somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেম তবু প্রেম নয়(চতুর্থ অংশ)

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



-জুঁই আমার ডার্লিং।
-কি আবোল-তাবোল কথা বলছেন?আপনি জানেন জুঁই এর বয়স কত?তিন বছরের বাচ্চা আপনার ডার্লিং হতে যাবে কেন?
পার্থ আর কথা বাড়ায়না।ফোন রেখে দেয়। সবাই চুপ থাকে কিছুক্ষণ।
-এবার নিলয় ফোন দে।
সোহেল বলে।
-না।আজ তোরাই কর।
নিলয়ের কথা শেষ হতে না হতে সগির গেষ্ট রুমে ঢুকে।
-তোমরা কি করছো এখানে?শাহীন খুঁজছে তোমাদের।
-কেন সগির ভাই?
পার্থ প্রশ্ন করে।
-আজ রাতে অপারেশন আছে।
-কখন আসবো আমরা?
নিলয় প্রশ্ন করে।
-রাত বারোটায় হলের পিছে আসবে সবাই।
এই কথা বলে সগির বেরিয়ে যায়।
নিলয়রা যে যার রুমে চলে যায়।

নিলয়,পার্থ আর সোহেল যথা সময়ে হলের পিছনে চলে আছে।কিছুক্ষণ পর ওদের সাথে যোগ দেয় মিন্টু আর সগির ভাই।প্রত্যেকের হাতে বড় বড় ধারালো চাকু।
-সগির ভাই,শাহীন ভাই কোথায়?
পার্থ জিজ্ঞাসা করে।
-ওই তো আসছে।
নিলয় খেয়াল করে শাহীন ভাই একটা ব্যাগ নিয়ে আসছে।সাথে উৎপল।উৎপলের জামা ফুলে আছে কোমরের কাছে।
-সবাই এসেছো দেখছি। এই নাও।
শাহীন ব্যাগ থেকে চাকু বের করে নিলয়দের হাতে ধরিয়ে দেয়।
-মাল কার কাছে।
সগির প্রশ্ন করে শাহীনকে।
শাহীন উৎপলকে দেখিয়ে দিয়ে হাঁটা শুরু করে।
ওরা সবাই যখন কলার প্রজেক্টের গেটে পৌঁছে তখন ভেতর হতে পালোয়ানের মত দুইটা দারোয়ান বেরিয়ে আসে।হাতে লাঠি।
-স্যার,আপনারা এত রাতে এখানে কেন?হলে যান।
এক দারোয়ান বলে
-আমরা কয়েকটা কলা খাবো।
শাহীন ভাই বলে।
-স্যার, এইটা গবেষণার কলা।নষ্ট করা যাবেনা।
আর এক দারোয়ান বলে।
-দেখেন বাধা দিয়েননা।কলা যখন খেতে এসেছি।খেয়েই যাবো।
পার্থ দৃঢ়তার সাথে বলে।
দারোয়ানদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহীন ক্ষেপে উঠে।
-উৎপল মাল বের কর তো।শালাদের গুলি করবো।
উৎপল পাইপগান বের করে শাহীনের হাতে ধরিয়ে দেয়।
-তাড়াতাড়ি গুলি বের কর।
উৎপলের হাত পকেটে ঢুকাতে দেখে দারোয়ানদ্বয় ভোঁ দৌড় দেয়।
-কই উৎপল গুলি দে?
উৎপল আহাম্মকের মত বলে,সে গুলি আনতে ভুলে গিয়েছে।
সবাই গোল গোল চোখ করে উৎপলের দিকে তাকায়।
-দেরী করা ঠিক হবেনা।প্রত্যেকে এক কাঁদি করে নিবি।
সগির বলে।দ্রুত সবাই কাজে লেগে যায়।


কঙ্কা ওর রুমের জানালার পাশে এসে দাঁড়ায়।দিন দিন ও ওর নিজের কাছেই হেরে যাচ্ছে।দীনেশের আহ্বান কিছুতেই ফেরাতে পারছেনা।ওর মনে পড়ে ওর খুড়তুত দাদার কথা।জোর করে ওর ঠোঁটে ঠোঁট গুঁজে দিয়েছিল অনিকদা।কি বিশ্রী ছিল সেই চুম্বন।মুখের গন্ধ।থুথুর চ্যাটচ্যাটে ভাব।মনে পড়তেই এখনও কঙ্কার গা গুলিয়ে উঠে।অথচ গতকাল যখন দীনেশ ওকে চুম খেল,ওর নিজেকে ধরে রাখাই কঠিন হয়ে গিয়েছিল।কঙ্কা আয়নার সামনে দাঁড়ায়।ও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নিজেকে দেখে।চিন্তা করে ও কি কঙ্কা।নাকি কঙ্কার শরীরে অন্য কোন মেয়ে।

কঙ্কা সেজে গুজে হলের বাহিরে আসে।দীনেশ গাছতলায় দাঁড়িয়ে।দীনেশকে দেখে হেসে উঠে।দীনেশ এগিয়ে আসে।ওরা কিছুক্ষণ হলের সামনেই গল্প করে।তারপর কো-অপারেটিভ মার্কেটে গিয়ে চা-নাস্তা খায়।কঙ্কা খেয়াল করে ওদের সাথে পড়ে সি সেকশানের কয়েকটি ছেলেও চা খাচ্ছে।নিলয় নামটি কানে আসতেই বুঝার চেষ্টা করে নিলয় ছেলেটা কোন জন।কয়েকদিন ধরে বান্ধবীদের মুখে মুখে নিলয়ের এক তরফা প্রেমের গল্প।ছেলেটা নাকি লীপাকে কোন ভাবেই পটাতে পারছেনা।অবশ্য কঙ্কার কাছে মনে হয় লীপা প্রেম-ট্রেম কিছু বুঝেইনা।লীপা অবশ্য হলে থাকেনা।ক্যাম্পাসের মেয়ে।

সন্ধ্যা হতেই দীনেশ আর কঙ্কা করিডোরের অন্ধকার অংশে চলে আসে।
-কয়েল ধরাও।
দীনেশ ব্যাগ হতে কয়েল বের করে আগুন ধরায়।
কিছুক্ষণ দু’জন চুপচাপ বসে থাকে।কঙ্কা দীনেশের আঙ্গুল নিয়ে খেলা করতে থাকে।

এভাবে কেটে যায় দুই বছর।নিলয়ের রেজাল্ট মোটামুটি ভালো হতে থাকে।ওরা কয়েক বন্ধু মিলে হলে বনসাই চর্চা শুরু করে।এর ফলে বড় ভাইয়ারা ওদের নাম করণ করে কবিরাজ।নিলয় বেশ কিছুদিন লীপার পিছে পিছে ঘুরে ক্ষান্ত দেয়।নিলয় বুঝে ফেলে প্রেম করা ওর কর্ম নয়।

কঙ্কার থার্ড ইয়ারের রেজাল্ট খারাপ হয়।ইয়ারম্যাটদের মধ্যে কানাঘুঁসা হয় ওকে নিয়ে।ওর কানেও আসে সেই কথা।সবাই ধরে নিয়েছে ওকে অ্যাবর্শন করাতে হয়েছে।বান্ধবীদের কোন কথারাই সে কোন উত্তর করেনা।অবশ্য সে দীনেশ ছাড়া কারও সাথে আর মিশেও না।

১ম পর্ব (Click This Link)
২য় পর্ব (Click This Link)
৩য় পর্ব (Click This Link)
চলবে……….

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:১৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×