somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সফটওয়্যারের নিশ্চিত মান নিয়ন্ত্রণ

১৫ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বজুড়ে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন আমাদের জনজীবনকে অনেক স্বস্তি দিয়েছে। দিয়েছে ঘরে বসে সমগ্র পৃথিবীর খোঁজ-খবর রাখা, তথ্য আদান-প্রদান এবং পৃথিবীর এক প্রান্তে বসে অন্য প্রান্তের অফিসের কাজকর্ম সম্পাদনের সুযোগ। প্রতিবেশী দেশ ভারত আজ তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের প্রথম সারির একটি দেশ। আমাদের দেশের অবস্থান সুদৃঢ় না হলেও আমরা আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের স্লোগান এক্ষেত্রে অনেক সহায়তা করবে বলে মনে হয়। তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ মূলত আইটি অর্গানাইজেশন এবং আইটি রিসার্চ অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। আইটি (সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট) অর্গানাইজেশনে কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স (কিউএ) বা কোয়ালিটি কন্ট্রোলের কন্ট্রোলিং পাওয়ার বা ক্ষমতা ও এর গুরুত্ব অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়। কিউএ ডিপার্টমেন্টের সাইন অফ বা অনুমতি ছাড়া একটি সফটওয়্যারের ফাইনাল রিলিজ হয় না। অথচ এ ডিপার্টমেন্ট সম্পর্কে সুউচ্চ এবং সুবিশাল ধারণা আমাদের দেশের ইন্ডাস্ট্রিতে বিদ্যমান নয় এবং এ কারণেই কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স নিয়ে কিছু লেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।

আইটি (সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট) কোম্পানিতে সফটওয়্যার কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স/কোয়ালিটি কট্রোল-এর ভূমিকা অপরিসীম। সফটওয়্যারের ত্রুটি, সফটওয়্যারের ফাংশনালিটিগুলো ঠিকভাবে কাজ করছে কি না, চাহিদা অনুযায়ী সফটওয়্যারটি তৈরি হয়েছে কি না, কোয়ালিটি মেইনটেইন, পুরো সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রসেস মনিটরিং, প্রসেস ইমপ্রুভমেন্ট এবং আইটি অর্গানাইজেশন স্ট্যান্ডার্ড প্রসেস অনুসরণ করছে কি না, প্রভৃতি বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব হচ্ছে কিউএ এবং কিউসি ডিপার্টমেন্টের। কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স/কোয়ালিটি কন্ট্রোল একই অর্থে ভাবা হলেও এর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।

কিউএ এবং কিউসি’র পার্থক্য

কিউএ প্রসেস অ্যাস্টাবলিস্টমেন্ট, প্রসেস ইভ্যালুয়েটিং, প্রসেসের দুর্বলতা, প্রসেস ইমপ্রুভমেন্ট এবং অর্গানাইজেশনের পুরো লাইফসাইকেলের জন্য প্রযোজ্য। এটা মূলত ম্যানেজমেন্ট লেভেলের প্রফেশনালদের দায়িত্ব এবং পুরো প্রোডাক্টের জন্য প্রযোজ্য, কিন্তু কিউসি শুধু স্বতন্ত্র প্রোডাক্টের জন্য প্রযোজ্য। কিউএ হচ্ছে প্রসেস অরিয়েন্টেড, আর কিউসি হচ্ছে প্রোডাক্ট অরিয়েন্টেড। কিউসি সফটওয়্যারের ত্রুটি খুঁজে বের করে ত্রুটিমুক্ত করার জন্য রিপোর্ট দেয়। কিউএ সফটওয়্যারে যাতে ত্রুটি না পাওয়া যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করে। কিউএ যেহেতু প্রসেস অরিয়েন্টেড, সেহেতু সবচেয়ে জনপ্রিয় আইটি ম্যানেজমেন্ট প্রসেসগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

CMMI- Capability Maturity Model Integration

ITIL- Information Technology Infrastructure Library

COBIT- Control Objective for Information Technology

সাধারণত আইটি ম্যানেজমেন্ট প্রসেসগুলোর যেকোনো একটি আইটি অর্গানাইজেশন অনুসরণ করে থাকে, তবে তা নির্ভর করে অর্গানাইজেশনের কাঠামো, ব্যবসায়ের ধরন ও ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্তের ওপর।

কিউএ ডিপার্টমেন্টের পজিশনের স্তরগুলো

সাধারণত নিম্নলিখিত পজিশনগুলো কিউএ ডিপার্টমেন্টে বিদ্যমান।

সফটওয়্যার কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স টেস্টার
V
সফটওয়্যার কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স অ্যানালিস্ট
V
সফটওয়্যার কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স লিড
V
সফটওয়্যার কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স কো-অর্ডিনেটর (বড় অর্গানাইজেশনের জন্য প্রযোজ্য)
V
সফটওয়্যার কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ম্যানেজার
V
সফটওয়্যার কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ডিরেক্টর (বড় অর্গানাইজেশনের জন্য প্রযোজ্য)

এর পরের পজিশনগুলো হচ্ছে পুরো কোম্পানির দায়িত্ব সম্পর্কিত। যেমন : চিফ টেকনোলজি অফিসার।

চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার

উল্লেখ্য, কিউএ লিড/সিনিয়র কিউএ হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতার পর বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করার সুযোগ থাকে। আবার যারা সফটওয়্যার প্রোগ্রামিংয়ে ভালো, তারা অটোমেশন টেস্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করে থাকেন।

উল্লেখযোগ্য কিছু সফটওয়্যার ত্রুটি

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সঠিকভাবে করা না হলে বিভিন্ন ধরনের ত্রুটি সফটওয়্যারে থেকে যায়। যার ফলে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এসব কারণে কিউএ’র গুরুত্ব অপরিসীম।



২০০৫ সালে হাইব্রিড গাড়ি তৈরির কোম্পানিকে সফটওয়্যারের ত্রুটির জন্য ২০০ কোটি থেকে ৩০০ কোটি ডলার খরচ করতে হয়েছে। যদি সঠিকভাবে কিউএ করা হতো তাহলে ২০ লাখ থেকে ৩০ লাখ ডলারের বেশি খরচ হতো না এবং কোম্পানির শত শত কোটি ডলারের চেয়েও বেশি সাশ্রয় হতো।



জানুয়ারি ২০০৫ সালে আমেরিকার ১৭ কোটি ডলারের আইটি প্রকল্প মার্চ ২০০৫ সালে বন্ধ করা হয়েছিল। এর অন্যতম কারণ ছিল সফটওয়্যারের প্রচুর ত্রুটি।

সফটওয়্যারের ত্রুটির ফলে ২০০৩ সালে উত্তর আমেরিকার ৫ কোটি লোক পুরো ১ দিনের জন্য বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত ছিল। ১০০ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ কারণে ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৬০০ কোটি ডলার। ওইদিন মানুষের ভোগান্তি ছিল চরমে। কয়েক লাখ কোড পর্যালোচনার পর সফটওয়্যারের ত্রুটি খুঁজে বের করে তা ফিক্সড করা হয়েছিল। সঠিকভবে কিউএ হলে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের সময়ই এই ত্রুটি ধরা পড়ত, সেক্ষেত্রে হয়ত ৬০ কোটি ডলারের বেশি খরচ হতো না অর্থাৎ ৫৪০ কোটি ডলার সাশ্রয় হতো এবং কোটি কোটি মানুষ চরম ভোগান্তি থেকে বাঁচত।



এবার বাংলাদেশের দুয়েকটি ওয়েবসাইটের কথা তুলে ধরা যাক। বেশ কয়েক বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় লিঙ্কের মধ্যে ঘটক পাখি ভাইয়ের ওয়েবসাইটের ঠিকানা ছিল। যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর তারা ব্যবস্থা নিয়েছিল। বেসরকারি এবং সরকারি অনেক ওয়েবসাইটের মান এবং তথ্য নিয়ে বিচার করলে কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সের ছাপ খুব একটা দেখা যায় না। এসব ওয়েবসাইট যথাযথ কিউএ’র অভাবে ত্রুটিপূর্ণ।

কিউএ ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব

সাধারণত কিউএ/কিউসি যেসব দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করে থাকে তার মধ্যে আছে : বিজনেস রিকোয়ারমেন্ট এবং সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট বোঝা, টেস্ট প্ল্যান লেখা, টেস্ট কেস লেখা, টেস্ট কেস এক্সিকিউট করা, ডিফেক্ট লগ করা, টেস্টিং স্ট্যাটাসের রিপোর্ট জানানো, বিভিন্ন ধরনের টেস্ট এক্সিকিউট করা। যেমন- ইউনিট, ইন্টিগ্রেশন, সিস্টেম, ইউএটি, লোড, পারফরমেন্স, স্ট্রেচ, সিকিউরিটি, ব্যাকএন্ড, হোয়াইট বক্স প্রভৃতি। কিউএ প্রক্রিয়াগুলো বোঝা এবং সে অনুযায়ী অডিট করা, বিজনেস ও সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট অ্যানালাইজ করা এবং এতে ত্রুটি থাকলে তা জানিয়ে দেয়া। ফ্লোচার্ট ভেরিফাই করা, ডিফেক্ট ট্র্যাকিং লাইফ সাইকেল, সার্ভিস লেভেল এগ্রিমেন্ট অনুসরণ করা এবং কনফিগারেশন ম্যানেজমেন্ট, রিসোর্স অ্যালোকেশন, ডিপার্টমেন্টের লক্ষ্য নির্ধারণ করা, অ্যাপ্রেইজাল, প্রশিক্ষণ প্রভৃতি এই ডিপার্টমেন্টের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব। ডিপ্লোমেটিক উপায়ে কিউএ’র প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করা ও ত্রুটি-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কঠোর মনোভাব পোষণ করে পণ্যের সর্বোচ্চ মান ঠিক রাখা হচ্ছে কিউএ’র অন্যতম দায়িত্ব।

বেতন কাঠামো

উন্নত বিশ্বে সাধারণত কিউএ’র বেতন ডেভেলপারদের চেয়ে বেশি। নিচে কয়েকটি দেশে কিউএ’র বার্ষিক বেতন উল্লেখ করা হলো।

আমেরিকা :
০-১ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার ডলার, ১-৪ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ৩৬ হাজার থেকে ৬০ হাজার ডলার, ৫-৯ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ৭০ হাজার থেকে ১১০ হাজার ডলার এবং ১০-১৯ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ৯৬ হাজার থেকে ২ লাখ ডলার পর্যন্ত বেতন দেয়া হয়ে থাকে। নিচে গড় বেতনের চার্ট দেয়া হলো।

ভারত :
০-১ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ৯৬ হাজার থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার রুপি, ১-৪ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ১ লাখ ৯৬ হাজার থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার রুপি, ৫-৯ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ৩ লাখ ৭১ হাজার থেকে ৬ লাখ ২৭ হাজার রুপি, ১০-১৯ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ৪ লাখ ২১ হাজার থেকে ৯ লাখ ৬ হাজার রুপি বেতন দেয়া হয়ে থাকে, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর বেশিও বেতন দেয়া হয়।

বাংলাদেশ :
০-১ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ১-৪ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ১ লাখ ৪৪ হাজার থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, ৫-৯ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ২ লাখ ৮ হাজার থেকে ৬ লাখ টাকা, ১০-১৯ বছরের অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে ৬ লাখ থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন দেয়া হয়ে থাকে। যদিও বাংলাদেশে ১০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কিউএ পেশাজীবী পাওয়া সহজ নয়।

উল্লেখ্য, বেতন কাঠামো শুধু কয়েক বছরের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করেই নয় বরং বিভিন্ন টেকনোলজি, টুলস, অ্যাপ্লিকেশন, বড় এবং আদর্শ মানের প্রতিষ্ঠানের কাজের অভিজ্ঞতা, স্পেশাল সার্টিফিকেশন, কমিউনিকেশন প্রভৃতি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে তারতম্য হয়। সেক্ষেত্রে উপরোল্লিখিত বেতন কাঠামোর ধারণা ১০০ শতাংশ ঠিক বলা যায় না, তবে গড়পড়তা ধারণা দেয়ার জন্য যথেষ্ট। এই পেশায় দেশে কয়েক বছর চাকরি করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে উন্নত দেশে চাকরি নিলে অনেকগুণ বেশি বেতন পাওয়া যায়। আমাদের দেশে কিউএ পেশাজীবী ফ্রিল্যান্সার এবং আউটসোর্সিং প্রজেক্ট করে অনেক টাকা উপার্জন করে থাকেন। এ ব্যাপারে ফ্রিল্যান্সার প্রজেক্টের ওয়েবসাইটগুলো সহায়ক।

এ পেশায় যোগ্যতা

ন্যূনতম যেকোনো বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি তবে কমপিউটার সায়েন্স বা কমপিউটার ইনফরমেশন সিস্টেম হলে খুবই ভালো হয়। এর পর কিউএ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিলে এ পেশায় চাকরি লাভ করা খুবই সহজ। যারা কমপিউটার সায়েন্স ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের ওপর মাস্টার্স করেছেন তারাও কিউএ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এ পেশায় যুক্ত হতে পারেন। উন্নত দেশে কিউএ টেস্টার/ইঞ্জিনিয়ার পাওয়া যায়, যাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কমপিউটার সায়েন্স নয়, অথচ সঠিক ট্রেনিং নিয়ে এবং তাদের একান্ত প্রচেষ্টায় এই পেশায় অনেক কমপিউটার বিজ্ঞান জানা লোকদের চেয়ে ভাল করছেন। একজন সফটওয়ার টেস্টার বা কিউএ অ্যানালিস্ট হতে গেলে যেসব বিষয়ের ওপর জ্ঞান থাকা আবশ্যক সেগুলোর মধ্যে আছে : ইংরেজি ভাষা, বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেম, ওয়েব প্রযুক্তি, প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক বিষয় এবং যেকোনো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে কোডিংয়ের অভিজ্ঞতা, রিলেশনাল ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, কিউএ’র বিভিন্ন টুলস, ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড আইটি অর্গানাইজেশনের স্ট্রাকচার, আইটি অর্গানাইজেশনের প্রতিটি পদের দায়িত্ব-কর্তব্য বোঝা, টেস্টিং মেথোডলজি, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট লাইফসাইকেল, ডিফেক্ট ট্র্যাকিং লাইফসাইকেল, বিভিন্ন ধরনের টেস্টিং এবং অটোমেশন টেস্টিং টুলস ইত্যাদি বিষয়ে জানা।

ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অতিপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো হলো : ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা, কার্যকর যোগাযোগ, কার্যকর ব্যবস্থাপনা, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা টুলস ইত্যাদি সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান।

সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিতে সফটওয়্যার টেস্টার বা কিউএ হচ্ছে একটি সহজ প্রবেশক্ষেত্র। প্রথমে এই পেশায় ঢুকে পরে দক্ষতা অনুযায়ী বিভাগ পরিবর্তন করা যায়। কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে বিশ্বব্যাপী মহিলাদের কিউএ পেশায় বেশি অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের মহিলাদের জন্য এই পেশা হতে পারে একটি সুবর্ণ সুযোগ।

আমাদের দেশে কিউএ’র অবস্থান

দেশে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিউএ’র ওপরে ধারণা দেয়া হলেও তা মোটেই যথেষ্ট নয়। দুয়েকটি কোম্পানিতে ইটার্নশিপের ব্যবস্থা থাকলেও যথেষ্ট প্রশিক্ষণের অভাবে সফল নয়। এছাড়া কোনো কিউএ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কার্যক্রম নেই। এর ফলে আমাদের দেশে কিউএ বিশেষজ্ঞ তৈরি হচ্ছে না এবং কিউএ’র গুরুত্ব অনেকটা সীমিত অবস্থায় রয়েছে। ওয়াইটুকে সমস্যার সময় মূলত কিউএ’র চাহিদা ছিল অকল্পনীয়। আজ থেকে অনেক বছর আগে আমেরিকাতে কিউএ’র কাজ তাদেরকে দেয়া হতো, যাদের অন্তত বেশ কয়েক বছরের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের অভিজ্ঞতা ছিল। সেক্ষেত্রে কিউএ পেশাজীবীদের গুরুত্ব অনেক বেশি ছিল। পরে চাহিদার সাথে সাপ্লাইয়ের সামঞ্জস্য না হওয়ায় ইটার্নশিপ এবং ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে এ পেশায় অনভিজ্ঞ লোক নেয়া হচ্ছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে বেশ কিছু আউটসোর্সিং প্রকল্পের কাজ চলছে। নতুন কিছু সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি এবং শুধু কিউএ কোম্পানিও গঠন হচ্ছে। মূলত বহির্বিশ্বের কাজের অর্ডারের ওপর নির্ভর করে এই নতুন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকাশ ঘটছে। সম্প্রতি নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল সোর্সিং ফোরাম এবং এক্সপো’র কনফারেন্সে অনেক বিদেশী কোম্পানি বাংলাদেশে প্রজেক্ট করানোর মনোভাব ব্যক্ত করেছে। কেননা, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে প্রোডাকশনের খরচ কম পড়বে। শুধু কিউএ’র ওপর অনেক আউটসোর্সিং প্রকল্পের কাজ বাংলাদেশে হচ্ছে এবং প্রচুর কাজ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে অনেক দক্ষ কিউএ প্রয়োজন। দক্ষ কিউএ পেশাজীবী তৈরির জন্য কিউএ ইনস্টিটিউট খুব প্রয়োজন। সরকার আর্থিক সহায়তা দিলে মানসম্মত কিউএ ইনস্টিটিউট গড়ে উঠতে সময় লাগবে না। তাছাড়া দেশে বেসরকারিভাবে কিউএ ইনস্টিটিউট করার উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। দেশে দক্ষ কিউএ পেশাজীবী তৈরি হলে অনেক বেশি প্রকল্প পাওয়া যাবে এবং বিদেশে দক্ষ কিউএ পেশাজীবীদের কাজের সুযোগও বাড়বে। সেক্ষেত্রে উভয় দিক বিবেচনা করলে আমাদের দেশ বছরে কোটি কোটি ডলার আয় করতে সক্ষম হবে। সর্বোপরি, আমাদের দেশে কিউএ’র কার্যক্রমের ব্যাপকতা, প্রয়োজনীয়তা ও এর সম্প্রসারণ ঘটবে রেনেসাঁর মত.

লেখকের নাম: মো: মানিকুজ্জামান
For QA Training:
[email protected]
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×