somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদ্যুৎ ও বাংলাদেশ- ৩

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পার্বত্য চট্টগ্রাম অশান্ত, পুঁজি হারানো মানুষের আর্তনাদ,পৌর নির্বাচনের প্রাক পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সাময়িক ব্যবস্থাপন টুল গুলো এতো বেশি ব্যস্ত হয়ে যাবে যে সরকারের দীর্ঘ মেয়াদি কাজ গুলোতে গুরুত্ব কিছুটা কমতির দিকে থাকবে এবং কাক্ষিত লক্ষ্য মাত্রার যাত্রা পথ দীর্ঘায়িত হয়ে অসীমে মিলাবে । সাময়িক ভাবে আসতে থাকা বিষয়গুলো স্থায়ী হবে , হতে বাধ্য কারণ রাজনীতির মাঠে ওয়াক ওভার মানে বিশাল ক্ষতি। সরকারের বাইরে থাকা রাজনৈতিক শক্তিগুলো কেবল মাত্র নিজেদের লাভের করণে জনতার স্বার্থ না ভেবেই বিভ্রান্তির জালে জড়িয়ে পরিস্থিতি অন্য দিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করবে আর তার অনেকটা জুড়ে থাকবে ভারতের সাথে বাংলাদেশের প্রাপ্তি সংক্রান্ত অপ্রকৃ্ত বিশ্লেষন।সরকারের দু আড়াই বছর শেষে রাজপথের মিছিল আর প্রতিপক্ষ সামলানোই হয়ে পড়ে সরকারের একমাত্র কাজ । এমন সব কারণ সমূহে বিদ্যুতের জন্য সরকারের দৈনন্দিন কাজ কর্ম, চিন্তা কল্পনা হয়ে পড়বে গৌন আর শ্লথ।টেকনিক্যাল এ্যাডভান্সমেন্টের মূল পরিকল্পনাকারীরা বাস্তবায়নের কী-পারসনরা চলে যাবেন সরকারের দ্বিতীয় সারিতে আর রাজনৈতিক কৌশলে রণ বিজয়ীরা চলে আসবেন সাম্নের কাতারে। কেবল সামাজিক কর্মকাণ্ড দিয়ে সরকার সরাসরি পৌঁছুতে চাইবে জনতার দরজায়, ব্যক্তি পর্যায়ে সন্তুষ্টির ভোট কেন্দ্রিক চিন্তায় আটকে যাবে দেশের বৃহৎ ও অতি প্রয়োজনীয় উন্নয়নের জায়গা গুলো, পাহাড়সম প্রতিশ্রুতির মেনুফেস্টো হয়ে যাবে আগামীবারের জন্য খসড়া মাত্র । এর মাঝে বিদ্যুতের উন্নয়ন অগ্রগতি প্রকৃ্ত অবস্থান হারাবে।

বাংলাদেশের মানুষ যতো দ্রুত টেকনোলজী কব্জা করতে শিখেছে আর প্রচার মাধ্যমের কল্যানে তথ্য সংগ্রহে আগ্রহী হয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছে তাতে বিদ্যুতের উৎপাদন বৃ্দ্ধি ছাড়া দেশকে দা্ঁড় করানো তথা ম্যন পাওয়ারের যথাযোগ্য ব্যবহার সম্ভব নয়।এমন বিষয়ে সরকারকে যদি তার অর্ধ মেয়াদ কাজ করবার পরিবেশ দেয়া হয় তবে তা অত্যন্ত ক্ষতিকর । ১৬ কোটি জনসংখ্যার দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমান এতো কম যে তা সামাজিক শৃ্ংখলার মতো ব্যাপারেও প্রবেশ করেছে সরাসরি। বিদ্যুতের উৎপাদন, জন গনের কর্মসংস্থান কোন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয় তাই এগুলোর জন্য দীর্ঘমেয়াদী আর ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত খুব কঠিন কিছু নয়।

সামনে সেচ মৌসুম, কৃ্ষকের কাছে বিদ্যুৎ পৌছাতে হলে লোড শেডিং এর মাধ্যমে যোগাড় করতে হবে ১২০০ থেকে ১৫০০ মেগাওয়ার্ট যা আনতে হবে নগরবাসির ব্যবহার থেকে । উভয় জায়গাতে চক্ষুশূল হতে হবে সরকারকে। পরোক্ষ ক্ষতির সাথে যোগ হবে অনিয়ন্ত্রিত গ্রিড, পাওয়ার প্লান্ট ট্রিপ, লো ভোল্টেজে গরীব কৃ্ষকের পাম্প মোটরের করুণ সমাধি।

আমাদের অনেকেরই ধারনা আছে বিদ্যুৎ বিভাগের অদক্ষতার কারণে লোডশেড ও সিস্টেম লস বাড়ছে, আসলে কিন্তু তা না, অনেক ডিপারটমেন্টের চেয়ে এটা অনেক সচল এবং প্রোডাকটিভ। আদলতে কতো মামলা বিচারের অপেক্ষায়,সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে কতো মানুষ ছুটছে ক্লিনিকে, অনাদায়ী ঋনে ডুবেছে ব্যাংক গুলো, মামলা করতে পারছে না কতো লোক, কত লোক ফেঁসে যাচ্ছে মিথ্যা মামলায় পুলিশের স্বেচ্ছাচারিতায় ? এগুলোর তুলনায় বিদ্যুৎ বিভাগ ভালো কাজ করছে যেখানে লাইভ ডিমান্ড আর প্রোডাকশনের ফারাক বিস্তর । এ্যানার্জী কনজারভেশন টেকনিক আর পাবলিক রিলেশনে কিছুতা দূর্বলতা আছে কিন্তু অন্যান্য জায়গায় তা বিশ্ব মানের।যে সংস্থা গুলোর উল্লেখ করেছি তাদের সাফল্য নির্ভর কর্ম গতি, পদ্ধতি বিন্যাস তথা ব্যবস্থাপনার উপর কিন্তু বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাফল্য উৎপাদন, সংরক্ষন, অর্থ আদায় এবং অন্যদের মতো গতি ও বিন্যাসের উপর । শক্তির রূপান্তর, বানিজ্যিকি করণ, ব্যবস্থাপন এক সাথে করে এ সংস্থা এক রকম সফল বলা যায়।

বাংলাদেশে বিদ্যুতের উৎপাদন এবং বিতরন পরিকল্পনা ছাড়িয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের জালে বন্দি । পরিকল্পনা অনিযায়ী পুরো দেশকে কিছু লোড সেন্টারে ভাগ করা হয়েছে যেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করলে চমৎকার গ্রীড স্ট্যাবিলিটি পাওয়া যাবে ভোল্টেজ লেভেল ধরে রাখতে এটা অপরিহার্য । এখন ঐ স্থান যদি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের এলাকা হয় তবে তাতে সরকারের আগ্রহ কমে যায় এবং সমগ্র পরিকল্পনা স্থানান্তরের জন্য উৎপাদন ব্যয় ও অহেতুক গ্রীড বিস্তারের ব্যয় হয় আকাশ চুম্বি। আবার রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ঠিক করেন কতো খুঁটি গেড়ে কতো বিস্তার ঘটাবেন ইলেকশন প্রতিশ্রুতির প্রতিদান হিসাবে। এ ক্ষেত্রে বিভাগীয় রোড ম্যাপ, পরিকল্পনা সবই পরিত্যাগ করা হয়। এর ফলে বিতরণ নেটওয়ার্ক হয় আনব্যালান্সড আর ত্রুটিপূর্ণ এবং উৎপাদনের সঠিক বন্টন হয় অসম্ভব।কম বেশি চাহিদার সময়ও গ্রীড ফ্রিকোয়েন্সি উলটো রকমের হয়ে যায় অনেক সময় ।এর কারণই হলো লোড পয়েন্ট, গ্রীড, বিতরণ নেটওয়ার্ক প্রপার অবস্থায় নাই আবার ক্ষমতাবানরা চান তাদের এলাকায় সব সময় বিদ্যুৎ থাকুক যা বিতরণ নেটওয়ার্ক কে বন্টন উপযোগী রাখতে পারে না।

যা হোক জ্বালানী সংগ্রহ, টেকনোলজীর জন্য দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ,টেকসই জাতীয় উন্নয়ন নীতিমালা প্রনয়ন, অর্থের উৎস সন্ধান ইত্যাদি ব্যাপারে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও হস্তক্ষেপ কাম্য কিন্তু বিদ্যুতের বিস্তার , উৎপাদন, বানিজ্যে অংশ গ্রহণ, কারিগরী মতামত প্রদান বা সিদ্ধান্তে আসলে রাজনীতির ভূমিকা থাকা ঠিক না অথচ বাংলাদেশে হয়ছে তাই ।

আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই যে তারা ক্রস বর্ডার এ্যনার্জী ট্রেডের কথা ভাবছে। আস্থা স্থাপন হলে ভারত ও নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানী এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ কারণ এতে গ্রীড সম্প্রসারন এবং মূল্য পরিশোধের ব্যাপার ছাড়া অন্যান্য ধাপ সমূহ নাই।প্রফেসর আনু মুহাম্মদ বিরোধিতা করে বলেছেন দেশে উৎপাদন , আমদানী নয়। আমাদের মনে রাখতে হবে গরীব দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে জ্বালানী সংগ্রহ অতো সহজ কর্ম নয়। আর উৎপাদনের দরজা বন্ধ করে তো আমদানী করা হচ্ছে না ।আমদানী করা বিদ্যুৎ যদি উৎাদন খাতে ব্যবহার করে ক্রয় মূল্যের কাছাকাছি মূল্যমানের ফিড ব্যক পাওয়া যায় এবং দেশের অভ্যন্তরে জনগনের কাজের ক্ষেত্র বেড়ে যায় তবে তাকে স্বাগত জানাতেই হবে । দেশে উৎাদন করবার জন্য অভ্যন্তরিন জ্বালানী সোর্স খুঁজে অদম্য ইচ্ছা আর চেষ্টা নিয়ে এগুতে হবে সাথে সাথে বিদ্যুতের মতো শক্তির আমদানী আমাদের উন্নয়নকে বেগবান করে তুলনা মূলক শক্ত অবকাঠামো দেবে প্রতিবেশিদের থেকে একটু দ্রুতই----------------
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×