somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউঃ দা স্কিন আই লিভ ইন :-B

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পেদ্রো আলমোদোভার সাহেবের মুভি স্প্যানিশ চলচ্চিত্রে সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা সৃষ্টি করেছে। লুই বুনুএল-এর পরে সবচেয়ে পরিচিত স্প্যানিশ চলচ্চিত্রকার তিনি, সেটা না বললেও চলে। তাঁরই সর্বশেষ চলচ্চিত্র 'The Skin I Live In'। অনেকদিন পরে একটা মুভি পুরা দেখলাম এক সিটিং এ। :)

প্রথমেই কিছু কথা বলে নেওয়া দরকার। আলমোদোভার-এর মুভিতে স্বাভাবিক কিছু আশা করলে আশাহত হবেন। হিউম্যান সাইকোলজি বা মানব মনের গহীন ও অন্ধকার প্রকোষ্ঠ নিয়ে গবেষণাই বোধয় তাঁর আগ্রহ। তাঁর ফরেন মুভি ক্যাটাগরিতে অস্কার পাওয়া 'All About My Mother'-এ এক মা তাঁর সন্তানের মৃত্যুর পরে সন্তানের বাবার খোঁজে বের হয়। ইনটারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে, বাবা কিন্তু এক শিখণ্ডী। 'Talk To Her'-এ (যেটা আমার ব্যাক্তিগত পছন্দ :P ) দুজন নারীর গল্প দেখি (যাদের একজন বুলফাইটার আরেকজন নর্তকী!) যেখানে তারা দুজনেই কোমায় আছে এবং তাদের দুজনের বয়ফ্রেন্ডদের ভিতরে হাসপাতালে গড়ে ওঠা এক অদ্ভুত সম্পর্ক নিয়েই মুভি আগায়।



'Volver'-এ কাহিনী আবার এরকম যে এক মা মৃত্যুর পরে ফিরে আসে নিজের ঘরে নিজের মেয়েদের সাথে থাকার জন্য। :-*

যাহোক, এই মুভির কথাই বলি আগে। 'স্কিন'-এর সারসংক্ষেপ হচ্ছে, এক প্লাস্টিক সার্জন (আন্টোনিও ব্যানদেরাজ) একধরণের কৃত্রিম চামড়া তৈরি করে যা মানব চামড়ার চেয়ে বহুগুনে মজবুত। তাঁর 'মানব গিনিপিগ' হচ্ছে এক রহস্যময়ী (এলেনা আনায়া) যাকে আটকে রাখা হয়েছে এক রুমে। কিন্তু মনে হয় যেন সে পুরোপুরি স্বেচ্ছায় এই বন্দিত্ব গ্রহন করেছে! কিন্তু মুভি যত আগায় রহস্যের প্যাঁচ তত খুলতে থাকে। (নামকরণের সার্থকতা বোঝা গেল? ;) )



তবে কাহিনীর শেষ আধা ঘণ্টায় বেশী জটিল একটা টুইস্ট আছে, যেটা বাস্তব না অবাস্তব সেটা বোঝার দায়িত্ব আপনার হাতেই দিলাম। ওইটা আগেই জানিয়ে দিয়ে মজা নষ্ট করতে চাই না। আপাতত নাহয় মুভির অন্য কিছু ব্যাপার আলোচনা করি। B-)

আলমোদোভারের মুভির মূল আকর্ষণ তাঁর জাঁকাল রঙের ব্যাবহার (sumptuous use of color )। সামান্য সিনও তাঁর ক্যামেরার জাদুতে অপূর্ব ব্যঞ্জনা লাভ করে। যেমন নিচের স্ক্রীনশটঃ







একইসাথে তাঁর লাইট এবং শেডের ব্যাবহারও অসামান্য। যেমনঃ







আরও বেশী দিলে পেজ লোডে সমস্যা হবে বিধায় বিরত হইলাম। তবে মুভি দেখছি নাকি মিউজিয়ামে হাঁটছি বুঝতে কিঞ্চিৎ কষ্ট হয়। :|

তাঁর স্ক্রিপ্ট লেখা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। এরকম উর্বর মস্তিষ্ক খুব বেশী মানুষের নাই।

তবে ব্যানডেরাজ সাহেবকে নিয়ে কিছু বলি। তিনি আলমোদোভারের পুরনো অ্যাক্টর। আগেও বহু মুভিতে তারা জুটি বেঁধেছেন। হলিউডি ধিশুম ধিসুম মুভি তিনি পয়সার জন্যই করেন বোধ করি বলার দরকার নেই। এই মুভিতেও তাঁর পারফর্মেন্স নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।

এলেনাও অনেক পুরানো স্প্যানিশ অ্যাক্টর। আলমোদোভারের সব মুভিই নারী প্রধান, যৌনতার অবাধ ছড়াছড়ি, তিনি স্বঘোষিত সমকামী বলেই হয়ত। এটাও ব্যাতিক্রম নয়। মুভিটা একা একা দেখার চেষ্টা করলে ভালো হয় তাই। :P

তবে পেনেলোপি ক্রুজ প্রায় তাঁর সব মুভিতেই লিড নারীর ভূমিকায় থাকেন। এটার আগের মুভি 'Broken Embraces'-এও তিনিই ছিলেন। এলেনা সেদিক দিয়ে একটা ভিন্ন মাত্রা এনেছে এই মুভিতে। এই দুই নর-নারীই পুরো মুভির প্রাণ।

তবে শেষ করি কিছু ক্রিটিসিজম দিয়ে। তাঁর শেষ দুটো মুভিতেই স্ক্রিপ্ট নিয়ে প্রশ্ন আছে। ক্রমাগত স্ক্রিপ্টে অভূতপূর্ব জিনিস আনতে আনতে শেষ পর্যন্ত মুভি কতটা বাস্তব থাকে এটা একটা বড় প্রশ্ন। এখানেও তাই হয়েছে, কোনও কোনও জায়গায় অসাধারণ হতে হতে কোথাও হয়ে গেছে বাড়াবাড়ি (আমার ব্যাক্তিগত অভিমত)। সে কারণেই হয়ত ক্রিটিক রেটিং-ও আলমোদোভারের মুভির তুলনায় এইটারও একটু কমই আসছে। /:)

তবে বাস্তবতার গতানুগতিকতা থেকে একটু ফ্যান্টাসি জগত চাইলে আর একই সাথে চক্ষু-সুখকর কিছু সময় কাটাতে চাইলে ঘুরে আসুন আলমোদোভারের দুনিয়া থেকে, সময়টা খারাপ কাটবে না কিন্তু। ;)

ডাউনলোড লিংকঃ

Click This Link
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×