প্রজাপতিনামা
প্রজাপতিরা আমায় কি ভেবেছে? সারাটা ঘরময় ভয়ানক আস্ফালনে ঊড়ে বেড়ায় নির্ভয়, অথচ এই চারতলা কংক্রিটের তিনজনা কক্ষে এমন হবার নয় কক্ষনো, ছন কংবা টিন হলে কথা ছিলো।
আমিতো কোন প্রজাপতিবান্ধব লোক নই, ছিলামও না, মনে পড়েও না কখনো মুগ্ধ দৃষ্টি হেনেছি কারুকার্যময় প্রজাপতির ডানায়। এমন হলেও ভালো হতো যদি ছবির মতোন ঢাউস প্রজাপতি এসে বিচরন করতো ঘরে রাখা ফুলদানিতে, যদিও আমার পুতিগন্ধময় ঘরে কোন ফুলদানি নাই, থাকার কথাও নয়, তবু এই ছোট ছোট হলদেটে প্রজাপতির ক্রমাগত সন্তরন আমাকে নিঃস্ব করে তুলে আরো।
আমিতো সাধুও নই, তাছাড়া কেমন সোনালী আঁশটে রঙ লেপ্টে দেয় আমার ময়লা জামায় কি মাথায় কি প্যান্টে। ওরা আলোখেকো, আমি জানি। আমার খাটের ঠিক উপরে লম্বাটে টিউব বাতিই দায়ী এসবের পেছনে। মশারীর ভাঁজে কি তোষকে মৃত কিংবা জিয়ল প্রজাপতির বসত আমাকে আক্রান্ত করে তোলে। সেদিন কি যেনো এক কাজে খাটের নিচ থেকে একটা বাক্স টান দিতেই হড়হড়িয়ে বেড়িয়ে এলো শত শত মৃত প্রজাপতি- কোনটা পাখা উলটে, কোনটা মুখ ভেংচে, কোনটা উর্ধ্বমুখি হয়ে তো কোনটা পৃষ্ঠ দেখিয়ে আমাকে বেশ বেকায়দায় ফেলে দিলো। কেনো জানি এরপর আমার রাত্রিযাপন আর সুখের হলোনা, যদিও সাধারনত কখনোই তেমন সুখের হয় না, তারপরো ঘুমের মাঝে মরা প্রজাপতির দল আমাকে ঘুম থেকে টেনে হিঁচড়ে তুললে ভয়াতুর হই!
আমি প্রজাপতি বান্ধব নই, আমার রুক্ষতার চরাচরে বিপুল রুঢ়তার চৌচির ভুমি। তাছাড়া কোমলতার লেশমাত্র নাই বলে কতেক জিগরি দোস্ত সাবেক হয়ে গ্যালো, এমন কি কোনও ফুলও মনে কিংবা ঘ্রানে দাগ কাটেনি কোনদিন, প্রেমকামী বন্ধুর আক্ষেপ এখনো কানে বাজে- ‘একটা ফুলও তো দিলে না কোনদিন, প্রেমের বয়েস তো মাস সাতেক’। হায় কপাল, তবু এহেন প্রজাপতি প্যাঁচে দিনাতিপাত আমার, বুঝি না কেনো ভুগি প্রজাপতিশাপে!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৩:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




