জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাম্প্রতিক নির্বাচন নিয়ে বলতে গেলে, একজন ব্যতিক্রমী নেতার নামই বারবার উঠে আসে – তিনি হলেন জনাব সি এম কয়েস সামি। তিনি একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেননি। এটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা, কারণ সাধারণত, ক্ষমতার আসনে থাকাকালীন নেতারা একাধিকবার নির্বাচিত হতে আগ্রহী হন। কিন্তু সি এম কয়েস সামি সেই পরিচিত নিয়মের বাইরে গিয়ে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
আমার অভিজ্ঞতা থেকে জানি, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বহু গুণী মুরুব্বী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন প্যানেল থেকে তাঁর সমর্থন পেতে মরিয়া ছিলেন। মাসখানেক আগেই আমার সঙ্গে তাঁর কথা হয়। আমি তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলাম নির্বাচন করার জন্য, কেননা আমি নিশ্চিত ছিলাম তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন। কিন্তু তিনি তাঁর নিরপেক্ষ অবস্থান ও প্রজ্ঞা থেকে কিছু শক্ত যুক্তি তুলে ধরেন, যা আমাকে সহমত হতে বাধ্য করে। এই ক'দিন আগেও দীর্ঘ আলোচনা হয় আমাদের। তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন, এবং সেই সাহসিকতার জন্য তাঁকে সম্মান না জানিয়ে পারি না। এধরনের সিদ্ধান্ত নিতে সত্যিই অসাধারণ মনোবল ও দায়বদ্ধতা লাগে, যা সি এম কয়েস সামির মতো নেতার পক্ষেই সম্ভব।
জনাব সি এম কয়েস সামি শুধু একজন জনপ্রিয় সভাপতি নন; তাঁর ক্যারিয়ারও অনন্য। তিনি এমন একজন ব্যক্তি, যিনি বেসরকারি ব্যাংক থেকে সরকারি এবং সরকারি থেকে আবার বেসরকারি ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন এমডি হিসেবে তাঁর অবদান বিশেষভাবে স্মরণীয়।
তিনি আমাকে সবসময় ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন। আমি যখন দেশের বাইরে এলাম, তখন তাঁর পাঠানো একটি বার্তা আজও হৃদয়ে গেঁথে আছে – “We all will miss you. Bhai (CMTS) থাকলে আরো বেশী miss করতেন। বুকটা খালি খালি লাগছে, ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।” এই বার্তাই তাঁর আন্তরিক ভালোবাসার প্রকাশ।
আমার সামি পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক শুরু হয়েছিল সিএম তোফায়েল সামি স্যারের মাধ্যমে, যিনি ঢাকায় আমার অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি সিলেটপিডিয়া ও Doctors N Medicine নিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগে আমাকে নির্দ্বিধায় সহায়তা করেছেন। এই পরিবারের সঙ্গে আমার এত গভীর সম্পর্ক দেখে এক প্রবাসী সাংবাদিক একবার মজা করে বলেছিলেন, “তোমার নামের শেষে শাহাবুদ্দিন শুভ সামি যোগ করো!”
সি এম কয়েস সামি, ক্ষমতার লোভে না পড়ে, অসাধারণ দৃঢ়তা ও দায়িত্বশীলতার যে পরিচয় দিয়েছেন, তা সত্যিই বিরল। তাঁর মতো মানুষের আদর্শ নেতৃত্ব আমাদের সবসময় অনুপ্রেরণা দিয়ে যাবে।
** আল্লাহ তায়ালা সি এম তোফায়েল সামি স্যারকে জান্নাতবাসী করুন। আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০০