২৬ মার্চ ২০১৪। জীবনের অন্যতম আনন্দের একটা দিন বলতে হবে। কারণ আগে হুমায়ন আহমেদের দারুচিনির দ্বীপ এবং কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত আগে দেখা হয়নি আমার । কিন্তু দেখার ইচ্ছাটা অনেক দিনের । সেটা পূরনের দিনই ছিল তারিখটা।
আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের দু ব্যাচের ৭১ শিক্ষাথী । সাথে আমেনা ম্যাম আর উজ্জল স্যার। ক্যাম্পাস থেকে লক্ষ্যের দিকে গাড়ী ছাড়ল রাত সাড়ে দশটার দিকে।
সারা রাস্তা হইহুল্লোর করে পরদিন সকাল ১০টায় কক্সবাজারের কলাতলীতে পৌছলাম। নির্ধারিত হোটেলে ব্যাগপত্র রেখেই নেমে পড়লাম কলাতলী বিচে। তারপর হোটেল । খাওয়া । রেস্ট। পরে ইনানী সমুদ্র সৈকতের দিকে যাত্রা। সব মিলিয়ে খারাপ না যদিও ক্লান্ত শরীর ।সৈকত দেখা শেষে আবারও কলাতলী ফেরা। পরদিনের প্ল্যান , সপ্নের দারুচিনির দ্বীপে যাত্রা।
যথারীতি সকাল হল । গাড়ী টেকনাফের দিকে ছুটছে। একসময় টেকনাফের লঞ্চ ঘাটে বাস থামল। আমরা লঞ্চে উঠলাম। লঞ্চের নাম মনে নেই। একসময়ে দারুচিনির দ্বীপে পা পড়ল। সবাই নির্ধারিত হোটেলে ব্যাগপত্র রেখে বীচে চলে গেলাম।
আমি,রইচ (জিকো) আর বাবু। আমরা বরাবরই একটু অন্যরকম। অন্যান্য বন্ধুরা এক সাথে থাকলেও আমরা তিনজন দ্বীপের উত্তর দিকটাতে চলে যাই।পড়ে দ্বীপটার উত্তর দিকটার যে যায়গাটা কৌণাকৃতির, সে যায়গাটায় নেমে পড়ি। লাফালাফি ঝাপাঝাপি চলে চুড়ান্ত পর্যায়ে ।
আসল কথায় আসা যাক,
সম্প্রতি, আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক
শিক্ষার্থী এই দ্বীপের যে জায়গাটিতে নেমে মর্মান্তিক মৃত্যুর কবলে পড়ে সেই যায়গাতেই আমরা না জেনে নিশ্চিন্তে নেমেছিলাম। মিডিয়ার কল্যানে সে যায়গা সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর এখন বলা যেতেই পারে সে যায়গা থেকে আমরা ভাগ্যের জোড়েই প্রাণ নিয়ে ফিরেছিলাম। আমি অবশ্যই সস্তির নি:স্বাস ফেলছি না এই ভেবে যে , যাক আমরা তো বেচে ফিরছি। তাতেই চলবে।
কিন্তু এভাবে আর কত দিন? দ্বীপের স্থানীয়দের কথা অনুসারে দ্বীপটাতে ১৭ ধরনের নিরাপত্তা বাহিনী বর্তমান । যাদের কিনা সেখানে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রদানে সর্বদা সতর্ক থাকার কথা। কিন্তু সে যায়গার আশেপাশে স্থানীয় কিছু ডাব বিক্রেতা বাদে নিরাপত্তা বাহিনী তো দুরে থাক কোন স্হানীয়রই দেখা পাওয়া যায়নি। তাহলে সরকার বসিয়ে রেখে তাদেরকে বেতন ভাতা দিচ্ছে কেন?
আমরা যে ডেথ জোনটাতে না জেনে নেমেছিলাম সেখানে একটা সতর্ককারী সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিতে কি কোটি টাকার দরকার হয়?
সাধারন মানুষের জীবন নিয়ে প্রশাসনের উদাসিনতার অবসান কি হবে না।? বারবার আমাদের এই দৃশ্য দেখা কি বাধ্যতামূলক ? বারবারই অনিশ্চয়তাকে সঙ্গে নিয়ে মানুষ কিন্তু বিনোদন খুজতে যাবে না।যা পর্যটন শিল্পের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:৩২