somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আর্কটিক এর দ্বীপে আবিষ্কৃত হওয়া ক্রান্তীয় অঞ্চলের বনের ফসিল দিচ্ছে উদ্ভিদের বিবর্তন ও অতীত পৃথিবীর পরিবেশ সংক্রান্ত অনেক তথ্য

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আর্কটিক মহাসাগরে নরওয়েজিয়ান দ্বীপ Svalbard এ সম্প্রতি একটি ট্রপিকাল ফরেস্ট উদ্ধার করা হয়েছে। এখানে বিজ্ঞানীগণ এই গ্রহের প্রথম দিকের গাহগুলোর কয়েকটা আবিষ্কার করেছে যা আমাদেরকে ৪০০ মিলিয়ন বছর পূর্বে কিভাবে পৃথিবীর জলবায়ু নাটকীয়ভাবে পরিবির্তিত হয় এটা সম্পর্কে মূল্যবান সংকেত দেয়।

এই ব্রিটিশ রিসার্চারগণ ৩৮০ মিলিয়ন বছর পূর্বের ডেভোনিয়ান পিরিয়ডের সংরক্ষিত অনেক গাছের গুড়ি উদ্ধার করেছেন। এই পিরিয়ডে পৃথিবী বিভিন্ন ধরণের গাছ গাছালির রাজত্ব ছিল বলা যায়।

বনগুলো খুবই গভীর ছিল। গাছগুলো ৪ মিটার বা ১৩ ফুট লম্বা ছিল আর এক একটি গাছের মধ্যবর্তী দূরত্ব ছিল ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটারের মধ্যে। বনগুলোর গাছগুলো ছিল লাইকোপড গাছ (Lycopod trees)। এরা কারবনিফেরাস যুগে যে গাছগুলো সমগ্র পৃথিবী আচ্ছাদিত করে রেখেছিল তাদের পূর্বপুরুষ। এই লাইকোপড গাছ গুলো পরবর্তীতে কয়লায় পরিণত হয়ে যায়।

গবেষণার প্রধান লেখক বলেন, "এই ফসিলগুলো আমাদের ৩৮০ মিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীতে প্রথম গাছ এর সূচনা হবার সময় এর ভেজিটেশন ও ল্যান্ডস্কেপ কিরকম ছিল এ বিষয়ে অনেক তথ্য দেয়।" ডেভোনিয়ান পিরিয়ডের সময় Svalbard পৃথিবীর বিষুব রেখার কাছাকাছি স্থানে অবস্থান করত। পরবর্তীতে প্লেট টেকটোনিক্স এর কারণে এটা ধীরে ধীরে সরে যায়।

গবেষণার তথ্যগুলো ডেভোনিয়ান পিরিয়ডে আমাদের পৃথিবীর অবস্থা সম্পর্কে আমাদের ধারণা দিতে পারে।বিজ্ঞানীদের কাছে প্রমাণ আছে যে সেই সময়ে পৃথিবী থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড এর পরিমাণ প্রচুর পরিমাণে কমে এসেছিল। আর এটা হয়েছিল মস ও ছোট ছোট প্ল্যান্ট এর গাছে বিবর্তিত হয়ে বনাঞ্চল তৈরির মধ্য দিয়ে। এই বনাঞ্চলের গাছগুলো প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন নিঃসরণ করেছিল।

http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0012821X09003148

Dr. Berry বলেন, "ডেভোনিয়ান পিরিয়ডে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড লেভেল অনেক নিচে নেমে এসেছিল। কার্বন ডাই অক্সাইড লেভেল একেবারে এখনকার থেকে ১৫ গুণ বেশি থেকে কমে গিয়ে প্রায় এখনকার কার্বন ডাই অক্সাইড লেভেলে এসে পৌঁছায়। বিবর্তনের মাধ্যমে প্ল্যান্টগুলোর আকার পরিবর্তন করে গাছে রূপ নেয়ার ফলেই কার্বন ফাই অক্সাইড লেভেলের এই নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছিল। কারন গাছেরা সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে তাদের টিস্যু তৈরি করতে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে। এছাড়া মাটি গঠন প্রক্রিয়া বা সয়েল ফর্মিং প্রোসেসের স্বারাও এটা ত্বরান্বিত হয়েছিল।"

যে গাছগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে সেগুলো আর্দ্র এলাকায় বৃদ্ধি পেয়েছিল। আর সেই অঞ্চলটি খুব দ্রুত সরে যাওয়া বেসিনের উপর ছিল। এই বৈশিষ্ট্যগুলোর সাথে উচ্চ ঘন বনাঞ্চল মিলে এরা অনেক শক্তিশালী সয়েল ওয়েদারিং বা মাটি ক্ষয় ঘটিয়েছিল। এই ব্যাপারটা Dr. Berry এর আমেরিকান কলিগদের সাথে মিলে করা আগের গবেষণায় পাওয়া ফল থেকেও বেশি।

Dr. Berry বলেন, "এই ব্যাপারটা বলছে এদের বিবর্তিত হবার সাথে সাথেই ফরেস্ট প্ল্যান্ট টাইপের জিওডাইভার্সিটি এবং ইকোলজি তৈরি হয়ে গিয়েছিল।" অর্থাৎ এই গাছগুলোর বিবর্তিত হওয়ার খুব কম সময়ের মধ্যে বনে বনে বিভিন্ন ধরণের গাছ এসে যায় এবং তাদের মধ্যে বাস্তুসংস্থান তৈরি হয়ে যায়।

এই গবেষণাটি Geology জার্নালে প্রকাশিত হয়।

http://geology.gsapubs.org/content/43/12/1043
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৫
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×