র্যাগ ডে : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্ববৃহৎ বার্ষিক অনুষ্ঠানের নাম 'র্যাগ ডে'। প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের বিদায়ী ছাত্রছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যামপাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয় র্যাগ ডে আয়োজনের মধ্য দিয়ে। ফলে র্যাগ ডে উপলক্ষে প্রায় মাসব্যাপী ক্যামপাস সাজে এক অন্যরকম সাজে।
ক্যামপাস জুড়ে সাজ সাজ রব : র্যাগ ডে উপলক্ষে প্রায় 5/6 দিনের জন্য ক্যামপাস কে সাজানো হয় অন্যরকম সাজে। আবাসিক হল, একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবনসহ ক্যামপাসের প্রধান প্রধান সড়কের দু'পাশের গাছগুলোকে সাজানো হয় রঙ-বেরঙের লাইটিং দিয়ে। সড়কগুলোতে অগ্ধকন করা হয় বিচিত্র সব আলপনা। নানা ধরনের ব্যানার-ফেসটুনে ক্যামপাস হয়ে ওঠে প্রাণবনত।
রাতের ক্যামপাস : রাতের ক্যামপাস ও দিনের ক্যামপাস এর মধ্যে দেখা দেয় বিস্তর পার্থক্য। নানারকম আলোর ঝলকানিতে রাতের ক্যামপাস ধরা দেয় বিচিত্র সাজে। সড়কগুলোর দু'পাশে গাছের গায়ে জড়িয়ে থাকা লাইটগুলো জ্বল জ্বল করে অন্যরকম পরিচয়ে পরিচিত হয়। রাত এলেই শুরু হয় আবাসিক হলগুলোতে রঙ ও পানি খেলা। আর এ খেলার জন্য বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো খানজাহান আলী হল। রাতে ছাত্ররা মেইন গেটের উপরে ও করিডোরগুলোতে রঙ-পানি নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। এ সময় কোনো ছাত্র হলে ঢোকার চেষটা করলেই উপর থেকে রঙ-পানি দিয়ে ভিজিয়ে দেওয়া হয। মুহূর্তেই শুরু হয়ে যায় হাসি, করতালি ও আনন্দের জোয়ার।
কনসার্ট : বরাবরই র্যাগ ডে'র মহৃল আকর্ষণ থাকে কনসার্টকে ঘিরে। এ বছর এ আকর্ষণ আরো বেশি ছিল। ডিজুসের সৌজন্যে খুলনায় প্রথমবারের মতো কনসার্ট করতে আসে দেশের অন্যতম সেরা ব্যান্ডদল মাইলস। 22 সেপ্টেম্বর শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয় এ কনসার্ট। প্রবল বর্ষণকে উপেক্ষা করে তারুণ্যের বাঁধভাঙা জোয়ারে এদিন মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যামপাস। এ সময় একদিকে প্রবল বর্ষণ, অন্যদিকে ছাত্রছাত্রীদের বাঁধভাঙ্গা আনন্দের জোয়ার সবমিলিয়ে ক্যামপাস হয়ে উঠেছিল অন্যরকম প্রাণবনত। কনসার্ট উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্দ্বরে ভিড়ের চাপে পা ফেলার জায়গাটুকু অবশিষট ছিল না। শরতের বর্ষণসিত্ত বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে দুপুর থেকেই ছাত্রছাত্রী ও তরুণ-তরুণীরা কনসার্টস্থলে হাজির হতে থাকে।
র্যাগ ডে'র প্রথম দিন : 21 সেপ্টেম্বর বৃহসপতিবার ছিল র্যাগ ডে'র প্রথম দিন। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় একাডেমিক ভবনের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় 'পাসিং আউট ফেসটিভ্যাল-2006'। 'এক সঙ্গে আগামীর পথে' স্লেলাগানকে সামনে রেখে এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দু'দিনব্যাপী র্যাগ ডে'র আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম।
র্যাগ-ডে'র শেষ দিন : 22 সেপ্টেম্বর শুক্রবার ছিল র্যাগ ডে'র শেষ দিন। সকালে র্যালি ও নগরীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে পরিবেশিত হয় মাইলসের কনসার্ট। দিনভর প্রবল বৃষটি সত্ত্বেও প্রতিটি অনুষ্ঠান সবার উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
সমাপনী : শুক্রবার কনসার্টের মধ্য দিয়ে শেষ হয় র্যাগ ডে'র সব আয়োজন। র্যাগ ডে'র শেষে বিদায়ী ছাত্রছাত্রীদের সবাইকে কিছুটা বিষন্ন মনে হলো। দু'দিনের আনন্দ-উল্ক্নাস কিছুটা নীরব হয়ে গেল। চার বছর ক্যামপাস জীবনের স্মৃতিগুলো তাদের তাড়া করছে বলে জানালেন বিদায়ী ছাত্র অনেকেই। সয়েল সায়েন্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্ররা অনেকেই বললেন, সিনিয়র ভাইয়া ও আপুদের বিদায় জানাতে কষট হচ্ছে।
*সমকাল*

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


