somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিয়ানমারে..... খ্রিস্টান ধর্মালম্বী জাতিগত কাচিন শরণার্থীদের পুশব্যাক করছে চীন

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২৬ জুন: মিয়ানমারের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী অঞ্চলের ধর্মীয় সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠিগুলোর জন্য এবারের বর্ষা এসেছে ভয়ানক সহিংসতা ও নিরাশ্রয়ের কাল হয়ে। মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে সীমান্তবর্তী আরাকান প্রদেশে রাষ্ট্রীয় সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা ও বার্মিজ মুসলমানদের নৌকার বহর যখন সাগরে ঠেলে দিচ্ছে ঢাকা, তখন দেশটির পূর্বাঞ্চলের খ্রিস্টান ধর্মালম্বী জাতিগত কাচিন শরণার্থীদের সহিংসতা আক্রান্ত এলাকায় ঠেলে দেবার (পুশব্যাক) অভিযোগ উঠেছে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে।

চীনের বিরুদ্ধে এমন অমানবিক আচরণের অভিযোগ এনে মঙ্গলবার মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কাচিন স্বাধীনতা সেনা ও বার্মিজ সরকারি বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধে উদ্বাস্তু হয়ে চীনের সীমান্ত অঞ্চলে আশ্রয় প্রার্থী সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের আবারো যুদ্ধক্ষেত্রে ঠেলে দিচ্ছে সীমান্তরক্ষীরা।

অঞ্চলটিতে ১৭ বছর ধরে চালু যুদ্ধবিরতি গত বছর শেষ হবার পরে চলতি জুন মাসের শুরুতে বার্মিজ বাহিনী ও কাচিন স্বাধীনতা সেনা’র (কেআইএ) মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি চরমে পৌঁছেছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার হিসাবে ষাট হাজারের বেশি লোক উদ্বাস্তু হয়েছে।

বৌদ্ধ ধর্মপ্রধান দেশটিতে কাচিনরা প্রধানত ব্যাপ্টিস্ট ও ক্যাথলিক খ্রিস্টান এবং সরকারি হিসাবে মোট জনসংখ্যার শতকরা সাত ভাগ। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো আদমশুমারি বিগত চার দশকে মিয়ানমারে হয়নি।

মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, যুদ্ধ এড়াতে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আশ্রয়প্রার্থী এই কাচিন উদ্বাস্তুদের ফিরিয়ে দিচ্ছে চীনা কর্তৃপক্ষ। প্রবল বর্ষা মৌসুমে জীবনধারনের ন্যূনতম উপকরণ ছাড়া অমানবিক জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছে শরণার্থীরা।

সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো প্রতিবেদনে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, উদ্বাস্তুদের মধ্যে প্রায় দশহাজার লোক চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় আশ্রয়লাভের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, এই উদ্বাস্তুদের পানি, পয়নিষ্কাশন, আশ্রয় বা স্বাস্থ্যসেবার কোনো সুযোগ নেই।

সংস্থাটি জানিয়েছে, আশ্রয়লাভের চেষ্টা করায় এদের অনেককেই গ্রেফতার করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ এবং মিয়ানমারে যুদ্ধ আক্রান্ত এলাকায় ঠেলে দিয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাটির চীন শাখার পরিচালক সোফি রিচার্ডসন বলেন, ‘‘চীনা সরকার সাধারণত ইউনান প্রদেশে কাচিন শরণার্থীদের উপস্থিতি সহ্য করে আসছিল। কিন্তু এখনকার প্রয়োজন হল শরণার্থীদের ন্যূনতম প্রয়োজন মেটানো এবং তাদের ফেরত না পাঠানোর ক্ষেত্রে দেশটির আন্তর্জাতিক আইনগত বাধ্যবাধ্যকতা পূর্ণ করা।’’

সোফি বলেন, ‘‘কোনো ধরণের আশ্রয় ও খাদ্য ছাড়া তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর পেছনে চীনের কাছে কোণো ন্যায্য যুক্তি নেই।’’

এ বিষয়ে সংস্থাটির প্রশ্নের জবাব দেয়নি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

তবে ইউনান প্রদেশের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, উদ্বাস্তুদের মানবিক সাহায্য দিয়ে এবং কাচিন বিদ্রোহী ও বার্মিজ সরকারের মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালিয়ে চীন ভূমিকা রাখছে।

তবে সোফি রিচার্ডসন জোর দিয়ে বললেন, ‘‘কাচিন অঞ্চল যতদিন না উদ্বাস্তুদের ফেরার জন্য নিরাপদ হচ্ছে, ততদিন শরণার্থীদের নিরাপত্তা ও ভাল থাকার ব্যবস্থা করা চীন সরকারের দায়িত্ব।’’

প্রসঙ্গত, মিয়ানমার সরকার কর্তৃক ওই অঞ্চলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রবেশাধিকার কার্যত নিষিদ্ধ হলেও গত ১৫ জুন আল-জাজিরা’র সংবাদকর্মীরা কাচিন অঞ্চলের দুর্ভোগের ভিডিও দৃশ্য ধারণে সক্ষম হন। টিভি নেটওয়ার্কটির প্রচারিত ভিডিও সংবাদে দেখা যায়, সরকারি বার্মিজ বাহিনীর আক্রমণের মুখে কাচিন স্বাধীনতা সেনা’রা নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে প্রাণান্তকর যুদ্ধে লিপ্ত।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ১০:৪৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×