এদিকে গতরাতে বিবিসি জানায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে বিচারপতি কে এম হাসানকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ যে প্রসত্দাব তা প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে বিএনপির নেতারা বলেছেন। বিবিসি আরো জানায়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের কাছে বিচারপতি কে এম হাসানের প্রশ্নে ছাড় দিয়ে নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি পুনর্গঠনের প্রসত্দাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন। কিন' জলিল বলেন, তারা আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের প্রশ্নে সমঝোতা চান।
সংবিধান অনুযায়ী সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানেরই হওয়ার কথা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। কিন' প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগসহ ক্ষমতাসীন জোটের বাইরের দলগুলো এ পদে তাকে মেনে নিচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, কে এম হাসান বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তিনি এ দলের আনত্দর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য একবার দলীয় মনোনয়নও চেয়েছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনির ঘনিষ্ঠ আত্মীয় এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় বিব্রত বোধ করায় এ মামলার বিচারকাজ বিঘি্নত হয়। সবচেয়ে বড়ো অভিযোগ, জোট সরকারের ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিঙের নীলনকশার অংশ হিসেবে দলীয় লোক কে এম হাসানকে প্রধান উপদেষ্টা করতে 2004 সালে সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা 65 বছর থেকে
বাড়িয়ে 67 বছর করা হয়।
এসব কারণে বিচারপতি কে এম হাসানকে প্রধান উপদেষ্টা পদে কোনোভাবেই মেনে নিচ্ছেনা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন 14 দল। তারা চায় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করা হোক। সংস্কার প্রশ্নে চলমান সংলাপে তাই কে এম হাসান প্রসঙ্গেই ঘুরপাক খাচ্ছিল আলোচনা। অবশেষে গত সোমবার আব্দুল জলিল ও মান্নান ভুঁইয়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত 5ম দফা সংলাপে পাওয়া গেলো অগ্রগতির আভাস। বিশ্বসত্দ সূত্রে জানা গেছে, কে এম হাসান প্রশ্নে ছাড় দিতে রাজি হয়েছে বিএনপি। অবশ্য এখনো তা নির্ভর করছে দু দলের প্রধান দুই নেত্রীর সিদ্ধানত্দের ওপর। সংলাপ শেষে দুনেতা যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সমঝোতায় উপনীত হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, দুদলের দুই শীর্ষ নেত্রীর অনুমোদন পেলে দেশবাসীকে সুসংবাদ জানাতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। আগামী 22 অক্টোবরের মধ্যেই দেশে ফিরবেন তারা। 23 অক্টোবর অর্থাৎ ঈদের আগের দিন আবারো বৈঠকে বসবেন বিএনপি মহাসচিব ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। ততোক্ষণে যদি তারা পেয়ে যান দুই শীর্ষ নেত্রীর গ্রিন সিগন্যাল তাহলেই বিদায় ঘণ্টা বেজে উঠবে বিচারপতি কে এম হাসানের। আর দেশবাসীর ঈদের আনন্দের সঙ্গে যুক্ত হবে রাজনৈতিক সংকট মোচনের বাড়তি আনন্দ।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, উভয়পক্ষে সমঝোতা হলেও 23 অক্টোবর এ ব্যাপারে ঘোষণা নাও আসতে পারে। কে এম হাসানের পরিবর্তে সকল দলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির ব্যাপারে একমত হওয়া এবং তাকে এ পদে বসানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরো কিছু সময় লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে সরকারের মেয়াদ পূর্তির আগে আরেক দফা সংলাপে বসতে হতে পারে দুনেতাকে। অনত্দত বিএনপি সংলাপ প্রক্রিয়াকে তাদের ক্ষমতার মেয়াদের শেষ দিনটি পর্যনত্দ টেনে নিতে চায় বলে পর্যবেক্ষক মহল ধারণা করছেন।
*ভোরের কাগজ**
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



