ইংরেজী বলা শেখার জন্যে যে পরিমান সময়, শ্রম, টাকা খরচ করি সেটা ৩০% এ নামিয়ে বাকি ৭০% যদি আমরা কাজ কর্ম শিখায় ঢালতাম তাহলে কি আরেকটু কাজে দিতো না?
.
জেমস্ বন্ড এর মত ইংরেজী বলার যে যুদ্ধটা মানুষ করতেছে, দেশের ভেতরে সারা জীবনে ঐ ইংরেজী তাঁরা কার সাথে বলেন? কিংবা তাঁদের সাথেইবা দেশের কোন কর্মকর্তা ঐ পর্যায়ের ইংরেজী বলে? প্রায় সব ভাইভা আর কর্পোরেট মিটিঙ সিটিঙ গুলো ইন্ট্রো পর্বের পরেই মূল কাজকর্ম নিয়ে লোকাল ভাষাতেই বাতচিত শুরু হয়।
.
বিদেশি যাদের সাথে কাজ করতে হয় তাদের ৯০% ই এশিয়ান- ভারত, শ্রীলঙ্কা নাহয় চীনা নাগরিক। আর এই এশিয়ানদের ইংরেজী আমাদের মতই। কিন্তু কাজে কর্মে তাঁরা অনেক তুখোড়। এবং এই তুখোড় এশিয়ানরা তাঁদের দেশিয় উচ্চারনের ইংরেজী দিয়েই ইউরোপিয়ানদের সাথে ধুমচে কাজ করে যাচ্ছে।
.
আমরা অজস্র মেথডের, বাহারী সব গুরুদেবদের বিচিত্র সব কোর্স এ শুধু ইংরেজী বলা শেখার জন্যে যে সংগ্রাম করতেছি, সেটা যদি টেকনিক্যাল শিক্ষায় খরচ করতাম! ধরা যাক দুয়েকটা একটা প্রোগ্রামিঙ বা কুয়েরি ল্যাঙ্গুয়েজ, ভিডিও-ফটো এডিটিঙ, এনিমেশান শেখা; মোদ্দা কথা যার যার প্রফেশানের মূল বিষয়ে তুখোড় হওয়াতে আরো সময় দিলে নিশ্চয় দেশের ভেতরে এতো বিদেশি হায়ার করতে হতো না। আর যে কোন টেকনিক্যাল নলেজ এর সাথে ঐ টেকনিক্যাল ল্যাঙ্গুয়েজটা মানুষ স্বভাবতই শিখে যায়। কোন পড়াশোনা না করা মানুষও কম্পিউটার এসেম্বেল করতে করতে সবগুলো পার্টস আর সেগুলোর কাজ এর ইংরেজী শব্দ গুলো জেনে যায়।
.
মূল কথা টেকনিক্যালি এক্সপার্ট একজন মানুষ টেকনিক্যাল ল্যাঙ্গুয়েজেও এক্সপার্ট থাকে। ভাষার জন্যে সে কখনোই আটকে যাবে না। কিন্তু ভুং ভাঙ করে ইও, টিও হাওকাউ করে ভালো ইন্ট্রো অনেকেই পেতে পারে। কিন্তু শুধু ফোরকে মনিটর দিয়েতো মেশিন চলে না, সেখানে কন্টেন্ট থাকতে হয়। এরকম একটা দল আছে যারা সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে ইংরেজী শিখতে গিয়ে মাতৃভাষাটাই ভুলে বসে থাকে। দিন শেষে একটা ভাষাই শিখে।
.
ইংরেজী শেখা নিয়ে সমস্যা না। রিডিঙ আর রাইটিঙ তো মেন্ডেটরি। পয়েন্ট হচ্ছে স্পোকেন এর পেছনে যে পরিমান সময় আর টাকা গচ্ছা দিচ্ছে ছেলে পেলে, কোচিঙ গুলো যে ভাবে প্রচার করে তার বাস্তবতা ভিন্ন। সময় আর টাকা দুটাই লিমিটেড মানুষের। স্পোকেন এর পেছনে সেটা না ঢেলে মূল স্কিল ডেপলপমেন্টে ঢাললে তা কর্ম জগতে বিরাট কাজে আসবে। উদহারন হিসেবে বলতে পারি, ফাইনান্সে একটা ছেলে স্পোকেন (ধরলাম আই.ই.এল.টি.এস গ্রেড ৭+ ) এর পেছনে সময় না দিয়ে যদি SQL কিংবা কুইকবুক শিখে গ্লোবালি তার কেরিয়ার শুধু ভালো ইংরেজি জানা একটা ছেলে থেকে অন্তত বিশ বছর এগিয়ে যাবে। শখের বসে ব্রিটিশ একসেন্ট কেউ শিখতেই পারে। কিন্তু মূল কাজ বাদ দিয়ে শুধু ইংরেজি দিয়ে চাকরি বাকরির যে প্রপাগান্ডা কোচিঙ সেন্টারগুলো ছড়ায় সেটা কি বাস্তব?