somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১ দিনের ট্যুরে ঘুরে আসুন নারায়নগঞ্জ ঃ (হাজীগঞ্জ দূর্গ পর্ব ) (শেষ পর্ব )।

০৮ ই নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১ দিনের ট্যুরে ঘুরে আসুন নারায়নগঞ্জের- আজ বলবো শেষ পর্ব। গত ২ পর্বে বলেছিলাম সোনাকান্দা দূর্গ এবং কদম রসুল দরগাহ্‌ এর কথা। আমাদের এই দুটো জায়গা ঘুরে ফিরে দেখে ও ছবি তোলা শেষ করতে করতে বেলা প্রায় ২টা বাজল। কদম রসুল দরগাহ্‌ দেখা শেষ করে রিক্সা করে আবার ফিরলাম বন্দর ঘাটে। ভাড়া যথারীতি ২০ টাকা। এবার গন্তব্য হাজীগঞ্জ দূর্গ।


হাজীগঞ্জ দূর্গটি নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় হাজীগঞ্জের কিল্লারপুল নামক স্থানে অবস্থিত। এটি বাংলার বার ভূঁইয়াদের অন্যতম ঈশা খাঁর কেল্লা হিসেবেও পরিচিত। ওপারে গিয়ে চিরচেনা সেই সমস্যায় পরলাম। ১জন ব্যাক্তিকেও পেলাম না যিনি দূর্গটির সঠিক লোকেশন বলতে পারেন। পরে ১ রিক্সাওয়ালাকে বল্লাম কিল্লারপুল যাবো। জানিনা কেন রিক্সাওয়ালা পাল্টা প্রশ্ন করেনি, কিল্লারপুলে কোথায় যাবো। তাহলেই হয়েছিলো! যাহোক আপনারা যারা ভবিষ্যতে যাবেন তারা কিল্লারপুল ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কথা বলে দেখতে পারেন। দূর্গটি একেবারে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লাগোয়া।



আমার বন্ধু ও একমাত্র ভ্রমনসঙ্গী।










হাজীগঞ্জ দূর্গটির কথা প্রথম জানতে পারি মুনশীগঞ্জের ইদ্রাকপুর জলদূর্গের পরিচিতি ফলকে। সেখানে লেখা ছিল ইদ্রাকপুর জলদূর্গের থেকেও হাজীগঞ্জ দূর্গটি আয়তনে বড়। দূর্গের ভেতরে ঢুকে কথাটির সত্যতা টের পেলাম। সবচেয়ে চমৎকৃত হলাম এর গঠন শৈলী দেখে। আলাদা করে বলবার কিছু নেই। এই দূর্গটিও বাংলার বার ভূঁইয়াদের অন্যতম ঈশা খাঁ তৎকালীন সময়ে ব্যবহার করতেন। বর্তমানে দূর্গটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে সংরক্ষিত। বাংলার তৎকালীন সুবাদার ও সেনাপতি মীর জুমলা ১৭ শতকের মধ্যভাগে এই দূর্গটি নির্মান করেন।





বাইরের এই পিলারটি দূর্গেরই অংশে। তবে প্রয়োজনটা বুঝিনি।



























এই ছবিটা ১টা এক্সপেরিমেন্টের ফসল। ক্যামেরার সামনে সানগ্লাস ধরে ক্লিক করেছিলাম।


সত্যিকথা বলতে যে কোনো পুরোনো ঐতিহাসিক স্থাপনার সামনে গেলে আমি যেন ইতিহাসের গন্ধ পাই। বিশ্বাস করুন কাব্যি করছি না। এই দূর্গ গুলোর কথাই ধরুন। দূর্গে দাড়িয়ে যখন কল্পনা করছি সেইই সময়ে এখানে কত কত অস্ত্রের ঝনঝনানি হতো। সামনে বিশাল শীতলক্ষ্যা নদীতে মগ কিংবা পূর্তুগীজদের জাহাজ দেখে ওয়াচম্যান চেচিয়ে সাবধান করে দিল। সাথে সাথে সেনাপতি সবাইকে প্রস্তুত হতে বল্লেন। সবাই হাতের অস্ত্র, কামান, গোলাবারুদ নিয়ে প্রস্তুত। শুধু গব্বর সিং এর মন পরে আছে ঘরে, নতুন বিয়ে করা বউয়ের কাছে.....................। এই রে এইবার ঠিক কাব্যি হয়ে যাচ্ছে।







দূর্গের বাইরে ১টি হাসের খামার।





আমরা দূর্গ দেখা শেষ করে রাস্তায় বেরুতেই ১টা অটো রিক্সা পেলাম। ভাড়া নিল ২ জনে ১০ টাকা। ফিরতি বাসে গুলিস্তান নামলাম। ঘড়িতে বাজে তখন পৌনে ৪টা। পেট ক্ষিদেয় চো চো করছে। বায়তুল মোকাররমের ওপারে আজাদ প্রডাক্টের উল্টো পাশে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী নান্না বিরিয়ানীর যে শাখা আছে সেখানে বসে পেট পুজো করলাম। হাফ প্লেট বিরিয়ানী প্লাস ১ গ্লাস বোরহানীর দাম নিল ১০০ টাকা। এরপর সারাদিনের খরচপত্র হিষাব করে দেখলাম বিরিয়ানী সমেত মোট খরচ হয়েছে ৯ টাকা কম মাত্র ৩০০ টাকা। বুঝুন!!!


আর একটা কথা বলতেই হচ্ছে, সারাদিন ঘোরাঘুরি করে নারায়নগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন লোকের সাথে মিশেছি, কথা বলেছি। সবাইকেই মনে হলো খুব আন্তরিক। সত্যিকারর বন্ধুভাবাপন্ন। কোনো এলাকার ট্যুরিজম শিল্প গড়ে উঠার জন্য যেটা অনেক জরুরী।

যাইহোক, ঐতিহাসিকগনদের মতে তৎকালীন সময়ে বাংলাকে বহিঃ শত্রুদের আক্রমন থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে হাজীগঞ্জ, ইদ্রাকপুর ও সোনাকান্দা দূর্গ ৩টির অপরিসীম ভূমিকা ছিল। ৪০০ বছর পরে আজও যে সেগুলো দেখতে পাচ্ছি সেটাই ভাগ্যের ব্যাপার। তাও আবার মাত্র ১ দিনের ট্যুরে! তাই বলছি ই মুছে যাওয়ার আগে ইতিহাসের এইসব সাক্ষী গুলো দেখে আসুন।



(সোনাকান্দা পর্ব )

(কদম রসুল দরগাহ্‌ পর্ব )




কৃতজ্ঞতা ঃ বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, অত্র এলাকাবাসী।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৫:০৪
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×