কেমন আছে অনূর্ধ্ব-১৪ জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় চাথুইমা মারমা?
বছর দেড় কি দুয়েক আগে জাতীয় দলের অনুশীলনের তার বাম পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়। এরপর খেলা থেকেই ছিটকে গেছে রাঙামাটির এই কিশোরী। বাদ পড়েছিল জাতীয় দল থেকেও। অথচ তখন পর্যন্ত ফুটবল ফেডারেশন দাঁড়ায়নি দরিদ্র কৃষক বাবার প্রতিভাবান এই কিশোরীর পাশে। চাথুইমা তারপর থেকে আর এখন আর মাঠে দৌড়ায় না, লাথি মারে না ফুটবলে। বলতে গেলে খেলোয়াড় থেকে দর্শক বনে গিয়েছিল চাথুইমা মারমা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন বিনা কারণে লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় করলেও চাথুইমা মারমার সহায়তায় কোন অবদানই রাখেনি তারা। শুধু কি জাতিতে মারমা হওয়ার কারণেই এই পরিণতি হয়েছিল চাথুইমার?
স্টাইকার পজিশনে খেলা চাথুইমা মারমার দল রাঙামাটির ঘাগড়ার মগাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১১ সালে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপর ২০১২ ও ২০১৩ সালে তার দল রানার্সআপ হয়। ২০১৩ সালে দল চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও চাথুইমা জিতে নেয় সোনার বুট। এরপর সে ডাক পায় অনূর্ধ্ব-১৪ জাতীয় দলে। ২০১৪ সালে শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ মেয়েদের ফুটবলে বাংলাদেশ দলের সদস্য হয়ে খেলে চাথুইমা মারমা। এরপর ২০১৫ সালে নেপালে একটি টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও ঢাকায় দলের ক্যাম্পে অনুশীলনের সময় সে বাঁ পায়ে চোট পায়।
অনূর্ধ্ব-১৬ নারী জাতীয় ফুটবল দলের আনুচিং মগিনী, আনাই মগিনী ও মনিকা চাকমাদের অনুপ্রেরণা ছিল চাথুইমা মারমা। তারা জানায়, চাথুইমা মারমা তাদের সঙ্গে খেলতে না পারায় তার শূন্যতা সবসময় অনুভব করছে তারা। চাথুইমা ছিল তাদের অনুপ্রেরণা। সে অসাধারণ ফুটবল খেলত। কিন্তু চোট পাওয়ার পর থেকে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। তারা নিজেরাও চাথুইমার চিকিৎসার জন্য সরকারের সহায়তা কামনা করে।
নানা কারণে আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকান্ডের বিরোধিতা করি ঠিক। কিন্তু এই সেনাবাহিনীই শেষ পর্যন্ত এগিয়ে এসেছিলেন চাথুইমা মারমার চিকিৎসা সহযোগিতায়। বিগত ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়ার চাথুইমা মারমার বিকল হতে যাওয়া পায়ের চিকিৎসা করিয়ে তাকে সুস্থ করে তোলার সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছিলো রাঙামাটি সেনা রিজিয়ন কর্তৃপক্ষ। এরপর দীর্ঘ ৭ মাস চিকিৎসা শেষে চাথুইমা মারমা সুস্থ হয়ে গত মে মাসে রিজিয়ন কমান্ডারের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করতে আসে। সাক্ষাতের সময় তার আবেদনের প্রেক্ষিতে তার চলাফেরা আরো স্বাভাবিক করতে রাঙামাটি সেনা রিজিয়নের পক্ষ থেকে একটি উন্নতমানের বাই সাইকেল চাথুইমা মারমাকে প্রদান করা হয়।
ধীরে ধীরে আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসুক চাথুইমা মারমা সেই প্রত্যাশা রইলো আমাদের সকলের। একই সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকেও আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই চাথুইমা মারমার চিকিৎসার সকল দায়িত্ব গ্রহণ করে তাকে আবার খেলার জগতে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবার জন্য।

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:৪৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




