১৯৫৬ সালের ৩রা আগস্ট “মুখ ও মুখোশ” চলচ্চিত্রের মাধমে যাত্রা শুরু হয় পুর্নাঙ্গ বাংলা চলচ্চিত্রের।বাংলা চলচ্চিত্রের এই সূদীর্ঘ ৬৪ বছরের পথচলায় কি প্রাপ্তি আর কি ই বা সমস্যা তাই বের করার চেষ্টা করেছি ধারাবাহিক এই লেখায়।
পৃথিবী সবসময় সময়ের সাথে সাথে আরো আধুনিক হয়ে উঠছে সেই সাথে সাথে পরিবর্তন হচ্ছে মানুষের বিনোদনের উপকরনের।এই পরিবর্তনের হাত ধরে বিশ্বের চলচ্চিত্রেও এসেছে আমূল পরিবর্তন।সব দেশের চলচ্চিত্রই পুর্বের থেকে ভালো করছে আর আমাদের চলচ্চিত্র দিন দিন ভালোর পরিবর্তে খারাপের দিকে যাচ্ছে।বিষয়টি দুঃখজনক হলেও সত্য স্বাধিনতা পূর্ববর্তী সময়ে ও পরবর্তী এক দশকে যে ধরনের চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে,বর্তমান সিনেমা গুলো তার তুলনায় শিশুসরূপ।সবাই বাচ্চা থেকে প্রাপ্ত বয়ষ্ক হয় কিন্তু বাংলা ছায়াছবি ম্যাচুরিটি থেকে বাচ্চা হচ্ছে।এমন একটা সময় ছিল যখন ভারতীয় ছায়াছবি আর আমাদের ছায়াছবির মাঝে গুনগত মানের তেমন একটা ব্যাবধান ছিল না,কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তারা এগিয়ে গিয়েছে সামনের দিকে আর আমাদের চলচ্চিত্র চলেছে পেছন দিকে।বেশ কয়েক মাস পুর্বে বাংলাদেশে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রচার প্রসঙ্গে একটি লেখায় জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ বাংলা চলচ্চিত্রকে “রসগোল্লা” বলে সম্বোধন করেছেন।যদিও তার পরিচালিত শ্রাবন মেঘের দিন,আগুনের পরশমনি ছাড়া বাকী ছবি গুলোও রসগোল্লার আওতায় ই পরে।রসগোল্লার তাও মিষ্টি হয় কিন্তু আমাদের বর্তমান বাংলা চলচ্চিত্রের কিছু হাতে গোনা চলচ্চিত্র ছাড়া বকী গুলোতে সেই মিষ্টি বেপারটিই নেই।তাই আমি রসগোল্লা না বলে গোল্লা বলাটাই শ্রেয় মনে করি।
তার এই বক্তব্য নিয়ে আমাদের চলচ্চিত্রের তথাকথিত বোদ্ধা ও জনপ্রিয় নির্মাতারা অনেক কথাই বললেন এবং একজন তো হুমায়ূন আহমেদের দেশপ্রেম নিয়েই প্রশ্ন উঠিয়েছিলেন।সবথেকে অবাক হয়ে যেটা লক্ষ্য করলাম তা হল তারা আসলেই যে গোল্লা বানায় তা তারা নিজেরাও জানেন এবং বুঝেন।কারন তারা হুমায়ূন আহমেদের কথার প্রতিবাদে নিজেদের ছবির মান নিয়ে এমন কোন যুক্তি দিতে পারে নি যা প্রমান করে তারা গোল্লা বানায় না।আসলে সে চেষ্টাটাই তারা করেনি তারা যা করেছে তা হল তাদেরটা তো গোল্লাই এখন হুমায়ূনের গুলোও গোল্লা প্রমানিত করা।আর তারা সবথেকে বেশি যে কাজটাতে পারদর্শিতা দেখিয়েছে তা হল অন্যের নাম বেছে খাওয়া ও বাজেটের উপর দোষ দিয়ে নিজেদের রক্ষা করা।বাংলা ছায়াছবি নিয়ে কেউ সমালোচনা করলেই তথাকথিত বোদ্ধাদের মুখথেকে বেরোয় –জহির রায়হান,খান আতা ছাড়াও আরো কিছু কিংবদন্তি পরিচালকের নাম।তারা বোঝাতে চায় যে এরাও তো বাংল চলচ্চিত্রই বানাত,তারা নিশ্চই গোল্লা বানায়নি।বর্তমান নির্মাতারা যে সকল কিংবদন্তি নির্মাতার নাম বলে তাদের কারো চলচ্চিত্র যদি তারা দেখে থাকে তাহলে তাদের আত্যহতা করা উচিৎ কারন তারা সেই যুগে যে ধরনের ছায়াছবি নির্মান করেছেন তা আধুনিক কালে এসেও বর্তমান নির্মাতারা তার ধারে কাছেও যেতে পারছে না।শুধু ধারেকাছে বললে ভুল হবে, জহির রায়হান খান আতাদের ছবি যদি থাকে পৃথিবী হয় তাহলে বর্তমান পরিচালকদের ছবি সৌরজগতের অন্য কোন গ্রহেও নেই তা হচ্ছে অন্যকোন নক্ষত্র।
তাদের আরেকটি অজুহাত হচ্ছে বাজেট।বাজেট মনে হয় না কোন প্রব্লেম কেননা এই বাজেটেও যে ভালো ছবি নির্মিত হচ্ছে না তা কিন্তু নয়,কিছু নির্মাতা মাঝে মাঝে খুব ভাল কিছু ছবি উপহার দিচ্ছেন,যদিও সংখ্যা খুবি কম।আর আমার মনে হয় না বাজেট বাড়ালে কোন লাভ হবে।এখন বাজেট কম তাই হিন্দি ছবর কোন ছোট অংশ বা গান নকল বা হুবহু কপি করলেও বাজেট বাড়লে তারা দেখা যাবে পুরা হিন্দি ছবিটাই কপি পেষ্ট মেরে রাখছে!
…………………………………………………।(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৩৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




