ছোট্ট একটা ভেন্টিলেটর– চার দেয়ালে আমি
আলো-আঁধারি আবছায়ায় জীবনের গল্প বুনি ।
গগনের বুকে ফাটল– আক্রোশে সৌদামিনী
ভেঙ্গে-চুড়ে চৌচির আমার ভেতরে আমি ।
আমাকে দিনের আলো শুকায় ,
আমাকে রাতের আঁধার ভেজায় ;
তোমার দেয়া প্রতিটা মিথ্যা আশ্বাস ;
প্রতিটা নিঃশ্বাসে এখন রোজ আমায় ভাবায় ।
অথচ কতটা নির্লজ্জ আমার মন—
ঘৃণার বদল তোমার জন্য ভালোবাসা জাগায় !
ক্ষনিকের জন্য উঁকি দেয় রোদ
ক্ষনিকের জন্য চাঁদ ।
কালেভদ্রে সপ্তর্ষিমণ্ডলী ;
আর বাকীটা সময়– নীরব নিঝুম কালো রাত ।
আমার দোষ— আমার পাপ,
আমার পূণ্য— আমার অভিশাপ।
নির্জনতা— আত্ম উপলব্ধির শ্রেষ্ঠ পন্থা।
যেখানে চোখের পলকে ভাসে, আমার সম্পূর্ণ জীবনটা।
জেলখানায় বন্দী মানুষ,
মানুষের দেহকারাগারে বন্দী প্রাণ।
ছটফট করে মানুষ
খোঁজে জীবনের মানে অবিরাম।।
রোদের হাসিতে চাঁদের হয় ফাঁসি ;
চমকে উঠি— ভাঙ্গে দুঃস্বপ্নময় ঘুম।
শোনা যায়— খিলখিল— হায়েনার অট্টহাসি।
একটা হুতুম পেঁচার ডাকে যখন চোখ বুজি আমি।
একটা ক্লান্ত নদী
দুই তীরে যার শুভ্র কাশফুলে ভরা ।
পাশাপাশি ছুটে চলা দুটি ঢেউয়ের মতো
তুমি আর আমি ।
যাদের কখনো মিলন হয় না ।
কত কাছাকাছি তবুও কত দূরত্ব ।
আমরা আপন বলয়ের মাঝে বন্দী—
না ছোঁয়া যায় ;
না তার হাতটা ধরা যায় ;
যাকে প্রদক্ষিণ করে অনবরত ঘুরছি আমি ।
অদৃশ্য এক মায়ার টান তার প্রতি আমায় টানে
যেভাবে অনল মৃত্যুপানে পতঙ্গদের টানে ।
কত বাহানায়, শত উপমায়, শুধুশুধুই —
কেন নিজেকে তার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ভাবি আমি ?
হয়তো তারও ছিল কিছু বাধ্যবাধকতা
যেমন সবারই থাকে কিছু না বলা সীমাবদ্ধতা ।
কাউকে বুঝাতে না পারার অক্ষমতা ;
যে অক্ষমতায় অপ্রকাশিত আমাদের অসীম অসহায়ত্ব ।
আমার বাধ্যকতায় ছিলাম আমি অবাধ্য ।
এমন কোনো সীমানা ছিল না, যেখানে ছিলাম আমি সীমাবদ্ধ ।
তোমার ভালোবাসায় হলাম আমি আবদ্ধ ।
ভালোবাসার বাধ্যবাধকতায় আমাদের যত অসীম অসহায়ত্ব ।
উলঙ্গ তরবারির নখের উপর সাম্রাজ্য জয়ী
সম্রাট অশোক কিংবা বাজীরাও ।
অপ্রতিরুদ্ধ যোদ্ধাটাও দিনের শেষে
বিভৎস পরাজয়ের শিকার হয় ।
শত্রুর বুকে এত দম ছিল কই !
আপনজনের কাছেই প্রতিটা মানুষ হেরে যায় ।
একশো বাইশ পৃষ্ঠা লিখেছিলাম
একশো একুশ পৃষ্ঠা জুড়ে তুমি ।
শেষের একপৃষ্ঠা জুড়ে সব দায়ভার আমি নিলাম
তুমি নির্দোষ, অপরাধী আমি ।
তুমি বেকসুর খালাস — কনডেম সেলে আমি ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৮