somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরাও ঘৃণা ছড়াচ্ছি, মজলুম রোহিঙ্গারা যাবে কোথায়?

২৮ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রকৃতই অসহায় এবং প্রতিবন্ধী কোন ভিক্ষুক যখন ভিক্ষার থালা এগিয়ে দেয়। প্রথম দিন অনেকেরই মায়া লাগে। কেউ কেউ পকেটে হাত দিয়ে খুচরা পয়সা বের করে। দ্বিতীয় দিন, তৃতীয় দিনও একই জায়গায় একই ব্যক্তির সাথে দেখা হয়ে গেলে খুব কম মানুষই সাহায্যের হাত বাড়ায়। এরা অত্যন্ত বড় আত্মার মানুষই হবে। আর দিন দিন একই ব্যক্তি যখন মানুষের দুয়ারে হাত পাতে তখন এমন কেউ নেই যে বিরক্ত হয়না। এতে ওই অসহায়ের দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই। এটাই যে মানুষের ফিতরাত। বরং কিছু মানুষ তো প্রথম দিনেই বিরক্ত হয়।

এ প্রসঙ্গেই কবি খুযাইমি আবৃত্তি করেছিলেন-
لا تَسْأَلَنَّ بَنِي آَدَمَ حَاجَةً
وَسَلِ الَّذِي أَبْوَابُهُ لا تُحْجَبُ
اللَّهُ يَغْضَبُ إِنْ تَرَكْتَ سُؤَالَهُ
وَبُنَيَّ آدَمَ حِينَ يُسْأَلُ يَغْضَبُ .

অনুবাদঃ
তুমি মানবের কাছে তোমার প্রয়োজন যাচিওনা
বরং তাকেই বলো যার দুয়ার কখনো বন্ধ হয় না।
তুমি মানুষের কাছে চাইলে তারা রাগন্বিত হয়
অথচ আল্লাহর কাছে না চাইলেই বরং তিনি রাগন্বিত হন।

গত কয়েকদিনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানুষের আচরণ আমার মনটাকে বিষিয়ে তুলেছে। গণহত্যা থেকে বাঁচতে জীবন নিয়ে পালিয়ে আসা এই লোকগুলোর প্রতি শুরু থেকেই এক শ্রেণীর মানুষের এলার্জি ছিলো চোখে পড়ার মতো। নাটকীয়ভাবে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত না পাল্টালে নাফ নদী সাঁতরে তীরে আসা রোহিঙ্গাদের লাঠির বাড়িতে সলিল সমাধি ঘটাত এই বীর পুরুষেরা। পত্রিকায় সেরকম ছবি দেখেছি বলেই কথাটা বললাম। তবুও সান্ত্বনা ছিলো দেশের আমজনতা মুসলিম ভ্রাতৃত্ব অথবা মানবতার খাতিরে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলো। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন ব্যানারে অসংখ্য মানুষ ত্রাণসামগ্রী নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হাজির হয়েছিলো। যদিও সেই সহানুভূতির সম্পর্ক থাকা অবস্থাতেই এক শ্রেণীর মানুষের উদ্যোগে "রোহিঙ্গা" শব্দটি গালিতে রূপান্তরিত হয়ে যত্রতত্র ব্যবহৃত হচ্ছিলো।


যাহোক দিন পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন আর রোহিঙ্গাদের প্রতি মায়ানমার বাহিনীর নির্যাতনের কথা ভেবে আমরা শিউরে উঠিনা। বরং শিউরে উঠি এই ভেবে যে ওরা অচিরেই বাংলাদেশ দখল করে নিতে যাচ্ছে। কিসের ইসলামপন্থী আর কিসের সেক্যুলার সবাই এখন নিশ্চিত হয়ে গেছি ওরা খারাপ। ওরা অকৃতজ্ঞ। কারো কারো মুখের ভাষাতো এতটাই উচ্চাঙ্গের যা লেখার ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছেনা বলে দুঃখিত। ভাবখানা এমন যে আমাদেরটা খেয়ে আমাদেরটা পরে ......বাচ্চারা এখন আমাদেরকেই কামড়াতে আসছে। যদিও খোঁজ নিলে দেখা যাবে যারা এসব বলছি রোহিঙ্গাদের প্রতি তাদের অবদান পুরাতন দুয়েকটা গেঞ্জি প্যান্টের অধিক কিছু নয়।


সব রোহিঙ্গারাই ভালোনা। ওদের মধ্যেও ভালো খারাপ আছে যেমন বাঙ্গালীদের মধ্যেও আছে। তাছাড়া এদের নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিভিন্ন গ্রুপের নিজস্ব এজেন্ডা আছে। চলছে খ্রিস্টান বানানোর অপকৌশল। অনেক এনজিওর কার্যক্রম ষড়যন্ত্রমূলক। তারপরেও প্রশ্ন জাগে যারা কয়েক যুগের চেষ্টায় নিজভূমে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে পারলোনা তারা আরেকটি স্বাধীন দেশে আশ্রিত হয়ে সেই দেশ বা তার অংশবিশেষ দখল করে নিবে এটা কি বিশ্বাস করা সম্ভব?


আমরাতো ভুলেই গেছি কিছুদিন আগে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের এক সভায় শ্যামলী পরিবহনের মালিকের উপস্থিতিতে এক বিজেপি নেতা প্রকাশ্যে বাংলাদেশকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আর পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এজাতীয় কথাবার্তা এখন নিয়মিতই মিডিয়ায় আসছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে যারা অনেক বেশি সোচ্চার হচ্ছেন। তাদের কি এগুলো আশঙ্কাজনক মনে হয়না?


শুরুর কথায় ফিরে আসি। রোহিঙ্গাদের প্রতি দয়া করতে করতে বাংলার ১৬ কোটি মানুষ ত্যক্ত-বিরক্ত। তাই তাদেরকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে পারলে দেশ উদ্ধার হয়। অন্যদিকে এই মজলুম লোকগুলোর জন্যও জমীন সংকুচিত। যেখান থেকে পালিয়ে এসেছে সেখানেও যেতে পারছেনা। কে দেবে নিরাপত্তা?

সুতরাং একমাত্র রহমান রহীম আল্লাহই তাদের অভিভাবক। তাদের উচিত নিজেদের ভুলত্রুটি সংশোধন করে আল্লাহর দরবার কান্নাকাটি করা। নিশচয়ই একদিন আল্লাহর সাহায্য আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:০৮
১৬টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×