নেশাখোর পুত্রকে দাঁড়িয়ে থেকে খুন করালেন মা
ধানমন্ডি এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রিয়াজ আহমেদ চৌধুরী ওরফে সুমন (২৮) হত্যাকাণ্ডে তার মা মমতাজ বেগম ও বোন ফারজানা হোসেন এবং তিন খুনি খলিলুর রহমান ও তার ভাই জাকির হোসেন, ফারজানার প্রেমিক প্রসুন কান্তি পাল ওরফে রনিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মায়ের পরিকল্পনায় এবং তার সামনে পুত্র সুমনকে গলা কেটে ও হাত পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। মাসহ গ্রেফতারকৃত ৫ আসামি হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ডিবির কর্মকর্তাদের নিকট স্বীকারোক্তি দিয়েছে। গতকাল রবিবার বিকালে সিএমএম আদালতে গ্রেফতারকৃত জাকির ও রনি সুমন হত্যাকান্ডে নিজেদের জড়িয়ে মমতাজ বেগমের পরিকল্পনায় হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক একই জবানবন্দি দিয়েছে। এরপর জাকির ও রনিকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত মমতাজ বেগম ও তার কন্যা ফারজানা এবং খলিলকে গতকাল রবিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি পুলিশ তিনদিনের রিমান্ডে আনে। গ্রেফতারকৃত ৫ আসামি সিরাজগঞ্জের এক পীরের মুরিদ। গ্রেফতার হওয়ার আগের দিন রনি পীরের দরবারে গিয়ে সুমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জানান। উত্তরে পীর রনিকে জানান, তুমি মহা অপরাধ করেছো। তুমি আলøাহর নিকট ÿমা চাও এবং তিনিই তোমাকে ÿমা করে দিতে পারেন বলে পীর রনিকে পরামর্শ দেন। জিজ্ঞাসাবাদে রনি ডিবির কর্মকর্তাদের এই তথ্য জানায়।
মা একমাত্র পুত্র সন্তানকে খুন করতে দ্বিধা করেননি। এর নেপথ্যে রয়েছে নেশাগ্র¯Í পুত্র সুমন মাকে শারীরিক নির্যাতনসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। বাংলাদেশে মা তার সন্তানকে খুন করার মত ঘটনা সাধারণত ঘটে না।
গত ১৪ মে দিবাগত রাত ৩টায় শ্যামলীস্থ ২ নম্বর রোডের ১২/চ/৪ নম্বর ছয়তলা ভবনের পঞ্চম তলায় নিজ কÿে সুমনকে জবাই করে ও হাত পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয়। পরদিন সুমনের মা মমতাজ বেগম বাদি হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় পুত্র হত্যার মামলা দায়ের করেন। এজাহারে খুনিরা অজ্ঞাত বলে উলেøখ করেন তিনি। থানা পুলিশ সাতদিনেও এই হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে ব্যর্থ হয়। পরে মহানগর পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে সুমন হত্যা মামলার তদন্তভার ডিবি পুলিশের নিকট ন্য¯Í করা হয়।
গত শুক্রবার ডিসি (ডিবি) মোঃ মাইনুল হাসান ও এডিসি (ডিবি) আসাদুজ্জামানের সার্বিক তত্ত¡াবধানে সুমন হত্যা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা নাসির উলøাহ তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। ঐদিনই মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড থেকে জড়িত আসামি প্রসুন কান্তি পাল ওরফে রনিকে গ্রেফতার করা হয়। সে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা ডিবির কর্মকর্তার নিকট স্বীকার করে এবং জড়িত অন্যান্যের নাম ঠিকানাও জানিয়ে দেয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপর দুই অজ্ঞাত আসামি খলিলুর রহমান ও তার ভাই জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। এই তিন আসামি সুমন হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা ডিবির কর্মকর্তার নিকট প্রকাশ করে দেয়। সুমন হত্যাকাণ্ডে মূল পরিকল্পনাকারি তার মা মমতাজ বেগম ও সহযোগিতায় ছিল বোন ফারজানা হোসেন বলে তিন আসামি ডিবির কর্মকর্তাদের জানায়।
গ্রেফতারের আগের দিন রনি পীরের নিকট গিয়েছিল। রনির এক শিÿক সুমনদের বাসায় ভাড়া থাকতো। সেখানে সে নিয়মিত যাতায়াত করতো।
তখন থেকে সুমনের বোন ফারজানার সঙ্গে তার পরকীয়া (অবৈধ প্রেম) হয়। তাদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। রনি হিন্দু পরিবারের হলেও ফারজানার প্রেমের টানে সেও পীরের মুরিদ হয় বলে ডিবি পুলিশকে জানায়। রনি বিবিএ পাস করেছে। গ্রেফতারকৃত খলিল ও জাকির সুমনদের বাসভবনের ছয়তলার ভাড়াটে। তারা মাসিক তিন হাজার টাকা ভাড়ায় ঐ বাসায় থাকে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা ও অন্যান্য আলামত ডিবির কর্মকর্তারা উদ্ধার করেন।
গত শনিবার সুমনের মা ও বোনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সুমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। ঘটনার পর তিন খুনির হাতে সুমনের ব্যবহৃত লেপটপ ও মোবাইল ফোন তুলে দেন মা মমতাজ বেগম। এইগুলোও ডিবির কর্মকর্তারা উদ্ধার করেন। নিহত সুমনের পিতা আমির হোসেন টিএন্ডটি বোর্ডের পরিচালক ছিলেন। ১৯৯৯ সালে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা এবং শ্যামলীর উক্ত বাড়িসহ কয়েক কোটি টাকার সম্পদ রেখে যান।
সুমন হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে তার মা মমতাজ বেগম ডিবির কর্মকর্তাদের জানান, তার পুত্র গত ৪/৫ বছর ধরে মাদকাসক্ত। প্রায় প্রতিদিন নেশার উপকরণ ক্রয় করার জন্য সে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। জোরপূর্বক টাকা আদায় করে নেয়। টাকা দিতে অস্বীকার করলে সুমন তাকে শারীরিক নির্যাতন করতো। মেয়ে ফারজানা হোসেনকে মারধর করতো। সুমনের নির্যাতনের মাত্রা দিনদিন বাড়তে থাকে। অপরদিকে ফারজানা এক ড্রাইভারের পুত্র আকতারুজ্জামানকে বিয়ে করে। তার স্বামী প্রবাসে থাকে। এই সুযোগে ফারজানা রনিসহ একাধিক যুবকের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। সুমন এই বিষয় নিয়ে ফারজানার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। সুমন শ্যামলীর ছয়তলা বাসভবনটি তার নামে লিখে দেয়ার জন্য মা মমতাজ বেগমকে চাপ দেয়। নেশার উপকরণ ও বাড়ি লিখে দেয়া নিয়েই সুমনের বাড়াবাড়ি ব্যাপক আকার ধারণ করে।
তাকে পুলিশে দিলেও সুমন ছাড়া পাওয়ার পর মা-মেয়েকে খুন করে ফেলবেÐ এই ভয় গ্রাস করে তাদের। সর্বশেষ হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস পূর্বে সুমন তার মাকে কুরআন শরীফ পড়া অবস্থায় লাথি মেরে ফেলে দেয়। এইসব কারণে মা তার একমাত্র কলিজার ধন পুত্র সুমনকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। হত্যার এই পরিকল্পনা মেয়ের প্রেমিক রনি ও ছয়তলার ভাড়াটে খলিল ও জাকিরকে জানান হয়। তাদেরকে হত্যা করার দায়িত্ব দেন কিভাবে সুমনকে হত্যা করা হবে। সেই বিষয়টিও মমতাজ বেগম বলে দেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার রাতে রনি, জাকির ও খলিলদের বাসায় অবস্থান নেয়। রাত ২টার পর মমতাজ বেগম তিন খুনিকে বাসায় নেন। ঐ সময় পুত্র সুমনের কÿের দরজা বন্ধ ছিল। মমতাজ বেগম দরজা নাড়া দিলে পুত্র সুমন ভিতর থেকে জানতে চায় মা তোমার কি হয়েছে। উত্তরে মমতাজ বেগম বলেন, বাবা আমার বুক ব্যথা করছে। তুমি দরজা খুলো। মায়ের কথা শুনেই সুমন দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তিন খুনি কÿে প্রবেশ করে। সুমনকে তারা ঝাপটে ধরে মেঝেতে ফেলে দেয়। খলিল দুই হাত-মাথা চেপে ধরে। দুই পা রনি ধরে রাখে। মা মমতাজ বেগম পুত্র সুমনের মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেন। এরপর জাকির সুমনের গলায় ছোরা চালায়। জবাই করার পর দেহের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর মমতাজ বেগম পুত্র সুমনের বুকে মাথা রেখে দেখেন যে, পুত্র এখনও জীবিত। তিন খুনিকে মমতাজ বলেন, সুমনতো এখনও মরেনি। পরে তিন খুনি সুমনের হাত-পায়ের রগ কেটে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। তিন খুনির হাতে মমতাজ বেগম সুমনের লেপটপ ও মোবাইল ফোনটি তুলে দেন। মমতাজ বেগম ডিবির কর্মকর্তার নিকট সুমনের হত্যা করার লোমহর্ষক কাহিনী জানান। ঐ সময় অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।
দৈনিক ইত্তেফাক
লিংক - Click This Link
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।