শুরুটা কিভাবে করবো ঠিক বুঝতে পারছিনা,হয়ে ওঠে না কোন ভাবেই ,তার পরেও আজ লিখতে বসলাম, পুরনো সেই দিন গুলোর মতো আমার লেখা গুলো দিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিবো এমন ইচ্ছা নিয়ে লিখতে বসিনি। প্রচণ্ড লিখার ইচ্ছাই আজ আমাকে লিখতে বসিয়েছে।
অফিস থেকে বের হয়ে একঘুয়েমি কাটানোর জন্য বন্ধুদের বাসায় যাই, ইদানিং তাও ইচ্ছা করছে না।আমার ছোটো বেলার বন্ধু বাবু।হাটতে হাটতেই দুজন পার্কে এসে পাশাপাশি বসলাম।এমন সময় একটা কল এলো বাবুর কাছে ।
ওপাশ থেকে আমার আরেক বন্ধু
কিরে কি করিস,একা একা?
বাবুর উত্তর, একা পেলি কোথায়, মাসুদ আছে,
ও কখন আসছে,
এইত একটু আগে।শুনলাম, তুই নাকি প্রেমের কনসালটেন্সি ফার্ম দিয়েছিস,
আরে না, পোলাপাইন তাদের সমস্যা নিয়া আমারে কল করে আমি চেষ্টা করি সমাধান দেবার, এই আর কি......
মাসুদ কি আমাদের কোথা শুনে হাসতেছে ?
আরেনা, ওর মুখ পাংশু বর্ণ হয়ে আছে, আমি একটা ব্যাপার বুঝতে পারছি, সারাদিন পরে অফিস থেকে বের হলেই ওর চেহারা বিবর্ণ থাকে।
আমি তাকিয়ে আছি বৃষ্টির পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাওয়া ছোট্ট পুকুরটার দিকে,তাকিয়ে আছি নিবিষ্ট মনে ওই টলোমলো পানির দিকে,পানির উপরিভাগে ছোট্ট একটি পোকা লাফিয়ে লাফিয়ে এক স্থান হতে অন্য স্থানে যাচ্ছে কিন্তু যেখানেই তার পা পরছে সেখানেই পানির উপরে পানির বৃত্তাকার ঢেও সৃষ্টি করছে,এমন অসংখ্য পোকা পানিতে বৃত্তাকার ঢেও সৃষ্টি করছে।
আমি তাকিয়ে আছি অবাক দৃষ্টিতে, কিছুটা বিস্ময় ও কিছুটা বিরক্তি নিয়ে।বাবুর ফোনালাপ আমার কানে অস্পষ্ট হয়ে আসে।অফিস থেকে বের হবার পরে ওর মুখ বিবর্ণ থাকে---বাবু বলছিলো.।.।।।
আমি কেনো যে চরম বিরক্তি নিয়ে বসে থাকি তা কখনই কাউকে জানাতে পারিনি, হয়তবা আমি নিজেও জানিনা, হয়ত জানি,হয়ত কখনও জানার চেষ্টাও করিনি,কিন্তু এই জানা আর না জানার মধ্যেই আমার জীবন ঠিক ঠিক কেটে যাচ্ছে।আমি বয়ে বেরাচ্ছি বিরক্তিকর এক শবদেহ।
পানির উপরে পানির বৃত্তাকার ঢেও সৃষ্টি করা অস্বাভাবিক সুন্দর দৃশ্য ও আমার মনে সন্দেহ সৃষ্টি করে। আমি কোন বৃত্তাকার চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছি। ভালোবাসাহীন ভালোবাসার এই ছোট্ট নিথর দেহটাকে নিয়ে আর কতদিন বয়ে বেরাব ওই বৃত্তাকার চক্রে।কেন্দ্র না জেনেই যে বৃত্ত আমি একে চলেছি প্রতি নিয়ত, তার ব্যাস বা ব্যাসার্ধ জানার সাদ্ধ কি আমার আছে? আমিতো আমার আমিতে নেই, ভালোবাসাহীন এই জীবন থেকে পালাতে কি আমি পারিনা?
বাবুর ডাকে আমার চিন্তায় ছেদ পরে,
কিরে কি চিন্তা করিস?
আমি বলি কই কিছু নাতো।আমি বলি চল এবার উঠি, আমাকে বাসায় যেতে হবে।
প্রচণ্ড কালো হয়ে যাওয়া মেঘের কোলে বৃষ্টির আনাগোনা দেখে আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, যে কালো মেঘ আমার মনটাকে সারা জীবনের তরে কালো করে দিয়েছে তার থেকে কি তোমার কালিমা আর ও বেশি কষ্টের? আমার এই প্রশ্নের উত্তর আর কখনই জানা হয় না।
বাবু কে বিদায় জানিয়ে আমি আর ওর পথের দিকে ফিরে চাইনি যেন আমার এই বিরক্তিকর চেহার আর ওকে দেখতে না হয়। প্রচণ্ড গর্জনে মেঘ জানান দিল তোমাদের কষ্ট গুলো আমি আমার পানিতে সাজিয়ে দেবো। ধরণী প্রবল আগ্রহে তাকিয়ে আছে মেঘের এক একটি অস্রু কনার দিকে। আমিও প্রচণ্ড আবেগে তাকিয়ে আছি মেঘের অস্রু কনার দিকে। আমি প্রশ্ন করি , হে মেঘ তোমার আনন্দ অস্রু কি শুধুই এই ধরনীকে তৃপ্ত করবে? তুমি তো আমার চরম বিরক্তিটুকুও ধুয়ে মুছে দিচ্ছ। আমি তাকিয়ে আছি, দুচোখ বেয়ে টপটপ করে ঝরে পরা নোনাজল টুকুও তুমি ধুয়ে দিলে।হয়ত কেও কখনো জানতেও পারবে না কতটুকি নোনা জল আমি শ্রাবণের কোলে ঢেলে দিয়েছিলাম.............

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




