somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাণ্ডারি হুশিয়ার!!

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বারবার বলার চেষ্টা করেছি শাহবাগ আন্দোলনকে ঘিরে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। নিজেদের দাবীকে শাহবাগে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি বলে বিএনপি প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েই এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আওয়ামী লীগ নিজেদের আয়ত্তে রাখতে গিয়ে এই আন্দোলনকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। সুবিধাবাদী এরশাদ তো পুরো দেশটাকেই দু ভাগ করে ফেলেছেন। সর্বশেষ নাস্তিকতার দোহাই দিয়ে হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে শুরু হয়েছে একে চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার প্রস্তুতি।

শাহবাগ থেকে ফায়দা লুটতে আশা অনেক প্রগতিশীল(!) আজ এর থেকে দূরে সরে গেছে। তারা এসেই ছিল দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের তাগিদে। এখন আন্দোলনকারীদের পাশে আছে হাতেগোনা কিছু লোক যারা সত্যিকার অর্থেই তাদের আদর্শিক জায়গা থেকে এই আন্দোলনের সাথে একাত্ম। শেষ পর্যন্ত এরাই পাশে থাকবে। আর পাশে থাকবে এ দেশের সাধারণ মানুষ। যারা দলকানা নয়। যারা ক্ষমতার উচ্ছিষ্টের আসায় অন্যের শেখানো বুলি আওড়ে দিনযাপন করে না।

আজ ৫৬ দিনের মাথায় এসে শাহবাগ আন্দোলনকারীদের একটি বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নেয়া উচিত বলে মনে করি। আর তা হল ৯০ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত এ দেশে আমাদের নবী(সঃ) এবং ইসলামের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা কারীদের পক্ষাবলম্বন করার কোন যৌক্তিকতা নেই। ধর্ম বিশ্বাস যার যার নিজের, এটা যেমন ঠিক তেমনি কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অধিকার কারো নেই এটাও ঠিক। যারা এ কাজটি করেছেন বা করেন তারা অপরাধী। প্রচলিত আইনে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত। রামুতে যে তাণ্ডব চালান হয়েছিল তাও এমনই এক উস্কানীমুলক আচরণকে পুঁজি করে।

দীর্ঘ বেয়াল্লিশ বছর ধরে চালানো অপ তৎপরতার ফলে একটি জাতির লুপ্তপ্রায় জন্মের চেতনাকে যে তরুণ দল সার্থকতার সাথে ফিরিয়ে এনেছে। সেই তরুণ দল থাকবে সব কালিমার ঊর্ধ্বে এটাই কাম্য। এই তরুণ দল উজ্জীবিত করেছে গোটা জাতীকে। এ দেশের সব শ্রেণী পেশার মানুষ মনে প্রাণে চেয়েছে এই আন্দোলনের সার্থকতা। আজো চায়। একদিকে আমাদের নেতৃবৃন্দ তাদের প্রভুত্ব বজায় রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে যাদের বিরুদ্ধে গড়ে উঠেছে এই আন্দোলন তারা মরণ কামড় দিয়েছে একে শেষ করে দিতে। এ অবস্থায় এই আন্দোলনকে বাঁচিয়ে রাখতে কৌশলী হওয়া প্রয়োজন। শাহবাগ চত্বরকে সব সময় লোকে লোকারণ্য থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। তবে যে আলোক শিখাটি এখানে প্রজ্বলিত হয়েছে তাকে কোন ঝরেই নিভতে দেয়া চলবে না। প্রজন্ম চত্বরকে হতে হবে এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুখপাত্র। প্রয়োজনে এর নেতৃত্ব পরিবর্তিত হবে। মুখপাত্র বদল হবে কিন্তু আদর্শ ঠিক রাখা চাই। লক্ষে অবিচল থাকা চাই।

শাহবাগ চত্বর থেকে নাস্তিক ব্লগারের পক্ষাবলম্বনের কোন সুযোগ নেই। তবে হ্যা কিছু প্রশ্ন সঙ্গত কারনেই উঠছে। যেমন-

এই অপরাধ যখন সংগঠিত হয়েছে তখনই কেন এরা সোচ্চার হল না?

ইন্টারনেট উন্মুক্ত করে দেয়া হল। সহজলভ্য করে দেয়া হল। যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের কি প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছিল?

অপরাধিরা কি জানে তার একটি উস্কানী কতবড় সর্ব্বনাশ ডেকে আনতে পার?

যখন তারা প্রথম এই অপরাধের সাথে যুক্ত হল তখনই কি তাদের সতর্ক করা হয়েছিল?

যদি না হয়ে থাকে সে দায় কার?

আর প্রজন্ম চত্বরের সাথে সম্পৃক্ত কেউ যদি এই অপরাধ করেও থাকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে অভিযুক্ত হতে পারেন। তাঁর জন্য প্রজন্ম চত্বরই বা দায়ী হবে কেন?

প্রজন্ম চত্বর থেকে কি এ পর্যন্ত ধর্মীয় উস্কানিমূলক কোন বক্তব্য রাখা হয়েছে?

না প্রজন্ম চত্বর কাউকে নাস্তিক বানিয়েছে?

তথাপিও এদের পক্ষভূক্ত হয়ে সমগ্র জাতির বিরাগভাজন হয়ে একটি মহতী উদ্যোগকে বিনষ্ট করা হবে অপরিনামদর্শি সিদ্ধান্ত। যা নস্যাত করে দিতে পারে এ আন্দোলনের সকল অর্জন এবং সম্ভাবনা।

প্রজন্ম চত্বর তাঁর লক্ষ স্থির করে গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩’র মহাসমবেশ থেকে যে ছয় দফা দাবী ঘোষণা করেছিল তা হল:

১. ঘাতক জামাত শিবিরের হামলায় শহীদ রাজীব হায়দার, জাফর মুন্সী, বাহাদুর মিয়া, কিশোর রাসেল মাহমুদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আগামী ৭দিনের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে।
২. ২৬ শে মার্চের পূর্বে স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতক সন্ত্রাসী জামাত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যায় নেতৃত্বদানকারী জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সংশোধনী আইনের অধীনে অভিযোগ গঠন এবং নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
৩. অবিলম্বে যুদ্ধাপরাধী সংগঠনগুলোর আর্থিক উৎস, যেসব উৎস থেকে সকল প্রকার জঙ্গিবাদী, এবং দেশ বিরোধী তৎপরতার আর্থিক জোগান দেয়া হয়, সেগুলো চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে।
৪. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া গতিশীল ও অব্যাহত রাখতে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে স্থায়ী রূপ দিতে হবে।
৫. গণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাস ও তাণ্ডব বন্ধে অবিলম্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে সকল সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ গোপন আস্তানা সমূহ উৎখাত করতে হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এদের ভয়ংকর রূপ প্রকাশ করে দিতে হবে।
৬. যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষক এবং হত্যা ও সাম্প্রদায়িক উসকানি দাতা গণমাধ্যমগুলির বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই দাবিগুলোর সাথে এ দেশের রাজনীতিবিদদের স্বার্থের সংঘাত আছে। জড়িয়ে আছে তাদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন। কিন্তু ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কি কিছু আছে? যদি না থাকে তাহলে এই আন্দোলনকে কেন হেফাজতে ইসলাম বন্ধ করে দিতে বলছেন? এই আন্দোলন বন্ধ হলে হেফাজতে ইসলামের কি লাভ?

রাজনীতি তো রাজার নিতি আমরা তা ভেদ করতে সমর্থ হব না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মানুষ যখন আত্নরক্ষার্থে সর্বশক্তি নিয়োগ করে তখন তাঁর সব কুট কৌশলই জলবৎ তরলং হয়ে প্রতিভাত হয়। রাজনীতিবীদিদের বেলায়ও এর অন্যথা হয় না। আজ তাই প্রজন্ম চত্বরের তরুণদের কাছেও পক্ষ-প্রতিপক্ষ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সেইসাথে করনীয় নির্ধারণও। প্রয়োজন বিচক্ষণতার সাথে সিদ্ধান্তগ্রহণ।

[email protected]

সুত্রঃ প্রজন্ম চত্বর থেকে ছয় দফা Click This Link
১৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×