ইতিহাসের নতুন মাইলফলক
প্রয়োজন দ্রুত বাস্তবায়ন
১৯ নভেম্বর। সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের পরিবেশ একটু অন্য রকম। চারিদিকে থমথমে ভাব। সবার মধ্যে চাপা উত্তেজনা, আগ্রহ। সবার চোখ খানিক পরপর ঘড়ির দিকে। বেলা ১১ টা ৫৫ মিনিট ! ঘোষিত হলো বাঙ্গালির বহুল আকাঙ্খিত ও প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়। আর এই রায়টিকে ইতিহাসের একটি নতুন ও অবিস্মরণীয় মাইলফলক হিসেবে আখ্যায়িত করে এর দ্রুত বাস্তবায়ন দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এই রায় নতুন প্রজন্মসহ সবার মধ্যে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থার সৃষ্টি করবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ায় গতিশীলতা আনবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ. আ. ম. স. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, এই রায়টি ছিল দীর্ঘ প্রতীক্ষিত। সারাদেশের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। দ্রুত এই রায় বাস্তবায়ন করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারি সবসময় আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করে যাচ্ছে। এই আন্দোলনের অন্যতম অর্জন আজকের এই ঐতিহাসিক রায়।
২১ বছর পরে মামলা এবং ১৩ বছর ধরে বিচার কার্যক্রমের পর এই রায় সম্পর্কে ঢাবি’র পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী জান্নাত বলেন, এই রায় ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে লেখা থাকবে। তবে সরকার যেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করে। মিলির মতোই অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এই রায় বাস্তবায়নের পাশাপাশি সরকারের উচিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ দ্রুত শুরু করা।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড বাঙ্গালির ইতিহাসের একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই রায়ের ফলে জাতি আজ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে বলে জানান শিক্ষক - শিক্ষার্থীরা। তবে এই রায়ের আগে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা ও উদ্বিগ্নতা কাজ করছিল। সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র রাশেদ বলেন, যাতে কোন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা না ঘটে এ জন্য হলে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।’ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার আশঙ্কায় অনেক শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকরা ক্যাম্পাসে আসতে নিষেধ করেছিলেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মিলি আহমেদ বলেন, আজ আমার মা ক্যাম্পাসে আসতে নিষেধ করেছিলেন।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ড. আশফাক হোসেন বলেন, এখন সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ভাবা উচিত । তিনি মনে করেন, এই রায়ের ফলে দেশে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা টিপু বলেন, এই রায় সরকারের সফলতার একটি অংশ। এই রায় বাস্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত ঢাবি’র নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করতে হবে। প্রতিক্রিয়া জানতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক শিমুলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই রায় সম্পর্কে আমাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরবর্তীতে একটি লিখিত বিবৃতি দিবেন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কোন আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়নি এবং কোন প্রকার অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেনি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





