সম্প্রতি সময়ের ছেলেমেয়ে আর আমাদের সময়ের মধ্যে পার্থক্য একটাই- তারা অনেক বেশি আপডেটেড আর আমরা একটু বেশি ব্যাকডেটেড।
আমাদের সময়ের মেয়েরা একটু বেশি চৌকস। যেমন: কোন মেয়ের বয়ফ্রেন্ড অথবা তার স্বামী অন্য কোন মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব থাকলে বা কথা বললে অথবা সহজ বাংলায় টাংকি মারলে পুরা তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে। কিন্তু এখনকার কোন মেয়ের বয়ফ্রেন্ড বা তার স্বামীর অন্য কোন মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করলে কথা বললে তেমন কিছু মাইন্ড করে না। কিন্তু প্রবলেমটা হয় অনলাইনে। ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্ট নিয়ে, স্কাইপি অথবা গুগল টকের কনট্যাক্ট লিস্ট নিয়ে। ' ঐ মাইয়্যা তোমারে পোক মারলো ক্যান?' তুমি ঐ মাইয়্যার মেসেজ দিলা ক্যান?' 'তুমি ঐ মাইয়ার ছবি হা করে দেখতাসিলা ক্যান?' 'তোমার ফ্রেন্ডলিস্টে এত মাইয়্যা কইথ্যাইকা আইলো?'
আর পোলারা যে ধোয়া তুলসী পাতা তা বলছি না, পোলারা হলো আসল চুলকানির মলম।
এইবার আসি আসল কাহিনীতে। গতরাতের কাহিনী, ১২ঘন্টাও পার হয়নি এখনও.....
আমার মোবাইলে ফেসবুক এপ্লিকেশনটা অটো লগইন করা থাকে। আমি যথারীতি রাতে পেট ঠান্ডা করে বিছানায় এবং দুই মিনিটের মধ্যে ঘুমের দেশে প্রত্যাবর্তন। একটু পরপর ঘুম ভেঙ্গে যাওয়াতে দেখি ঘরে মোবাইলের আলো এবং ভালো করে দেখলাম আমার ঘরনী আমার মোবাইল নিয়ে সুক্ষ কারচুপি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি আমার মতো ঘুমের দিকে মনোযোগ দিলাম। সকালে উঠে অফিস যাওয়ার প্রাক্কালে নাস্তায় বসার আগে দেখলাম গিন্নীর হাতে লম্বা এক ফর্দ। ভাবলাম বাজারের লিস্ট কিনা, কিন্তু কয়েকদিন আগেইতো ঘর ভর্তি বাজার করেছি। আবার মনে মনে এও চিন্তা করলাম মাসের ২০ তারিখের পর থেকে পকেট ফাঁকা ফাঁকা লাগে। নাস্তা করতে করতে সমস্ত চিন্তার অবসান ঘটিয়ে গিন্নী আমার হাতে ফর্দটা ধরিয়ে দিলো। আমিতো অবাক- আমার তো বিয়ের উপযুক্ত কোন ভাইও নেই, কোন শ্যালকও নেই। আমি এতগুলো মেয়ে মানুষের নাম দিয়ে কি করবো! নাকি আমাকে পরীক্ষা করছে! আমি বললাম- তুমি কি দুষ্টুমি করো আমার সাথে? সে বললো- 'আমি তোমার সাথে দুষ্টুমি করবো আমি কি তোমার গার্লফ্রেন্ড নাকি শ্যালিকা! এই লিস্টে যে মেয়েগুলো আছে তাদের সাথে তোমার কি সম্পর্ক, তাদের প্রোফাইল আমাকে দিতে হবে।' আমি এককথায় উত্তর দিলাম- 'কেউ কেউ আমার কলেজ ফ্রেন্ড, কেউ ভার্সিটি ফ্রেন্ড আর কেউ কেউ অফিসের কলিগ, এর মধ্যে অপরিচিত কেউ নেই এবং তুমিও মুটামুটি সবাইকে চেনো।'
সে আমাকে বললো' তোমার তো কলেজ, ভার্সিটি সব শেষ তাহলে মেয়ে ফ্রেন্ডদের সাথে এত মাখামাখি কেন? আর ডেইলীতো অফিসে যাও, তা আবার অফিসের মেয়ে কলিগদের ফ্রেন্ডলিস্টে রাখার কি দরকার?'
তখনই একটা কথা মনে পড়লো, কথাটা কোন মনিষীর জানিনা তবে তারে অসংখ্য ধন্যবাদ। 'বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর।' আমি চুপ থাকলাম। চুপচাপ অফিসে আসলাম। অফিসে এসে ব্লগ লিখলাম, আবার চুপচাপ বাড়ি যেতে হবে। কিন্তু ঘরে যেয়ে আর চুপচাপ থাকা যাবে না। যতই চুপ থাকবো গিন্নী ততই উত্তেজিত হবে (এইটাই মনেহয় বিধাতা প্রদত্ত মেয়েদের গুণ(!)) আমি ভাবিতেছি আর ভাবিতেছি তাহার উত্তরগুলো কি হইতে পারে!!!!
(তার শুধু ফেসবুকে এলার্জি না, ব্লগের ব্যাপারে তার পুরা ক্যান্সার!!! আর অন্যান্য জিনিসের কথাতো বাদই দিলাম। এইতো গেলো অনলাইনের নিষেধাজ্ঞা, আর অফলাইনেও ১৪৪ ধারা জারি। তারপরও গিন্নী যতই বলুক কেষ্ট বেটা চোর, আমি বলবো গিন্নী কিন্তু ভাল, অনেক ভালো।)
সে কিভাবে আমার গিন্নি হলো-
আমার এক্স গার্লফ্রেন্ড- তার পেরেজেন্ট বয়ফ্রেন্ড Vs আমি আর আমার বউ (১৫+)
আমার এক্স গার্লফ্রেন্ড- তার পেরেজেন্ট বয়ফ্রেন্ড Vs আমি আর আমার বউ (১৫+) পর্ব-২