কোথাও কিছু নেই, হঠাৎ কোনো লোককে লক্ষ্য করে ছুটে আসে একের পর এক পাথর_ এ কেমন ঘটনা? শহৃন্য থেকে এই পাথর নিক্ষেপের ঘটনাটা ঘটেছিল সুমাত্রায়।
এ ব্যাপারটা নিয়ে অনেকদিন গবেষণা করেছিলেন বিখ্যাত ভূবিদ, জীববিদ, বিজ্ঞানী ইভান স্যান্ডারসন। উনিশ শ' তেষট্টির সেপ্টেল্টল্ফ্বরের 'ফেট' ম্যাগাজিনে তার একটা আর্টিকেল বেরিয়েছিল এই উড়নস্ন পাথর সল্ফঙ্র্কে। তিনি লিখেছিলেন, 'কোনো নিয়মকানুন মানে না এই উড়নস্ন পাথর। যখন-তখন যে কোনো দিক থেকে পাথর এসে হাজির হওয়া, শহৃন্যে ভেসে থাকা, ওপর দিকে ছুটে যাওয়া, কিংবা মাটিতে পড়া, বন্দুকের গুলির মতো কারো দিকে ছুটে আসা_ এসব ঘটতে দেখেছি আমি। মাধ্যাকর্ষণের স্ট্বাভাবিক সহৃত্র এরা মানে না। নিজের ওজনের তুলনায় যত জোরে পড়া উচিত তারচেয়ে হয় আস্টেস্ন কিংবা জোরে পড়ে মাটিতে। নিউটনের কোনো সহৃত্রই মানে না এই উড়নস্ন পাথর।' ইভান স্যান্ডারসন প্রশম্ন করেছেন, 'তাহলে কোন সহৃত্র এরা মানে?' বলাবাহুল্য এর কোনো উত্তরই তিনি নিজেও পাননি, অন্য কারো কাছ থেকেও পাননি। উড়নস্ন পাথরের একটা কাহিনী একবার বলেছিলেন স্যান্ডারসন। তার ভাষায়ই শোনা যাক কাহিনীটা : উনিশ শ' আটাশ সাল, সুমাত্রায় এক বল্পব্দুর বাড়ির দাওয়ায় বসে, বল্পব্দু আর বল্পব্দুপত্দম্নীর সঙ্গে আলাপ করছি। সল্পব্দ্যা হয়ে এসেছে। হঠাৎ কোত্থেকে ছোট্ট একটা কালো পাথর এসে পড়ল আমার পায়ের কাছে। প্রথমে পাত্তা দিলাম না। কোন দুষদ্বু ছেলে হয়তো ছুড়ে মেরেছে। কিন্তু তারপরেই একটা একটা করে আরো পাথর এসে পড়তে লাগল পায়ের কাছে। পড়েই গড়িয়ে চলে যাচ্ছে পাথরগুলো দেয়ালের নিচে। 'কে ছুড়ছে ওই পাথর?' জিজ্ঞেস করলাম বল্পব্দুকে। বল্পব্দু বলল, 'কে যে ছুড়ছে জানি না, অনেক খুঁজেও হদিস মেলেনি। তবে এটুকু জানি, ওই পাথর ছোড়াছুড়ি চলবে সারারাত ধরে। তবে ভয় নেই, কারো গায়ে লাগবে না। আজ পর্যনস্ন লাগেনি কখনো।'
একটানা পাথর পড়ার ঠুকঠাক আওয়াজ শুনে ঘরের ভেতর থেকে বেরিয়ে এলেন আরো আধডজন মেহমান। আমার মতোই এরাও বেড়াতে এসেছেন এখানে। গৃহস্ট্বামীর কাছে জানতে চাইলাম, কে, কেন পাথর ছুড়ছে এভাবে? তিনিই বা নীরব দর্শকের মতো এসব বরদাশত করেন কেন? তার কি লোকজন নেই বা কোনো ক্ষমতা নেই যাতে ওই দুষদ্বু লোকগুলোকে ধরে আচ্ছামতো ঠেঙিয়ে ওদের পাথর ছোড়া বল্পব্দ করা যায়? ইতিমধ্যেই আরো কয়েকটা পাথর এসে পড়ছে আমাদের আশপাশে।
আমাদের কথার জবাব না দিয়ে একটা অদ্ভুত কা- করলেন হঠাৎ গৃহস্ট্বামী। কয়েকটা পাথর কুড়িয়ে নিয়ে তাতে সাদা চকের দাগ দিয়ে দিলেন। তারপর একটা করে দাগ দেওয়া পাথর আমাদের হাতে দিয়ে, যেদিক থেকে পাথর আসছে সেদিকে ছুড়ে দিতে বললেন। যতদহৃর সল্ফ্ভব জোরে যার যার পাথর ছুড়ে ফেললাম আমরা। বাগানটা বিশাল। বহুদহৃর পর্যনস্ন সমান করে ছাঁটা ঘাসে ঢাকা লন, লনের ওপারে ঘন ঝোপঝাড়, তারপরেই গ্রীষ্ফ্মম-লীয় গাছপালার ঘন জঙ্গল। গায়ের জোরে ছুড়েও একটা পাথরও লন পার করাতে পারলাম না আমরা। বড়জোর একটা মিনিট অপেক্ষা করতে হলো আমাদের। তারপরই আমাদের ছুড়ে দেওয়া পাথরগুলো ফেরত আসতে থাকল আবার।
অবাক কা-! ঝোপঝাড়গুলোর ওপারে তো কাউকে দেখা যাচ্ছে না। তাহলে পাথরগুলো ফেরত ছুড়ল কে? ভূতে নাকি? কিন্তু ভূতপ্রেতে বিশ্বাস করেন না স্যান্ডারসন, করেন না কোনো বিজ্ঞানীই। পাথর ছোড়ার অন্য একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। নিশ্চয়ই তার বল্পব্দুর বাগানের ওই জায়গায় মাঝে মাঝে চলে আসে ইন্টার-ডাইমেনশনাল ডোর। বোধহয় অত্যনস্ন শক্তিশালী কোনো ম্যাগনেটিক ফিল্ড কাজ করছে ওখানে। যার আকর্ষণে ঘুরেফিরেই চলে আসছে অদৃশ্য দরজাটা। হয়তো দরজার ওপারেই আছে কেউ। মজা করার জন্য পাথর ছুড়ে মারে পৃথিবীর মানুষের দিকে।
কিন্তু আসলেই কি তাই? আসলেই কি আরেকটা অদৃশ্য পৃথিবী আছে আমাদেরই আশপাশে কোথাও? ওই শক্তিশালী ম্যাগনেটিক ফিল্ড কি রয়েছে পৃথিবীর বিভিল্পম্ন জায়গায়? এর ফলে মাঝে মাঝেই ঘুরে-ফিরে আসছে ওখানে একটা ইন্টার-ডাইমেনশনাল ডোর? যার ভেতর দিয়ে অনায়াসে ঢুকে পড়ছে মানুষ? চলে যাচ্ছে অজানা আরেক পৃথিবীতে?
প্রশম্নগুলো বারবার খুুঁচিয়ে চলে মানুষের মনকে। কিন্তু উত্তরটা খুঁজে পাওয়া যায় না কিছুতেই। আসলে হয়তো জটিল কিংবা অতি সহজ কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে এর। কিন্তু যতক্ষণ পর্যনস্ন না সেই ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে, কিংবা প্রমাণ করা যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যনস্ন মানুষ একে ভুতুড়ে ঘটনা বলেই ভাবতে থাকবে!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



