০০০আমি ছোটবেলা টেলিভিশনে যখন মানুষ গাড়ি গাছপালা দেখতাম। তখন আমার কাছে মনে হতো। এত ছোট টিবি আর এতো সবকিছু জায়গা হয় কী ভাবে?
যতদিন টিবির সম্মুখে বসে থাকতাম। এই একই প্রশ্ন বারবার মাথায় এসে ঘুরপাক খেত। আমি তখন এতো ছোট যে, এতসব কাউকে বলে বুঝাবার খুদ্র জ্ঞান তখন আমার একদম ছিল না।
আমার আব্বার রেডিও তে খবর শোনার খুব শখ ছিল। প্রায় সময় দেখতাম আব্বা বাড়িতে আসলে রেডিওতে কান পেতে বসে বসে কখনো গান কখনো খবর শুনতেন। আব্বা যখন বাড়িতে থাকতেন না। তখন এই রেডিওর ভাগিদার আমরা দুই ভাই হতাম। তখন সেই রেডিটি আমাদের এখনকার মোবাইলের মত খুব ছোট ছিল। তাই আমরা পকেটে করে ঘুরে বেড়াতাম।
এর একটা ঘটনা বলি। রেডিওতে একদিন কোনো এক শিল্পির গান শুনছিলাম। শুনতে শুনতে এক সময় আমার কাছে মনে হলো; আজ দেখব রেডিওর ভিতরের মানুষটাকে। তাই সেইদিন রেডিওর ভিতরের সম্পূর্ণ কলকজা খুলে আমি কাউকে দেখতে পেলাম না। তাই মনের ভিতরে দুঃখ ব্যাথা এক ধরনের চাপা অনুভূতি নিয়ে কাঁদতে ইচ্ছা করছিলো।
তার কিছুদিন পর খুললাম টেলিভিশন। সেটা অবশ্যই পুরোপুরিভাবে খুলি নাই। তাঁর প্লাস্টিকের বডি একটু ফাঁকা করেছি যা। এত কিছু খুলেও আমি শান্ত হয়নি।
আমি একটা দেওয়াল ঘড়ি দেখলাম। এটা কী ভাবে ঘুরে খট খট আওয়াজ করে? তা দেখার জন্য। তাই কিছুদিন পরে খুললাম দেওয়াল ঘড়ি। এটা আমি একা খুলি নাই। আমি ভাবতাম যদি ধারালো কাটায় হাত কেটে যায় এই ভয়ে। আমার সাথে সঙ্গদিল চাচাতো ছোট ভাই রুহেল। সেই দিনটি ছিল রমজান মাসরে কোন এক সকাল।
প্রত্যেকটি জিনিসপাতি খুলার পর আমার শাস্তিভোগ করতে হয়েছে। আর শাস্তিবিধানকারীনি আমার মা। আর আমার আব্বা অবশ্যই সব কিছুর প্রত্যেকটির ঘটনা জেনেছেন। কিন্তু আমাকে শাস্তি দেন নি। জানিনা তার কি কারণ ছিল। একদিক দিয়ে সাহস পাওয়ায় হয়তো আমার সবকটি কৌতুহলের সীমা অবদ্ধি পৌঁছতে পেরেছিলাম।০০০
©
#কালো_মানব!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:২৫