এক রাজ্যে যেমন দুই রাজার শাসন চলতে পারেনা ঠিক তেমনি ভাবেই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কোনক্রমেই দুই ধরণের শাসনব্যবস্থা থাকতে পারেনা, থাকাটা সমীচিনও নয়। দেশের ৬১টি জেলায় যে ধরণের শাসন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে বাকী ৩টি পার্বত্য জেলায় সেই একই শাসন ও বিচার ব্যবস্থা বহাল থাকাটাই সমীচিন হবে।
বিশেষ কারণবশতঃ সামান্য এদিক-সেদিক সেখানকার জন্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে, কিন্তু একেবারেই সেটা যদি বিমাতাসুলভ আচরণে পরিণত হয় সেটা কি কখনো গ্রহণীয় হতে পারে?
কিন্তু বাস্তবে তো সেটাই হচ্ছে। তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসরত বাঙ্গালীরাও যেটুকু অধিকার ভোগ করতে সক্ষম সেখানকার আদিবাসী জনগোষ্ঠী কি ততখানি পারছে? এক কথায় বলে দেয়া যায় না, পারছে না। তাহলে কেন এই বৈষম্যটুকু? রাষ্ট্রের সরকারের কাছে কি এর কোন সদুত্তর আদৌতেই আছে?
সমতলে ধর্ষণ হয়, ধর্ষণকারী ধরা পড়ে অতি অল্প সময়ের ব্যবধানেই। যেমন গতকাল বনানীতে পুনরায় একই কায়দায় একটা ধর্ষণের ঘটনা ঘটলো, আজকেই নারায়ণগঞ্জ হতে ধর্ষণকারীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। তাহলে পার্বত্য অঞ্চলে হয়না কেন? সেখানে শুধু ধর্ষণ নয়, ধর্ষণ শেষে ভিক্টিমকে হত্যাই করা হয় বেশীরভাগ ক্ষেত্রে, অথছ অপরাধী দিনের পর দিন কেটে গেলেও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়! এটা আশ্চর্যজনক বিষয় নয়কি?
খেয়াল করে দেখেন, সমতলেও আদিবাসী মেয়ে ধর্ষিত হয়, কিন্তু অপরাধী দুইদিন আগে-পরে হোক ঠিকই আইনের আওতায় আসে। যেমন গারো মেয়ের কথাটাই ভাবেন। তার ধর্ষকেরা ঠিকই গ্রেফতার হয়েছিল, আইনের আওতায় এসেছিল। তাহলে পাহাড়ে সমস্যাটা কি?
ঘুরে-ফিরে কিছু কথা কিন্তু চলেই আসে। সমতলে অনেক ধর্ষন আর অনেক হত্যাকান্ডের আসামী গ্রেফতার হয়ে আইনের আওতায় আসলেও আজ পর্যন্ত কিন্তু আমরা জানতেই পারিনি তনু’র অপরাধী সত্যিকার অর্থে কারা ছিল! অনেক সময় কোন ঘটনায় কাউকে না কাউকে ফাঁসিয়েও দেয়া হয়। অথছ তনু’র বেলায় সেটাও কিন্তু ঘটেনি। অপরাধী কিংবা অপরাধী চক্র রয়ে গেছে সম্পূর্ণ ধরা-ছোঁয়ার বাইরে! পার্বত্যের ধর্ষণ ঘটনাগুলো আর কুমিল্লার সেনানিবাসের অভ্যন্তরে সংঘটিত তনু হত্যাকান্ডের মাঝে কি তবে সত্যিই কোন যোগসূত্র থেকে যাচ্ছে?
জনমত একটা বিশাল ফ্যাক্টর হলেও তনু’র ক্ষেত্রে সেটি কোন ধরণের প্রভাবই ফেলতে পারেনি, যেটুকু সক্ষম হয়েছিল বনানী ধর্ষণের ঘটনায়। তখনও এখনও। তাহলে কি আমাদের শেষ পর্যন্ত এটাই বিশ্বাস করে যেতে যে, তনু’র ধর্ষণ এবং হত্যাকান্ডের পাশাপাশি পাহাড়ে সংঘঠিত ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডগুলোতে বিশেষ কারো বা কোন গোষ্ঠীর প্রচ্ছন্ন একটা ভূমিকা ছিল যার কারণে আজ পর্যন্ত এই ধর্ষণ আর হত্যাকান্ডগুলোর কোনই কূল কিনারা করা সম্ভব হয়ে উঠেনি!

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




