somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশে খাদ্যদ্রব্যের দাম কখনোই কমবে না .... জীবনেও না

০৮ ই এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত high populated একটি ছোট্ট ভূমিসম্পন্ন দেশ। এদেশের ইতিহাস খুবই রক্তাক্ত। আমরা গর্ব করতে পারি আমাদের দেশকে নিয়ে, কারণ আমাদের দেশের জন্ম এক রক্তাক্ত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। এই যুদ্ধ কোন জাতিগত বিভেদের যুদ্ধ ছিলনা, এই যুদ্ধ কোন গোত্রের অন্য গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ছিলনা, বরং এই যুদ্ধ ছিল একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্রের, একটি সুন্দর সাবলীল ভাষার।


আমরা সবই পেয়েছি। আজ আমরা বাস করছি সত্যিকারের স্বাধীন একটি দেশে। কিন্তু আসলেই কি আমরা স্বাধীন?

এর উত্তর অনেকে অনেকভাবে দেবেন। আমরা সেদিকে যাব না। স্বাধীনতার ত্রিশেরও বেশী বছর পর আজকের এই ছোট্ট ভূমিটিতে জন্ম নিচ্ছে হাজার হাজার 'বানোয়াট' সমস্যা। এই সব সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছি আমরাই। কখনোবা আমরা নই, আমাদেরই আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আপামর জনপদ।

একজন নাগরিকের জন্মগত অধিকার হচ্ছে খাদ্য ও বাসস্থান। আজ আমরা আলোচনা করব খাদ্য নিয়ে।

ভোজ্যতেলের মূল্য কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা ছিল অনেক দিন। তারপর হঠাৎই একদিন কোন এক অজ্ঞাত কারণে এই মূল্য লাগামহীন ঘোড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চললো। পঞ্চাশ থেকে পঞ্চান্ন, তারপর ছাপ্পান্ন, সাতান্ন, আটান্ন, উনষাট, ষাট! তেলের কেজি ষাট টাকা শুনেই দেশের হাজার হাজার মানুষের মাথায় বজ্রপাত ঘটেছিল। ভোজ্যতেল হচ্ছে এমন একটি দ্রব্য যার প্রয়োজন আমাদের দৈনন্দিন। হঠাৎই আমাদের সামনে যখন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশ করতে শুরু করলো যে, ভোজ্য তেল, চাল, ডাল ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়ছে, তখন আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছিল। কারণ, দ্রব্যমূল্যের সাথে সাথে কর্মজীবি মানুষের আয় বাড়ছিল না।

দ্রব্যমূল্য বাড়ায় সবচাইতে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা। কেননা, আত্নসম্মানবোধের কারণেই নিম্নমধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্তরা অন্যের কাছে চাইতেও পারে না, আবার না খেয়ে থাকতেও পারেনা।
সে যাই হোক, তেলের কেজি হলো আশি টাকা। এ নিয়ে সমগ্র বাংলাদেশেই তোড়পাড় শুরু হলো। রাজনীতিবিদগণ একে অপরকে দোষারোপেই লিপ্ত থাকলেন। কিন্তু খেয়াল করেছেন, তাদের প্রত্যেকেই কিন্তু একমত ছিলেন বা এখনো আছেন যে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি একটি ভয়াবহ সমস্যা।

কোন এক স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলে কোন এক বিশেষজ্ঞ সাক্ষাৎকারে বললেন, বাংলাদেশের মানুষকে একশত টাকায় তেল কিনে খাবার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তখন রাজনৈতিক নেতারা একথা নিয়ে তুমুল হৈ চৈ তুলেছিলেন। তখন তাঁরা বলতেন, তেলের কেজি একশত টাকা হলে দেশের দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসরত হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মারা পড়বে।

আজ তেলের কেজি একশত দশ থেকে একশত বিশ টাকা। আজ সেই রাজনৈতিকদের দাপট ততটা নেই। আজ কি হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে না? নাকি সকলের বেতন এতটাই বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে যে, চাল ডাল কিনে বলাকা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার পরও মানুষের কাছে হাজার হাজার টাকা রয়ে যাচ্ছে?!

আসলে এর কোনটাই ঘটেনি। চাল-তেলের দাম আকাশ ছুঁয়ে আকাশ কে পার করে গিয়েছে। আজ মানুষ ঠিকই খাবারের অভাবে ভুগছে। কিন্তু তাদের কথা কে জানে? কে-ই বা শুনবে তাদের কথা? যেই আমরা সেদিন তেলের কেজি একশত টাকা হবে শুনে লাফিয়ে উঠেছিলাম, আজ আমরা নীরব কেন? আজ তো আমরা তেল খাচ্ছি একশত ত্রিশ টাকায়।

মূলতঃ যারা বলতে পারতো, যারা আওয়াজ তুলতে পারতো, যারা সুন্দর একটি distribution system তৈরীর মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতো, তাঁরাই চুপচাপ বসে আছেন। কারণ, টাকার কোন অভাব তাদের নেই। আর যাই হোক, দৈনিক বাজার খরচ নিয়ে তাদের কোন চিন্তা করতে হয়না। তাঁরা শুধু চিন্তা করেন একটি আসনের!

আসুন, আমরা সবাই একতাবদ্ধ হই। দ্রব্যমূল্য আর কখনোই কমবে না একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। তাই দ্রব্যমূল্য যাতে আর একটুও না বাড়ে এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আবেদন করি। আমরা যারা সাংবাদিকতা পেশার সাথে জড়িত আছি, তাঁরা নিত্যনতুন প্রতিবেদন তৈরী করি সেই সব অসহায় মানুষদের উপর, যারা দু'বেলা খাবার পায়না। বরং, এক বেলার অল্প একটু খাবারের সংগ্রহেই ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে আমরা এতটুকু আশা তো অবশ্যই করতে পারি। তাই না?
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাগতম ইরান

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩

ইরানকে ধন্যবাদ। ইসরায়েলকে দাত ভাঙ্গা জবাব দেওয়ার জন্য।

হ্যাঁ, ইরানকে হয়তো এর জন্য মাসুল দেওয়া লাগবে। তবে, কোন দেশ অন্য দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপে করবে আর সেদেশ বসে থাকবে এটা কখনোই সুখকর... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৯




আমরা পৃথিবীর একমাত্র জাতী যারা নিজেদের স্বাধীনতার জন্য, নিজস্ব ভাষায় কথা বলার জন্য প্রাণ দিয়েছি। এখানে মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান চাকমা মারমা তথা উপজাতীরা সুখে শান্তিতে বসবাস করে। উপমহাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×