সালটা ১৯৯৮ ।
আমার দাদা মৃত্যু শয্যায় । শেষ চেষ্টা চিকিৎসকদের । একটা ইঞ্জেকশন দিতে বলা হয় । ইনজেকশনটি আনা হয় দূর শহর থেকে । দেওয়ার আগে দাদা জানতে পারেন এটা পাকিস্তানে তৈরি ।
দাদা ছুড়ে ফেলে দেন অসুস্থ শরীরেও । পরে একই ওষুধের ব্যবস্থা করা হয় চীনের তৈরি । কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে যায় । বিশেষ কাজে লাগে না সেই চিকিৎসা ।
কিন্তু সেদিনের আমার অশিক্ষিত গেঁয়ো দাদা যে চিকিৎসা আমাদের পরিবারে দিয়ে গেছেন তার সুস্থতা আজও বিরাজমান ।
২০০০ সালের পর কোন এক ঈদে সকাল বেলা সেমাই রান্না করতে গিয়ে নজরে আসে কুলসন সেমাই । আব্বু অর্ধরাঁধা সেই সেমাই কুকুর দিয়ে খাইয়ে দেন । সেমাই না খেয়েই আমরা দু'ভাই ঈদগাহে যাই ।
মহাপণ্য জামাত-শিবিরঃ
আশির দশক । আব্বু 'আমারই আম্মু'কে বিয়ে করতে রওনা হবেন । সাথে আমার বড় চাচা । দাদা চাচাকে ডেকে বললেন, খেয়াল রাখিস যেন কোন 'জামাতের মৌলবি' বিয়ে না পড়ায় !!
এবার নিজের ঢোল একটু পেটাইঃ
গতশীতে একটা লিপজেল কিনি ফার্মগেট থেকে । সপ্তাহখানেক ব্যবহার করছি । এরপর ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর হঠাৎ লক্ষ্য করি পাকিস্তানের তৈরি । রাস্তায় ফেলে আচ্ছা মত পাড়াই । কিন্তু ভুলটা যেহেতু আমারই, তাই আত্মশাস্তিস্বরূপ গত বছর মুখে কোন প্রসাধনী ব্যবহার করি নাই । ঠোঁট আমার যত্ন পায় নাই ।
দাদা চলে গেছেন । কিন্তু যেন যুগে যুগে তারুণ্যের জাগরণে তিনি ফিরে ফিরে আসেন । কোথা থেকে যেন তার হাস্যোজ্জল বদনখানি বারবার প্রেরণা যোগায় ।
স্যালুট দাদা, তোমাদের মতন আত্মমর্যাদাশীলদের চেতনার প্রহরীরা জেগে আজো আছে...
তুমি ঘুমাও নির্বিঘ্নে...ঘুমাও নিশ্চিন্তে...
তোমার সে প্রদীপের শিখা জ্বলবে,
জয়যাত্রার পথে অনন্তের শেষ প্রান্তে...
ফেসবুক লিঙ্কঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩৭