somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তীব্র তাপদাহ থেকে বাঁচার একমাত্র স্থায়ী উপায় বৃক্ষ রোপণ ও তার যত্ন সাধন

১৮ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৭:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তীব্র তাপদাহ নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বৃক্ষ নিধনযজ্ঞ নিয়ে কথা বলতেই হয়। বৃক্ষ নিধনযজ্ঞ যে শুধু সরকার করে যাচ্ছে তা কিন্তু নয়। বৃক্ষ নিধনযজ্ঞে আমরা সকলেই কমবেশি যুক্ত হয়ে আছি। কেউ হয়ত নিধনযজ্ঞে সরাসরি যুক্ত থেকে কিংবা নিরবতার মাধ্যমে সরকারকে সমর্থন করে। কিন্তু ফলস্বরূপ এই নিধনযজ্ঞের কুফল সবাইকে বহন করতে হচ্ছে এবং আগামীতেও করতে হবে।

শিশুকাল থেকেই আমাদের শিখানো হচ্ছে বৃক্ষের উপকারিতা। পাঠ্যবইয়ে আমরা পেয়েছি, বৃক্ষ থেকে তৈরি অক্সিজেনই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। এছাড়াও আমরা জানি বৃক্ষ নিজ বাষ্পমোচনের মাধ্যমে বাতাসে কিছু জলীয় বাষ্প ছাড়ে, যা বাতাসকে কিছুটা ঠান্ডা করে পাশাপাশি বৃষ্টির পক্ষে সহায়ক অবস্থা তৈরি করতে বৃক্ষের বিকল্প নেই। এছাড়াও বৃক্ষের অনেক উপকার রয়েছে (জানতে এখানে ক্লিক করুন)। এতোসব উপকার জানার পরও আমরা নিধনযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছি।

সরকার জনগণের বিভিন্ন প্রয়োজনে গাছ কেটে উন্নয়নের গতি চালু রেখেছে। সেটা রাস্তা সম্প্রসারণ, ব্রিজ তৈরি, সরকারি আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন ইত্যাদি সুবিধার্থে। একইভাবে জনগণ বাড়িঘর তৈরি সহ নিজেদের বিভিন্ন প্রয়োজনে গাছ কেটে যাচ্ছে। এখানে আমরা জরুরি প্রয়োজনে কাটা গাছগুলোর কথা বলছি। এই কাটা গাছগুলোর বিপরীতে যখন নতুন গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে সরকার ও জনগনকে মুর্খতার অবস্থান ধরে রাখতে দেখা যায়। (একটি বড় গাছ কাটার পর সেই জায়গার অক্সিজেন শূন্যতা দূর করে পূর্বের অক্সিজেন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা না করা অবশ্যই মূর্খতা।) তখনই তাদের এমন গাছ কাটাকে নিধনযজ্ঞ বলতে বাধ্য। কারণ প্রয়োজনবোধে একদিকে গাছ কেটে উপকার করা হলেও অন্য দিকে পর্যাপ্ত নতুন গাছ না লাগানোর কারণে করা হয় মারাত্মক ক্ষতি। তাছাড়া রাষ্ট্রিয় ব্যক্তিবর্গ ও প্রভাবশালী মহলের সুবিধার জন্য অপ্রয়োজনে অনেক গাছ কাটতে দেখা গেছে। সব মিলিয়ে এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি এবং বন্যার মত দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যার্থতার পেছনে এই বৃক্ষ নিধনযজ্ঞ গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

সম্প্রতি দেশব্যাপি তীব্র তাপদাহের কারণে জনজীবন হয়ে পড়েছে চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি। এই সমস্যা যে কেবল ২০২৩ সালের জন্য তা কিন্তু নয়। এরকম দুর্ভোগ আমাদেরকে পোহাতে হবে আরো অনেক বছর। যদি এরকম চলতে থাকা বৃক্ষ নিধনযজ্ঞ বন্ধ না করা হয়, তবে সামনে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে চরম থেকে সর্বোচ্চ চরম পর্যায়ের দুর্ভোগ। বন্যায় এতো ক্ষয়ক্ষতির কারণ যেমন বড় বড় বৃক্ষ শূন্যতা, তেমনি তীব্র তাপদাহে যে একটু শিতল ছায়া ও ঠান্ডা বাতাস পাওয়ার প্রয়োজন তাও আশা করাটা হয়ে যাবে দুঃস্বপ্ন। তাই বড় বড় বৃক্ষ একেবারে শুকিয়ে না গেলে তা কাটা থেকে নিজে বিরত থাকার পাশাপাশি অন্যদেরকেও বড় বড় বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা বুঝানোর মাধ্যমে বৃক্ষ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।

এটা মোটেও কোন কঠিন কাজ নয়। যদি আমরা নিজেরা নিজেদের তত্বাবধানে থাকা বড় বড় গাছগুলো না কেটে বরং নতুন আরো গাছ লাগাই এবং সেগুলো রক্ষায় যথেষ্ট সচেতন হই, তবেই আমরা আমাদের জীবনকে তীব্র তাপদাহ ও বন্যার মত মারাত্মক সমস্যাগুলো থেকে রক্ষা করতে পারি। এটা এখন গ্রামেও প্রয়োজন। রাজধানী শহর থেকে নিয়ে জেলা শহর পর্যন্ত সব জায়গায় এখন অক্সিজেন শূন্যতা। গ্রামেও আর পুরনো গাছ দেখা যাচ্ছে না। সুতরাং শহর গ্রাম নির্বিশেষে সব জায়গায় বেশি বেশি করে গাছ লাগানো ও যত্ন নেওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। তাই আসুন, আর দেরি না করে গাছ লাগাই, গাছের যত্ন নেই এবং পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে নিজেদের রক্ষা করি।


ছবি: ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান রক্ষায় এগিয়ে আসুন!

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:৩৪
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×