somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নাঈম মুছা
সুবোধ আমি। তবে পলায়নরত। কারন সময় আমার পক্ষে না। জীবন আমার সঙ্গে না। আগে কোথাও থিতু হই। তখন পরিচয়টা জানাব। ধন্যবাদ এখানে ঢু মারার জন্য। মোর নির্জীব ব্লগবাড়িতে আপনাকে স্বাগতম।

বিপদে কারও প্রতি সহানুভূতি দেখানোর গুরুত্ব ও বিপরীতে নির্মম বাস্তবতা

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় বছরের শুরুর দিকে ক্লাসের ফার্স্ট বয় আমার নিকটতম বন্ধু আমাকে হালকা অভিমানের সুরে বলেছিল " দেখো, ক্লাসের প্রায় সবাই কিন্তু বইয়ে মলাট লাগিয়ে ফেলেছে তুমি কিন্তু এখনও লাগাওনি, কালকে মলাট না লাগিয়ে ক্লাসে আসলে তোমার সাথে আমার আর কোনো বন্ধুত্ব থাকবে না। আর তুমি এটা লাগিয়েই দেখ তোমার বইগুলো কত সুন্দর দেখাবে তা তুমি নিজেও জাননা"। পরদিন আমি ঠিকই বইয়ে মলাট লাগিয়ে এনেছিলাম। হতে পারে তার সাথে বন্ধুত্ব হারানোর ভয়ে নচেৎ তার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে।
.
আমার রক্তের সম্পর্কের এক ভাই, উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সময় নির্বাচনী পরিক্ষায় পদার্থবিজ্ঞানে যথেষ্ট কম নাম্বার পেয়ে ভেঙে পড়েছিলেন। সেটা দেখে তার কোর্স শিক্ষক তাকে রুমে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন সময় এখনও শেষ হয়নি তুমি চেষ্টা করো তাহলে অবশ্যই সফল হতে পারবে। সেই মূহুর্তে স্যারের বলা কথাগুলো তাকে সামনে আগাতে কতটুকু সাহায্য করেছে সেটা আজ কয় বছর পর তার নিজের চেম্বারের উপর বড় করে লেখা ডা. যোবায়ের মুমিন লেখাটা চোখের সামনে ভেসে উঠলেই বুঝতে পারি।
.
পরিচিত ইকোনমিক্সে পড়ুয়া আরেক ভাই দ্বিতীয় বর্ষের ইয়ার ফাইনালের আগে পারিবারিক কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। সে সময় পরিক্ষার আগে যখন তিনি সম্পূর্ণভাবে অপ্রস্তুত ছিলেন পরিক্ষার মত এমন একটা বিষয়ের মুখোমুখি হতে ঠিক সেই মূহুর্তেই লোক প্রশাসনে পড়ুয়া আরেক ভাই তার পাশে এসে দাড়িয়েছিলেন, সহযোগিতার উদার হাত সম্প্রসারিত করেছিলেন। সিনিয়র ভাইদের কাছ থেকে নোটস সংগ্রহ করা, গাণিতিক সমস্যাগুলো বুঝে এসে তাকে বুঝিয়ে দেওয়ার মত এমন মহৎ সব কাজের মাধ্যমে বিপদে তার পাশে দাড়িয়েছিলেন। পরিণতিতে যার অবস্থান হওয়ার কথা ছিল নিশ্চিত ফেল্টুসদের কাতারে, সেই ভাই মাত্র কয়েক মার্কসের জন্যে ফার্স্টক্লাসটা মিস করেন!
...........................
আমরা অধিকাংশই জীবনের একটি সন্ধি:ক্ষণে উপনীত হই যখন নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে অসহায় বলে মনে হয়। এমন মূহুর্তে আমাদের জন্য একটু উৎসাহ, অনুপ্রেরণা যে কতবড় পটপরিবর্তনের কারণ হতে পারে সেটি শুধুমাত্র আমরা যারা উপলব্ধি করতে পেরেছি তারাই বলতে পারি। আর যারা সেইসব সময়ে নিজের পাশে কাউকে পাইনি তারা হয়ত পরবর্তীকালে নিজেদেরকে ব্যর্থতার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে আবিষ্কার করেছি। খুব কম সংখ্যকই এ থেকে উত্তরণের পথ খুজে বের করতে পারি। বিপদসংকুল পরিবেশে আপনার পরিপার্শ্বের যে কেউই এই গুরুদ্বায়িত্ব পালন করতে পারেন। এর জন্য শুধুমাত্র প্রয়োজন নিঃস্বার্থভাবে কাউকে সহযোগিতা করার মনোভাব।
.
হতে পারে আপনার এই সামান্যতম মানবিকতা বোধ কারো জীবনের সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌছিয়ে দেওয়ার বাহক হবে। হয়ত ততক্ষণে সে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে উঠে সৃষ্টিশীলতার মহানন্দে মেতে উঠবে। তার সৃষ্টিশীলতা তাকে দেখে সোল্লাসে চেঁচিয়ে উঠবে, চেঁচিয়ে উঠবে তার পারঙ্গমতা দেখে। আর সে মনে মনে আপনাকে অনবরত গুণকীর্তন করেই চলবে। শ্রদ্ধায় বাহুদ্বয় সম্প্রসারিত করে শূন্যস্থানে আপনার অস্তিত্ব অনুভব করতে অতিশয় আকুল হয়ে থাকবে। জীবন হয়ে উঠবে প্রশান্তিময়। পরিশেষে হিম্মত যোগানো সেই সকল মহামানবের জন্যে সুদীর্ঘ এক সেকেন্ড নিরবতা!!!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৫
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×