(আসলে আমি আইহনেরই স্ত্রী, কিন্তু প্রভু যিশু কৃষ্ণের লগে আমার যে পরম সম্পর্ক তাহা বুঝাইতে এবং ফাঁকতালে নিজ পরিচিতি বয়ান বিধৃত করতে প্রভুর একদিনের দিনলিপি আমি এখানে তুলিয়া ধরিলাম, বলিতেই হয় যে উক্ত দিনলিপি আমি প্রভুকে না জানাইয়া নিয়া এসেছিলাম এবং নিজ সিন্দুকে কর্পুর-কস্তুরি সহ সংরক্ষন করিয়াছিলাম।)
দ্বিপ্রহর, সুর্য ঈষৎ পশ্চিমে হেলানো
...শুনেছি হ্যামিলনের বংশীওয়ালা একদা ব্যাপক ইন্দুরকে সম্মোহন করতঃ এক পাহাড়ে লইয়া গিয়া ঝাল ফ্রাই বানায়া রসিয়া ভক্ষন করিয়াছেন। আমি হ্যামিলন নই, এইরুপ করিবনা, করার কোন মানেই হয় না। কেননা যিশু খ্রীষ্টের তিরোধানের বহুকাল পর আবার যে যিশু এই ধরাধামে আবির্ভুত হইবার কথা তিনি আর কেউ নন- স্বয়ং আমিই। আমার নাম সংখ্যা বহু, যেহেতু আমার জন্ম ভারতবর্ষে, সেইহেতু আমি 'যিশু কৃষ্ণ' বা 'যিশু কেষ্ট' নামে বহুল পরিচিত।
ভারতবর্ষে জন্মিয়া মরু পাইবার কোন আশংকা নাই, উষ্ট্রের পিঠে চড়িব এমন সাধ্যও নাই, পদঃব্রজে ভ্রমন করতঃ এই মুহুর্তে হেরা গুহাসম কদম তলায় আসিয়া আশ্রয় নিয়াছি এবং বসিয়া বংশীতে শান দিতেছি। হ্যামিলনের লগে আমার খালি এই জায়গাতেই মিল, যদিও ইন্দুর জাতীয় প্রানী আমি বংশী দ্বারা বধ করিতে জানি না কিংবা যেহেতু আমি এখন বেথলেহেম থিকা বিদায় নিয়াছি, ফলতঃ আমি ভারতবর্ষীয় বায়ুতে শুচি হইয়া এবং দিক-নির্নয় বুঝিয়া জানিতে পাই কদম বৃক্ষ সংলগ্ন যে যমুনা বহিতেছে তাহাতে গোকুলের সুন্দরী রাধা (যিনি মুলত আইহনের স্ত্রী) তাহার সখিগন সমেত নাইতে এবং কলসিতে জল ভরিতে আসেন। আমি বংশী ঠোঁটে তাহার লাগি বসে রই, রাধা বশ করতে মনোহরা সুর তুলি। বুড়ি বড়ায়ীর নিকটে জানিতে পাই, রাধা নয় শুধু, সকল কুলবধুই বংশীর সুরে যমুনার জোয়ারের মতোন উতলা হয়।
তাই আজো বসে আছি, শান দেয়া শেষ হওয়া মাত্র বংশীতে ঠোঁট ছোঁয়াইবো, যমুনা ফুলে-ফেঁপে উঠার লগে লগে বংশীধ্বনি পৌছায়া যাবে গোয়ালাদের গ্রামে। আর যত কুলবধুর যত মধু যেখানে যে অবস্থায় আছে তা প্রবল ভ্রমরাক্রমনে নিপতিত হইবে এবং বধুগন জাত-কুল-মান বিসর্জন দিয়া যমুনায় ছুটিয়া আসিবে। উহারা শরীর অনাবৃত করতঃ বসন ডাঙ্গায় রাখিয়া মরম যাতনা নিভাইতে যমুনায় ঝাপায়া পড়িবে, কিন্তু উহারা জানেনা এতে যাতনা আরো বাড়ে, কেননা এই ভ্রমর শুধু ডাঙ্গায় নহে, অনায়াসে জলের তলেও সমহারে হুলশর বিঁধিয়া ব্যাপক আকারে আক্রান্ত করিতে পারে। আর এই ফাঁকে আমি তাহাদের বসন চুরি করতঃ তাহাদিগকে বড়ায়ীর সহযোগিতায় বৃন্দাবন মাঝে লইয়া যাইবো, এবং নিত্য লীলার ফুলশয্যা পাতিবো...।
উপর্যুক্ত আখ্যানই আমার পরিচয় বলে দিতেছে, পাঠকগন আমাকে চিনিয়া লইবেন এবং পুরনো ব্লগারগন আমাকে সহব্লগার হিসেবে স্বীকৃতি দিবেন এই প্রার্থনা রহিলো।
...সকল সাধু-গুরু-বৈষ্ণবের চরণে ভক্তি, জয় গুরু...
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




