somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১/১১ জরুরী অবস্থা জারি, ক্ষমতা দখল কী মইনের একক পরিকল্পনা নাকি বাস্তবায়ক মাত্র

৩১ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ৮:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিরোনামটা পড়ে পাঠক পারসেপশন এর দিক থেকে আমার বিশ্বাস এক পার্সেন্ট পাঠকও পাওয়া যাবে না যারা মনে করেন ১/১১ এর ক্ষমতা দখলের পরিকল্পক প্রাক্তন সেনা প্রধান মইন একা নিজে।
কিন্তু মইন সৌভাগবান।
ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিদায়ী রাষ্ট্রদূত স্টিফেন ফ্রোয়েন গত বৃহস্পতিবার নিজেকে বাচাতে সাংবাদিকদের সামনে এমন এক ক্রেডিট দিয়েছেন। এডিআরইউ মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বিদায়ী ইইউ রাষ্ট্রদূত যুদ্ধাপরাধ বিচারের বর্তমান প্রক্রিয়ার সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন একমত নয়
ডিআরইউ মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বিদায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাষ্ট্রদূত এক সমাবেশে এমনি এক মন্তব্য করে নিজের হাত ধুয়ে ফেলে আমাদের বোকা বানানোর চেষ্টা করেছেন। ফলে ঐ অবৈধ ক্ষমতা দখলের এককভাবে সবদায় অথবা গৌরব এখন মইনের।
পাঠককে মনে করিয়ে দেই, ‘টিউসডে গ্রুপ" (সমমনা ১৬ বিদেশি কূটনীতিকের জোট) বা মঙ্গলবারের ষড়যন্ত্রী জোটের কথা। ২০০৭-এ জরুরি অবস্থা জারি হঠাৎ করে হয়নি। এর প্রায় বছর খানেক আগে থেকেই এই গ্রুপ তাদের তৎপরতা চালিয়ে গিয়েছিল। ফ্রোয়েইন ছিলেন এই গ্রুপের সম্পাদক। সে সময়ের মিডিয়ায় তারা খবর হয়ে আসতেন। তখনকার মত এখনও প্রথম আলো আমাদের ‘টিউসডে গ্রুপ" এর কথা স্বীকার করে খবর দিয়েছেন। Click This Link

মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ফ্রোয়েইন আমাদের জানিয়ে বলেছেন,
"আমি, আনোয়ার চৌধুরী বা জার্মানি, ইউকে, ভারতসহ যে ১৬ জন কূটনীতিকে ওয়ান ইলেভেনের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়, আসলে তারা কেউই এর সাথে জড়িত ছিলেন না" -

এর জবাব হলো,
মিঃ রাষ্ট্রদূত স্টিফেন ফ্রোয়েন, আপনি একজন মিথ্যাবাদী।
আপনি বলছেন, যারা সরাসরি এই অভিযোগ করেন তারা ননসেন্স। আর আপনি হলেন প্রখর সেন্স-ওয়ালা মিথ্যাবাদী। একজন কুটনীতিক মিথ্যাবাদী মানে সারা ইঊ যাদের আপনি প্রতিনিধি এরা সবাই মিথ্যাবাদী।

আপনারা প্রথম 'সাহসী যোদ্ধা' হিসাবে জেনারেল মাসুদকে হাত করেন। এরপর সেই সাহসে সব গুছিয়ে নেবার পর ১/১১ এর দুই দিন আগে আনোয়ার আর বিঊটিনিস মইনের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন কেন?

টিউসডে গ্রুপ (সমমনা ১৬ বিদেশি কূটনীতিকের জোট) প্রধান দুই দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রয়াস চালিয়েছিল। এক-এগারো অনেককে বিস্মিত করেছিল। বিস্মিত হয়েছিলাম আমরাও" প্রথম আলো। এখন যদি বিস্মিতই হন তাহলে ২০০৬ সালে হাসিনা দলের নমিনেশন জমা দেবার পরেও শেষ নির্বাচনী সভায় হঠাত করে নির্বাচনের আগে নতুন ভোটার তালিকা তৈরী করতে হবে বলে দাবী তুললেন কেন?

আপনাদের চয়েজ ইঊনুসকে প্রধান উপদেষ্টা করতে চেয়ে শেষে কার আপত্তিতে ফকুরুদ্দিনকে বেছে নিতে রাজি হলেন?

রেট এর সাথে সমস্ত রফা করার পর শেষে হাসিনার সাথে ডিল করলেন কেন?

বলছেন, "দেশের রাজনৈতিক সংকট ও অনিশ্চয়তার এক পর্যায়ে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয় যাতে জড়িত ছিল সেনাবাহিনী"।

এর মানে একা মইনের মাথায় এত বুদ্ধি যে এখন সব দোষ "সেনাবাহিনীর জড়িত" থাকার। মইনের মাথায় এত বুদ্ধি থাকলে তো সবার আগে আপনাদেরকে দেশ থেকে বের করে দিত।

ইউএনডিপির প্রধান ফ্রান্সের নাগরিক রেনেটা ডেসালেন, কেন কফি আনানের বরাতে আমাদের জানলো যে বাংলাদেশী সেনাবাহিনীর শান্তিমিশন অংশগ্রহণে সমস্যা হতে পারে। মইন তাঁর বইয়ে একই কথা স্বীকার করেছে কেবল রেফারেন্সটা দিয়েছে নিইয়র্ক থেকে ইউ এন এর এক ব্যক্তির, যার নাম উল্লেখ করে নাই।

ঐ সপ্তাহে দুই বিগ্রেড সৈন্য ঢাকায় উপস্থিত ছিল বিভিন্ন মিশনে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর নিয়মিত রোটেশনে যোগ দেবার জন্য। মিশনে সেনারা একবছরে জন্য যায়, বছর শেষে তাদের জায়গা নিতে নতুন সেনারা যায় - এটা সেই রোটেশন। আপনারা এই সময় ও সুবিধাটাকে কাজে লাগিয়েছেন। সেনাবাহিনী হাত মুচড়ে ধরতে রটিয়েছেন যে মিশন থেকে বাংলাদেশী সেনা প্রত্যাহার বা ভাগিয়ে দেয়া হতে পারে। আপনারা ভাল করেই জানেন এই খবরের প্রতিক্রিয়া অফিসার তো বটেই সাধারণ সৈনিকের উপর কী হবে। সৈনিকেরা সারা জীবন অপেক্ষা করে বসে থাকে টানাটানির জীবনে কবে দুটো আলগা পয়সা কয়েক লাখ টাকার তারা মুখ দেখবে। সেই আশায় স্বপ্নে যখন তারা ঢাকায় জড়ো হচ্ছে সেসময় মিশনে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এই গুজবের যে প্রতিক্রিয়া হবে, সারা জীবনের সব আশা ভঙ্গের ক্ষোভের সে আগুন থামাবার ক্ষমতা বাংলাদেশের কারো হাতে নাই। অফিসাররাও এক স্বার্থে একে সমর্থন করবেন আর তা না করলেও ঐ সৈনিক বিদ্রোহ ৭ই নভেম্বরের চেয়ে ভয়াবহ হবে তা বলাই বাহুল্য।
এসব জেনেশুনে আপনারা সেনাবাহিনী হাত মুচড়ে ধরতে মিশনে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে খবর রটিয়েছেন। অথচ কে না জানে কোন দেশের আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক গোলযোগের কারণে তাকে মিশন থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হবে এমন কোন নিয়ম কোন আইন, কোন উদাহরণ নাই। এখনও এই ২০১০ সালেও নাই। সবচেয়ে বড় কথা একা জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তিনি জাতিসংঘের পলিটিক্যাল সিদ্ধান্ত নেবার সর্বোচ্চ বডি নিরাপত্তা পরিষদ যেটা সিদ্ধান্ত নেয় এর পর সেটার বাস্তবায়নই তাঁর কাজের এক্তিয়ার। সিদ্ধান্ত তিনি নেন না। আর এধরণের সিদ্ধান্ত হবার আগে নিরাপত্তা পরিষদ বহু তর্কবির্তক হতে হয় এরপর তা নীতি পলিসি হয়ে জায়গা পায়। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলা অসম্ভব। আর ঐ সময় এটা একা বাংলাদেশের বিষয়কে কেন্দ্র করে নেয়া ছিল অসম্ভব। কারণ অন্তত মোশাররফের পাকিস্তান, মাওবাদী নেপালে সে সময় শুধু আভ্যন্তরীণ গোলযোগ না রীতিমত বন্ধুকযুদ্ধ চলছিল। সে তুলনায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক গোলযোগ কিছুই না। এবং ঐ দুই দেশের সেবাবাহিনী বহাল তবিয়তে মিশন করে টাকা কামাচ্ছিল। মইনের তাঁর বইয়ে জাতিসংঘের নিইয়র্ক থেকে ফোনের যে উদ্ধৃতি দেয়া আছেন সেটাও ভিত্তিহীন। বরং অফিসিয়ালী মইন যদি নাম বলতে পারেন তবে জাতিসংঘের সে কর্মকর্তা যত বড়ই কেঊ হন এমনকি খোদ সেক্রেটারী জেনারেল হলেও তিনি তদন্তের মুখে পড়বেন ও চাকরি হারাবেন। মুল কথাটা আমাদের মনে রাখলেই চলে, জাতিসংঘ তার কোন সদস্য দেশকে হুমকি দিতে পারে না, আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বরং যেনও তা না করে এটাই ওর ম্যান্ডেট।
জাতিসংঘের ওয়েব সাইটে সেক্রেটারী জেনারেলের বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সেই মুল ষ্টেটমেন্ট এখনো আছে যাতে গতানুগতিক তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ আছে কিন্তু মিশনে যাওয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে সে কথা দূরে থাকুক মিশন বিষয়েই কোন কথাই নাই। ফলাফলে আমরা দেখেছি সংকীর্ণ কুটিল স্বার্থে আপনারা কত নীচে নামতে পারেন, মিথ্যা বলতে পারেন। সেনাবাহিনী হাত মুচড়ে ধরে আপ্নারা নিজেদের স্বার্থে ওদেরকে জরুরী অবস্থা জারিতে জড়িত ও ব্যবহৃত হতে বাধ্য করেছেন।

সেসব মিথ্যাকে ঢাকতে এখন বাংলাদেশ ছেড়ে যাবার আগে আরো মিথ্যা বলে গেলে।

লেখার বিষয়বস্ত পেয়েছিলাম এই পোষ্টে থেকে, Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১০:০৫
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের কবিতা

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৫৪



বিজয়ের মাস ডিসেম্বর, লক্ষ প্রাণে লেখা বিজয়ের
সেই সোনালি অক্ষর,
দিকে দিকে শুনি জয়ধ্বনি বাংলাদেশের নামে, এই
স্বাধীনতা কেনা রক্তের দামে;
হৃদয়ে হৃদয়ে বাজে মুক্তির শত গান, ডিসেম্বরে
পেয়েছি আমরা বিজয়ীর সম্মান;
মার্চের সেই অমর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×