একটা সময় নাকি কলেরা রোগীকে তরল খেতে দিতো না। বলতো- "তরল খেলেই তরল বের হবে আর মরবে।" হাতের কাছেই ডাব, লেবু পানি, লবন, ভাতের মাড় সব থাকার পরও মানুষ মরে উজাড় হয়ে যেতো। লোকে এটাকে উপর ওয়ালার অভিশাপ আর তাদের মৃত্য এভাবেই "লিখা আছে" ধরে নিতো।
.
অথচ উপরওয়ালা লিখে রেখেছেন নিয়ম, প্রসেস বা কোড গুলো। কিন্তু কোন প্রসেসে যাবো তা জানা আর পছন্দ করা আমদেরই কাজ। আমরা জেনে বা না জেনে ক্লিক করে করে একেকটা "লিখে রাখা" প্রসেস অন করি। একটা ক্ষেতে ধানের বীজ ফেলা মানে আমি ধান জন্মানোর "লিখে রাখা" প্রসেসটা ক্লিক করলাম। সেখানে চাইলে গম না হয় ভুট্টাও ফলানো যেতো। মানে একটা জমি থেকে ধান, চাল, ভুট্টা, গম যে কোন কিছুই ফলানোর সামর্থ প্রকৃতিকে দেয়া আছে। আমাদের আছে জানার আর পছন্দ করার স্বাধীনতা। আর এভাবেই মানুষ নিজের আবার এক সাথে সবাই দল বেঁধে প্রতিটা মাইক্রো মিলি সেকেন্ডে অজস্র কোটি লিখে রাখা ভাগ্য থেকে নিজের ভাগ্য পছন্দ করতে করতে জীবন কাটায়। অজস্র কোটি কি করবে আর কি ভাবে করবে থেকে বেছে নেয়াটাই তার আর তাদের পারফর্মেন্স। ছুরি দিয়ে পেয়াজ কাটবে না কারো গলা কাটবে সেটা তার পছন্দ, তার পাপ। আলফ্রেড নোবেলের পাথুরে পাহাড় ভেঙ্গে টানেল বানানোর ডিনামাইট মানুষ যাত্রীবাহি বাসে বসিয়ে বলবে- ঐ ব্যাটা নোবেলই মানুষ মারার কারিগর । সে বোমা বানাইছে!" অথচ কেউ তার উপর ভর করে জোর করে কিছু করাচ্ছে না।
.
লিখে রাখা কোড গুলো না জেনে মূর্খ থেকে, কোইন্সিডেন্স গুলোতে নজর না রেখে, ভুল অপশান পছন্দ করে ধরা খেয়ে মানুষ বলে বেড়ায় সব আগে থেকেই উপরওয়ালা তার কপালে লিখে রেখেছে বলেই এমনটা ঘটছে। অথচ উপরওয়ালা অজস্র পথ তার জন্যে লিখে রেখেছিলো আর সে যে পথেই যেতো সেটা উপরওয়ালারই লিখে রাখা পথেই হতো। কিন্তু সে নিজেই নিজের পথ পছন্দ করেছে। সৃষ্টিকর্তা তাকে ঘাঁড় ধরে ডানের পথ বামে নিয়ে যান নি।
.
নোট:
কুরআন শরীফের এই আয়াত গুলো এখানে প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে।
.
১. ‘যে বিপদ-আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা হচ্ছে তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই, আল্লাহ তা’য়ালা তো অনেক গুনাহ ক্ষমা করে দেন’ (৪২:৩০)।
.
২. ‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন জলে-স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তা’য়ালা তাদের কতিপয় কাজকর্মের জন্য তাদের শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাতে চান, যাতে করে তারা (সে কাজ থেকে) ফিরে আসে’ (৩০:৪১)।
.
#fate_afnan
#Afnan_Abdullah