somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আসিফ শাহনেওয়াজ তুষার
আমি সাধারনের মাঝে অসাধারণ খুজেঁ বেড়াই। হেয়ালি একটা জিনিসের মাঝেও শিক্ষনীয় কিছু খোজার চেষ্টা থাকে । জানিনা কতটা পারি, তবে চেষ্টা করে যাই অবিরাম।

সিনেমা এবং বাস্তবের ফারাক এতোটা !!!!

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছুদিন আগে ভারতে "আইয়ারি" নামক একটি সিনেমা রিলিজ হয়েছিলো। সিনেমাটা আগেও দেখেছিলাম, কিন্তু আজ বেশ মনযোগ দিয়েই দেখলাম। ছবিটার গল্প এরকম, সেনাবাহিনীর কিছু অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অস্ত্রের বানিজ্য করে । তাঁরা বর্তমান সেনাপ্রধান কে প্রস্তাব দেয়, তাদের কোম্পানী থেকে সেনাবাহিনীর জন্য সাধারন দামের চাইতে চারগুন বেশি দামে অস্ত্র কিনতে । বিনিময়ে কিছু প্রলোভনও দেখানো হয় । সেনাপ্রধান সেই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করলে তাকে হুমকি দেওয়া হয়, বাহিনীর ভেতরকার বেশকিছু গোপন তথ্য প্রকাশ করে দেওয়ার। সেইসঙ্গে আরও কিছু ব্ল্যাকমেইলিং করে কাজটা বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এরপরে সিনেমার পুরোটা জুরেই দেখানো হয়, কিভাবে কয়েকজন দেশপ্রেমিক অফিসার এরকম একটা ষড়যন্ত্র নস্যাত করে দিয়ে গোটা সেনাবাহিনীর মানসম্মান এবং দেশের মানুষের কষ্টার্জিত টাকা চারগুন খরচ হওয়া থেকে বাচায় ।

সিনেমাটা দেখলাম আর ভাবলাম, সিনেমার সাথে বাস্তব জগতের কেমন আকাশ পাতাল পার্থক্য!!! সিনেমার হিরোরা দেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকা চারগুন খরচ হওয়া থেকে বাচালেও বাস্তবে ১০ গুন খরচ হলেও সেটা বাচানোর কেও নাই । প্রমান চান?

ইউরোপে চার লেনের নতুন মহাসড়ক নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় পড়ছে ২৮ কোটি টাকা, ভারতে ১০ কোটি টাকা, আর চীনে গড়ে ১৩ কোটি টাকা। তবে বাংলাদেশের তিনটি মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করতে ব্যয় ধরা হচ্ছে কিলোমিটারপ্রতি গড়ে ৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়ক চার লেন নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা। শুধু কি তাই? কাজ শুরু না করেই এক দফা বাড়িয়ে তা ৯৩২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বাড়িয়ে ৫ হাজার ৯৬২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করাহয়েছে ।

বিশ্ব ব্যাংক এর ভাষ্যমতেঃ বিশ্বে অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় সবচেয়ে বেশি হয় আমার সোনার বাংলাদেশে।

যেই মেগা প্রজেক্ট নিয়ে এতো গর্ব, সেই পদ্মা সেতুর কথাই ধরুন। প্রথমে যেটার ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১০ হাজার কোটি টাকা, সেটা কয়েক দফা বেড়ে এখন হয়েছে ৩১ কোটি টাকা। এই ফিগারটা বাড়তে বাড়তে কোথায় গিয়ে ঠেকে, সেটাই দেখার বিষয়।

শুধু এসব নয়, উন্নয়নের নামে সারাদেশে যে পরিমান হরিলুট হচ্ছে, রডের বদলে যে পরিমান বাশ ঢুকানো হচ্ছে, তার খুব অল্প সংখ্যকই জনগনের কানে আসে । এসব থেকে বাচানোর মতো কি কেও আছে ? যারাই একটু কথা বলতে চায়, তারাই হয় গুম নাহয় দেশত্যাগ । এজন্য দেশপ্রেমিক তো পয়দা হওয়া দুরের কথা, দেশটা বর্তমানে তেলবাজ কিংবা দলকানাদের উর্বর ভূমি । শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপি সহ আরও যারা এদেশে ক্ষমতায় এসেছে, তারাই তাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য যুগে যুগে এদের পয়দা করেছে। আজ যদি সরকার ভুল করে, সেই ভুল ধরানো লোকের চাইতে গলাবাজি করে সেই ভুলকে হালাল করার লোকের সংখ্যাই বেশি । ব্যাংক কিংবা রাস্ট্রিয় কোষাগার থেকে হাজার কোটি টাকা লুট হলেও সেটার প্রতিবাদ করার বদলে দল কিংবা নেতাদের দালালি করার লোকই বেশি । আজ ডুবন্ত অর্থনীতিকে, ডুবন্ত সমাজব্যাবস্থাকে উপরে তুলে ধরার চাইতে সেগুলো ঢেকে ভিন্ন প্রসঙ্গে নিয়ে যেতে চেতনাবাদী কথা বলার লোকের সংখ্যাই বেশি ।
প্রশাসনে আজ কোন কর্মকর্তা খারাপ, কে ঘুষ খান সেটা গোনার চাইতে অবশিষ্ট কোন কর্মকর্তা এখনও সৎ কিংবা ভালো সেটা অণুবীক্ষণ দিয়ে বের করতে হয় ।
আজ কতজন সকালটা ভালো কাজ দিয়ে শুরু করার চিন্তা করেন? কতজন আছেন, যারা নীতির সাথে কমপ্রোমাইজ না করার জন্য অটল থাকেন? কতজন আছেন, যারা নিজের মনকেই বলেন, "সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি, সারাদিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি" । কিংবা "আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি" গলা ছেড়ে গাইতে গেলে কতজনের চোখ আবেগে ভিজে ওঠে?

সিনেমা এবং বাস্তবের ফারাকটা সত্যিই বেড়ে যাচ্ছে ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৩৫
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×