত চিন্তাভাবনার সমালোচনা করে বলেন, "তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় যেতে পারবে না বলেই এখন এই ব্যবস্থা বাতিলের চিন্তাভাবনা সরকারের ভেতরে হচ্ছে। ক্ষমতায় যেতে তারা এই ব্যবস্থা বাদ দিতে চায়।"
তিনি মনে করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা উঠিয়ে দেওয়া হলে দেশে একটি সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হবে।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরো বলেন, ''আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তুলে নেওয়া হলে জনগণ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।''
সংগঠনের সভাপতি এম এ মেহবুব রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সভাপতি শওকত হোসেন নিলু, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল লতিফ নেজামী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-মতিন (বিজেপি) মহাসচিব আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




