somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমান্তরাল মহাবিশ্ব

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বেশ কিছুদিন হল নিকি মহাশূন্যের পাওয়ার ষ্টেশন থেকে ফিরেছে। ইতিমধ্যে পৃথিবীতে বেশ কয়েকটি বছর পেরিয়ে গেছে। বেচে থাকার একাšত অবলম্বন, স্বপ্নীল আশা আজ কেমন জানি ধোঁকায় পরিণত হয়েছে। একসময় কলেজ জীবনের ব্যা¯ততার মাঝে যার ছবি যার নাম লিখে লিখে ভরে ফেলতো ডায়রীর পাতার পর পাতা, রাত জেগে যার কথা ভাবতো, সেও আজ লাল টুকটুকে মারুতী কারে করে টিলার পাশ দিয়ে কী নিশ্চিšত নির্ভরতায় পাশে বসা ফর্সা ছেলেটার বুকে মাথঅ রেখে চলে ঘেল হাসিমুখে। তার কোলে কী নি®পাপ হাসি আর খেলায় মগ্ন ছোট্ট একটি ছেলে। বিশাল রা¯তার দুপাশে লোহার সেটে সাদা রং করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সামনেই একটা ভেটেনারী ফার্ম, নিকির আর টিলায় বসতে ভালো লাগে না। অশ্রুসিক্ত নয়নে সারা পৃথিবীকে কেমন জানি ঝাপসা লাগছে। হেটে হেটে ভেটেনারি কলেজের হোষ্টেলে চলে গেল নিকি। না এখানেও খুঁজে পেল না তার পুরোনো রুমমেটকে।কিভাবে পাবে? ডনকির কাছে মনে হচিছলো ঐ তো সেদিন তার রুমমেটকে রেখে গেছে থার্ড ইয়ার ভেটেনারি কোর্সে, অথচ এত দ্রুত যে কয়টি বছর পার হয়ে গেছে, দেয়ালে আর্ট করা তার রুমমেটের নামটি পর্ষšত একেবারে মলিন আর বিবর্ণ হয়ে গেছে। কেবল কালের অনšত প্রবাহের মাঝে কাঠের র‌্যাকে খোদাই করা নামটুকু অতীত জীবনের স্মৃতি রোমন্থন করার প্রয়াস দিচেছ।কেমন জানি অসহ্য হয়ে উঠছে পৃথিবীটা নিকির কাছে। অথচ সেদিনও কত প্রাণবšত ছিলো নিকি। কথায় কথায় হাসতো, হাটতে হাটতে গানের কলি আওড়াতো, আর কী রসাÍক কথাই না বলতো। আজ সে সারাক্ষণ বাধ্য হয়ে গুরুগম্ভির থাকতে হয়।কপালে যেন তারই বলিরেখা অংকিত হয়ে গেছে। পৃথিবীতে নিজেকে বড় নিঃসঙ্গ মনে হয় নিকির। চারিদিকে অনšত অন্ধকার, নিঃশব্দ নীরবতা আর প্রচন্ড একা। ঠিক যেমন জন্মের কয়েক মুহুর্ত পুর্ব পর্যšত মানুষ সীমাহীন নীরবতা আর একাকীত্বে ডুবে থাকে। অথচ তাকে ঘিরে রয়েছে পরিপুর্ণ মানুষ। মাঝে মাঝে নিকির মনে হয় স্বেচছায় আÍবিসর্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্জন দিতে। জ্বালাময়ী পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে। কিšতু সে কেন তা করবে। নিকিতো কাপুরুষ নয়। তাহলে নিকি কেন জীবনের কাছে হার মানবে।সেজন্যই অনšত পথে ছুটে চলে নিকি সারাক্ষণ।ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছিলো নিকি। তারপর সুদীর্ঘ চিকিৎসা শিক্ষা জীবন কাটিয়েছে অত্যšত বিরসভাবে। মহাশুন্যের পাওয়ার ষ্টেশনে কীভাবে রোবটের পাশাপাশি মানুষ ও অন্য জীবজšতু থাকতে পারে সেজন্য তাকে গবেষণায় পাঠানো হয়েছিলো। চিরকালের মত সফল হয়েছে নিকি। কিšতু পৃথিবীতে ফিরে সে একেবারে নিরাশ হয়েছে। হারিয়েছে সোনালী অতীতকে। তাই নিকি এখন বন্ধু-বান্ধবহীন সময়টা কীভাবে কাটাবে বুঝতে পারছিলো না।
পর্যটনের দেয়া বিজ্ঞাপনটা নিকি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়লো। ওরা নতুন তৈরী বিমানে এক ঘন্টায় বিশ্ব প্রদক্ষিণের অফার দিয়েছে। হাসলো নিকি- ওদের ছেলেমানুষী খেলা দেখে।তারপরও কি মনে করে সে মোবাইলটা নিয়ে আনমনে বিজ্ঞাপনে দেয়া নম্বরটা ডায়াল করলো। ওপাশ থেকে উচছসিত কন্ঠস্বর ভেসে আসলো-”মহামান্য নিকি- আপনি আমাদের সাথে যাচেছন শুনে আমরা অতিশয় গর্ব বোধ করছি। আপনার নিরাপত্তার জন্য সরকারের পাশাপাশি আমরা যাবতীয় ব্যাবস্থা নিবো। নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের প্রাইভেট হেলিকপ্টার আপনার বাসার সামনে পৌছে যাবে। আপনি আসলে আমরা কৃতজ্ঞ হবো“।
এক ঘন্টায় পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে মাটিতে পা রাখতেই নিকি ঘড়ির দিকে তাকালো। তার ঘড়ি এয়ারপোর্টের ঘড়ি থেকে ২৩ ঘন্টা পিছিয়ে রয়েছে। সে অনুযায়ী সে আরও ২৩ ঘন্টা পরে সে আবার একই ভঅবে যাত্রা করবে। আশ্চর্ষ হলো নিকি; কিšতু পরক্ষণেই বুঝে নিলো সে। সেই প্রথম টাইম মেশিন আবিষ্কার করার ছোট্ট একটি হিন্টস্ পেয়েছে। সাথে সাথে সে তার বন্ধু সামুকে ই-মেইল করলো নাসার সবচেয়ে দ্রুতগামী মহাকাশযানটি নিয়ে আসতে। সামু ই-মেইলটি পড়ে যানটিতে সামান্য পরিবর্তন করে নিকির জন্য নিয়ে আসলো। নিকি সামুকে নিয়ে ভুমির সমাšতরালে অশল্পনীয় বেগে সোজা পশ্চিম দিকে রওয়ানা দিলো। যেন অনšত এক যাত্রা। শেষ পর্যšত যখন নিকি সামুকে নিয়ে পৃথিবীর মাটিতে পা রাখলো- আশ্চর্ষ হয়ে লক্ষ্য করলো- তারা তাদের কৈশরে ফিরে এসেছে। এই তো গতকাল তার বন্ধুরা মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে। বন্ধুদের কথা অনুযায়ী সেও নাকি তাদের সাথে পরীক্ষা দিয়েছে।
ভুলটা যখন নিকি বুঝলো, তখন আর কিছুই করার ছিলো না। সময় পরিভ্রমণের সবচেয়ে খারাপ দিক এটা । এটা আসলে সর্বদাই দ্বৈত পরিভ্রমণ। অর্থাৎ সামু ও নিকি চলে আসছে তাদের প্যারালাল ইউনিভার্স বা সমাšতরাল মহাবিশ্বে। এখানে সবকিছুই আলাদা। তবে খুব সুক্ষ পার্থক্য, যা সহজে ধরা যায় না। যেহেতু তখন পর্যšত নিকির যানের ন্যায় কোনকিছু আবিষ্কার হয়নি, তাই ওটা মিলিয়ে গেল, অর্থাৎ অদৃশ্য হলো। নিকি জানে, সে যদি এখন নতুন কোন যান আবিষ্কার করে ভবিষ্যতে যায়, তবে গিয়ে পৌছবে অন্য কোন সমাšতরাল মহাবিশ্বে। তাই কৈশর ফিরে পেয়ে নিকি ও সামু এখানেই নতুন করে জীবন সাজাতে মনস্থ করলো।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×