একবার আনমনে হাঁটতে হাঁটতে
এক দোতলা বাড়ির জানালায় দেখেছিলাম-
ফেলে আসা পুরনো শহরের মত তোমার বিষণ্ণ দুটো চোখ।
তারপরে দিনে দিনে বহুদিন পার হয়ে গেছে।
এখনও-
বাড়ির উঠোনে, লনে,সামনের মেলানো বাগিচায়,
ছাদের কার্নিশে,দোতলার ঘরে,চিলেকোঠায়
রাস্তার প্রকাণ্ড বিলবোর্ড আর টেলিভিশানের ভীষণ রঙিন পর্দায়
টানা টানা চোখেদের দারুণ প্রাচুর্য।
শুধু-
রাস্তার পাশে;দোতলার ঘরের জানালায়-
কোনো চোখ নেই।
একবার তোমাদের বাড়ির সিঁড়ি ভেঙে
দুদ্দাড় করে নেমে আসার পর-
তোমার ভিজে পুকুরের মত নরম ঠোঁটে
আমি পানকৌড়ি পাখির মত ডুবে গিয়েছিলাম।
তারপরে সূর্য আরো বহু বহুবার
এই নীলচে পৃথিবীকে আনমনে প্রদক্ষিণ করে গেছে।
এখনও-
লিপ্সটিকের গায়ে,বাচ্চাদের গালে,
গর্বিত বিজয়ীর রূপালি ট্রফিতে আর
ফুটপাথের উষ্ণতম চায়ের পেয়ালায়
অসংখ্য ঠোঁট লেগে আছে.
শুধু-
দুদ্দাড় করে নেমে আসার পর
তোমাদের পুরনো সে ছোট্ট সিঁড়িঘরে,
টুপ করে ডুবে যাবার মত
কোনো ঠোঁট নেই।
একগাদা সানাই আর ঢোলের শব্দ লক্ষ্য করে
আমি একবার বাসস্টপে ছুটে গিয়েছিলাম।
দেখেছিলাম,তুমি
টকটকে লাল গোলাপের মত দারুণভাবে ফুটে আছ,আশেপাশে
সবুজ পাতার মত একগুচ্ছ শুভাকাঙ্ক্ষী নিয়ে।
আমার কানের কাছে এরপরও
শত শতবার করে বেজে গেছে সানাইয়ের সুর।
এখনও নগরের সমস্ত রাজপথ,বিমান বন্দর,রেলস্টেশান আর লঞ্চ টার্মিনালে
জনসংখ্যার ভীষণ বিস্ফোরন,
চারিদিকে কেবলমাত্রই মানুষের ভীড়-
শুধু,
অনন্তকাল ধরে ছুটে যাবার পরও
আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করি-
আমিই গোলাপের সুতীক্ষ্ণ কাঁটা,কেবলমাত্র আমার জন্যই-
বাসস্টপে কেউ নেই।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




