somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাঁচতে হলে জানতে হবে - পর্ব ১ঃ বুরুন্ডাঙ্গা (Burundanga)

০৩ রা মে, ২০১৭ সকাল ১১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বুরুনডাঙ্গা (Burundanga)। বৈজ্ঞানিক নাম Scopolamine । পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ড্রাগ। কোন নেশাখোর এটা ব্যাবহার করে না কারন এ ড্রাগে কোন রিক্রিয়েশন নেই। এটা ব্যাবহৃত হয় অপরাধী, ডাকাত, ধর্ষক থেকে শুরু করে গোয়েন্দা সংস্থার ইন্টারোগেশন পর্যন্ত নানা কাজে ।




খাবারের সাথে মিশিয়ে যেমন খাইয়ে দেয়া যায় তেমনি নিশ্বাসের সাথে সামান্য পরিমান প্রবেশ করলেও একজন ব্যাক্তি আক্রান্ত হয়ে যায়। এই ড্রাগ গ্রহনকারীকে দেখলে আর দশ জন সাধারন মানুষের মতই স্বাভাবিক মনে হয় কিন্তু তার নিজের ইচ্ছাশক্তি বলে কিছু থাকে না। যে তাকে যাই করতে বলবে সে তাই করবে। এমনকি ওভারডোজ হয়ে গেলে মানুষ মারাও যেতে পারে।

ফুলসহ গাছ।

যেমন মনে করেন শহিদ সাহেব রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, কেউ একজন এগিয়ে এসে একটি কাগজ দিয়ে তাকে বলল কাগজে লেখা ঠিকানাটা তাকে একটু দেখিয়ে দিতে। লেখা গুলো ছোট ছোট করে লেখা হওয়ায় তিনি বেশ কাছ থেকে পড়তে গিয়ে কাগজে মেশানো বুরুন্ডাঙ্গা নিশ্বাসের সাথে গ্রহন করলেন। এর পরপরই তার মধ্যে বিশেষ কোন পরিবর্তন দেখা না গেলেও তিনি কিন্তু পুরোই সম্মহিত হয়ে গেছেন। এখন ঐ লোক যদি বলে - তোমার বাসায় নিয়ে চলো আর সব মালামাল ট্রাকে তুলে আমারকে দিয়ে দাও, সাথে তোমার ক্রেডিট কার্ড দাও আর পিন নাম্বারটা বলো এবং তোমার চেক বইয়ে সই করে আমাকে দাও, তিনি বিনা বাক্য ব্যায়ে কোন প্রতিক্রিয়া না দেখিয়েই তার সব কথা পালন করবেন। এমনকি অন্য কেউ দেখে বুঝতেও পারবে না যে সে আরেক জনে কথায় এইসব কাজ করছে বা তার হুশ নাই। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো তিন চার দিন পর যখন তার হুশ ফিরবে তখন তার সম্মহিত সময়ের কোন কথাই মনে থাকবে না।
মেয়েদের ক্ষেত্রে সম্মহিত করে সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে, তাকে ধর্ষনও করা হয় যেটা দক্ষিন আমেরিকায় বিশেষ করে কলাম্বিয়ার অনেক মেয়ের ক্ষেত্রেই হয়েছে।


সম্মহিত ব্যাক্তিকে দিয়ে যে কোন অপরাধও করানো যায়। যে কোন অপরাধ মানে যে কোন অপরাধ। চুরি থেকে শুরু করে এমনকি খুন পর্যন্ত।
গোয়েন্দা সংস্থা বিশেষ করে CIA আর KGB ৬০ এর দশক থেকে কারো কাছ থেকে কথা বের করার জন্য এটা ব্যাবহার করছে। ওরা এর নাম দিয়েছে "টুথ সিরাম"।
যেহেতু এটা অপরাধীরা ব্যাবহার করে তাই ড্রাগ হিসাবে এর আলোচনা তেমন হয় না। কিন্তু তাই বলে এটার ব্যাবহার কিন্তু থেমে নেই। কে জানে হয়তো বাংলাদেশেও এর ব্যাবহার হচ্ছে। যা এখনো মিডিয়া বা আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী নজরে আসেনি। তাই সবার সাবধান হওয়া জরুরী।

এই ফলের বীজ থেকেই বুরুন্ডাঙ্গা তৈরী হয়।

এই ড্রাগের উৎস যে গাছ থেকে তা পাওয়া যায় মূলত কলাম্বিয়ায়। তবে এর আশেপাশে দুই একটি দেশেও এ গাছ পাওয়া যায়। গাছের ফুল ও মূলকে নেশাদ্রব্য হিসাবে ব্যাবহার করা গেলেও মূলত বীজ থেকেই মূল দ্রব্যটি পাওয়া যায়। বীজের এক্সট্রেক্ট কে ল্যাবে প্রসেস করে মূল ড্রাগটি তৈরী হয়। দেখতে কোকেন বা হিরোইনের মত এমন কি ঘনত্ব এবং ওজনও একরকম । কিন্তু মাত্র ১ গ্রাম বুরুন্ডাঙ্গা ১২-১৫ জনের মৃত্যুর জন্যে যথেষ্ট।

ফলের বীজ


সাবধানতাঃ
১। সবাইকে এই ধরনের ড্রাগ ও এর ব্যাবহার পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো জরুরী।
২। অপরিচিত কেউ বেশি কাছে ঘেষার চেষ্টা করলে সতর্ক হোন।
৩। পথে কেউ কোন কাগজ দেখিয়ে পড়ে দিতে বললে তাকে পুলিশের কাছ থেকে সহযোগিতা নেয়ার ব্যবস্থা করে দিন। অপরাধী হলে পালানো চেষ্টা করবে, আর আপনার কাজ হলো চিৎকার করে লোকজনকে দিয়ে তাকে ধরিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া এবং এই ধরনের ড্রাগের ব্যাপারটা খুলে বলা।
৪। অপরিচিত কারো কাছ থেকে কিছু খাবেন না।
৫। যেহেতু নিশ্বাসের মাধ্যমে সামান্য পরিমান প্রয়োগ করতে পারলেই একজনকে বশ করা যায় তাই এ ব্যাপারে যতটা সম্ভব সতর্ক থাকা। সবচেয়ে ভালো হয় মাস্ক ব্যাবহার করা। তাতে নিয়মিত ধুলাবালি থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে আবার এ ধরনের বিপদ থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে।

উৎসঃ vice এর YouTube চ্যানেল থেকে সংগৃহীত। লিঙ্কঃ https://www.youtube.com/watch?v=ToQ8PWYnu04
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৭ সকাল ১১:৫৯
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×