‘হারলেও ব্রাজিল/আর্জেন্টিনা জিতলেও ব্রাজিল/আর্জেন্টিনা’ এইটা একটা বেকুবিয় বচন।
ব্রাজিল সাত গোল খাওয়াতে আর্জেন্টিনার সাপোর্টারদের এখন প্রিয় পানিয় সেভেন-আপ আর প্রিয় গান সাত ভাই চম্পা জাগোরে..! আর ব্রাজিলিয়ান সাপোর্টারদের প্রিয় সঙখ্যা ২৮ আর এর পর চার দিয়ে বিভাজ্য যত সংখ্যা আসে সব। কারন তাদের জ্যতিষ জ্ঞান বলে তত গুলা বছরই নাকি আর্জেন্টিনাকে অপেক্ষা করতে হবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে। এই সবই মানা যায়। মানা যায়না যখন কেউ বলে -‘হারলেও ব্রাজিল/আর্জেন্টিনা জিতলেও ব্রাজিল/আর্জেন্টিনা’!
ল্যাটিন এই দেশ দুইটা আমাদের কি খালু লাগে যে তারা যেমনই খেলুক আমাদের তাদেরকে লুঙ্গি কাঁচা মারি সাপোর্ট করি’ই যেতে হবে!!
ইহাদের ব্যাপারে ছোট্ট একটা ঘটনা বলি। গান-বাঙলা চ্যানেল চালাই রাখি এক দিন আমি মোবাইল ঘাঁটা ঘাঁটি করতেছিলাম। পিচ্ছি ভাইগ্নাটা সামনে দৌড়া-দৌড়ি করতে করতে হঠাৎ বলে বসলো- ‘মামা, মামা ওরা পাছু দেখায় কেন?’ আমার কান আর চোখ দুটা এক সাথে তড়াক করে খাড়া হই গেলো। তাকাই দেখি টিভিতে শাকিরা আপু লা.. লা..লা গাইতেছে, আর কিছু নিগ্রো ব্রাজিলিয়ান ক্যামেরার সামনে গায়ের থলথলে উদাম মাংস নাড়াইতেছে যেটাকে তার সাম্বা বলে। ধাম করি কার্টুন চ্যানেল ধরি ভাইগ্না নুরাজরে বুজাইলাম -নারে বাপ, ঐসব কিছু দেখায় নাই তো। এইবার সে তার প্যান্টটাকে টানি উপরে তুলে তার নিম্নদেশ উজাড় করে আমার সামনে নাড়াতে নাড়াতে বলে ‘না, দেক মামা এই ভাবে, এই ভাবে দেকাইছে..দেক।” কইলাম ওরা বোকাতো এই জন্যে, কি আর কমু।
আফ্রিকা থেকে পর্তুগীজদের পাচার করা ক্রীতদাস ‘সিম্বা’রা ব্রাজীলে গিয়ে উদাম গায়ে যে নাচ দিতো তাহাই এখন সাম্বা নাম নিয়ে ল্যাটিনদের ঐতিজ্য হয়ে গেছে। বেছে বেছে তারা এই ঐতিহ্যটাই নিলো যাতে তাদের দেশের মেয়েদের কাপড় খোলার অজুহাত খুঁজতে কষ্ট করা না লাগে! তাই নারী স্বাধীনতায় বোধহয় তারাই এগিয়ে!
তাদের এমন সব বিপনী বিতান আছে যেখান থেকে বাজার করে ফেরার জন্যে হেলিকপ্টার ভাড়া পাওয়া যায়। অথচ রাস্তায় না খেয়ে থাকার সংখ্যাও অসীম। তাদের এমন কিছু জায়গা আছে যেখানে ছেলে মেয়েরা সন্ধায় জড়ো হয়। অপরিচিতদের থেকে যে কাউকে বেছে নিয়ে রাত কাটায় আবার সকালে যে যার গন্তব্যে রাস্তা মাপে। মোদ্দা কথা, এমনই এক নচ্ছার জাতের সাথে আমাদের পরিচয় শুধু মাত্র তাদের ফুটবলের মাধ্যমেই। তাদের এই একটা শিল্পকেই আমরা ভালোবাসি। সেই ফুটবলই যদি তারা কাপঝাপ খেলে তো এর পরও তাদেরকে আমারা সাপোর্ট করি যাবো কি বুজে!
হারি আর জিতি আমরা অটো সাপোর্ট করতে পারি তেমন একটা দলই আছে বিশ্বে। সেটা বাংলাদেশ। সে আমরা ফুটবল, ক্রিকেট, কাবাডি, ডাঙ্গুলী যাই খেলি। না চাইলেও জন্ম সূত্রেই আমরা এই দলেরই সাপোর্টার সবাই। আর সব খেলার মধ্যে আমরা সবচেয়ে ভালো খেলি ক্রিকেট। আর ক্রীকেট আমাদের মধ্যে সব চেয়ে ভালো খেলে সাকিব। তাই সাকিবের খেলা নিয়ে চুদুর-বুদুর করা মানে বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়েই ঐটা করা। আর এই অঙ্গনে (ক্রীড়া) বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে করা মানে পুর বাংলাদেশ নিয়েই করা।
তাই ক্রিকেট নিয়ে এই সব চুদুর-বুদুর বন্ধ না করলে বাংলাদেশের পরবর্তি জয় দেখতে আর্জেন্টাইন সাপোর্টারদের বিশ্বকাপ জয়ের মত ৫০ বছরের ওয়েটিঙ লিস্টে বসে থাকতে হবে।
আফনান আব্দুল্লাহ্