রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাট জমতে শুরু করেছে। বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। দূর-দূরান- থেকে ট্রাক ও ট্রলার ভর্তি করে গরু-ছাগল নিয়ে আসছেন বেপারিরা। গাবতলী হাট গরু, ছাগল ও মহিষে ভরে গেছে। এসব পশুর পাশাপাশি কোরবানির জন্য আনা হয়েছে কিছু দুম্বা ও উট। ভেতরে জায়গা হয় না বলে বহু গরু হাটের বাইরে রাস-ায় রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে হাটে প্রচুর দর্শক দেখা যায়। এর মধ্যে অনেকে কিনেছেনও। গাবতলীতে গরু কিনলে বোনাস হিসেবে চাপাতি (এক প্রকার দা) দিচ্ছেন কোন কোন বিক্রেতা। হাটের মাঝখানে বড় গরুর ছাউনি। এখানে ফরিদপুরের নগরকান্দার ভবুদিয়া গ্রামের জামাল মিয়া বড় সাইজের অস্ট্রেলিয়ান গরু এনেছেন পাঁচটি। এগুলোর মধ্যে প্রায় 25 মণ ওজনের বড়টির দাম হাঁকছেন 12 লাখ টাকা। অন্যগুলোর দাম হাঁকছেন 5 থেকে 10 লাখ টাকা। জামাল বলেন, 12 লাখ টাকার গরুর দাম বুধবার এক ক্রেতা 5 লাখ টাকা বলে গেছেন। গাবতলী হাটের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রয়েছে উটের ছাউনি। গতকাল ওই ছাউনিতে ছয় থেকে চৌদ্দ মণ ওজনের আটটি উট দেখা গেছে। ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বড় উটের দাম 1 লাখ 85 হাজার ও ছোটটি 1 লাখ 30 হাজার টাকা চাইছেন। তিনি বলেন, সীমান-ে কড়াকড়ির কারণে ভারত থেকে গরু কিংবা উট বেশি আসতে পারছে না। এছাড়া গরু আনতে পুলিশকে পথে পথে চাঁদা দিতে হচ্ছে। তাই দাম বেশি। উটের ছাউনিতেই রাখা হয়েছে দুটি দুম্বা। দুম্বার মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, তিন বছর লালন-পালন করার পর এবার ছয়টি দুম্বা এনেছেন। বুধবার চারটি দুম্বা 2 লাখ 10 হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। গতকাল 60 কেজি ওজনের দুম্বার দাম তিনি 70 হাজার ও 40 কেজি ওজনেরটি 50 হাজার টাকা হাঁকেন। ইজারাদার অফিসের কাছে অপর একটি ছাউনির নিচে ছাগল রাখা হয়েছে। নোয়াখালীর মাইজদীর মোঃ সেলিমের দাবি, তিনিই সবচেয়ে বড় ছাগলের মালিক। এখন যে ছাগলগুলো রয়েছে তার মধ্যে বড়টির ওজন হবে প্রায় 50 কেজি। এটার দাম তিনি হাঁকছেন 32 হাজার টাকা। তবে ছাগলটি কিছুতেই 18 হাজার টাকার নিচে বিক্রি করবেন না বলে জানান তিনি। হাটের মাঝখানে মহিষ রাখার স্থানে প্রচুর মহিষ থাকলেও ক্রেতা নেই। ব্যবসায়ী লোকমান জানান, মহিষের ক্রেতারা মাংস ব্যবসায়ী বলে ঈদের আগে বিক্রি হয় না। তবে কোরবানি দেয়ার জন্য কেউ কেউ শখ করে মহিষ কেনেন।
নগরীর দ্বিতীয় বৃহত্তম হাট বসেছে নয়াবাজারে। ডিসিসি এ হাটটি আরমানীটোলা মাঠে বসার অনুমোদন দিলেও প্রভাবশালীরা জোর করে দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতু বন্ধ করে প্রধান সড়কে বসে গেছে। প্রধান সড়ক বন্ধ হওয়ায় হাজার হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে বিকল্প পথে চলাচল করতে হচ্ছে। গতকাল নয়াবাজার প্রধান সড়কে গরু তোলা হয়েছে। আশপাশ এলাকার অলিগলিতেও গরু-ছাগল রাখা হয়েছে। নয়াবাজারে কোরবানির পশুর দাম তুলনামূলক বেশি। তালতলা হাটে গতকাল দুপুরে শতাধিক এবং পঙ্গু হাসপাতালের বিপরীতে আগারগাঁও হাটে দুই শতাধিক গরু দেখা গেছে। তবে ক্রেতা তেমন ছিল না। গরুর দাম এ হাটেও বেশি। ইজারাদারদের লোকজন বলেছেন, শনিবারের মধ্যে পশুর দাম নেমে আসবে। তখন বাজারও জমবে।
এছাড়া খিলক্ষেত টানপাড়া, ঝিগাতলা-হাজারীবাগ মাঠ, রহমতগঞ্জ মাঠ, ধূপখোলা মাঠ, হোসেনি দালান রোড, কমলাপুর মাঠ, উত্তরা আজমপুর, মেরাদিয়া বাজার, পোস-গোলা আলম মার্কেট, শাহজাহানপুরে সানরাইজ ক্লাবের মাঠ এবং গোলাপবাগ মাঠ সংলগ্ন 85 নম্বর ওয়ার্ডের আউটফল এলাকায় ডিসিসির স্টাফ কোয়ার্টারের খালি জায়গায় বসা হাটেও গতকাল বেশকিছু গরু উঠেছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



